সারারাত মায়ের কথা ভেবে কেঁদেছেন দীঘি
শিশুশিল্পী হিসেবে গ্রামীণ ফোনের মডেল হয়ে তুমুল আলোচিত হয়েছিলেন। পুরো নাম প্রার্থনা ফারদিন দীঘি। কিন্ত, দীঘি নামেই সবার কাছে পরিচিত। শিশুশিল্পী হিসেবে তিন বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন— চাচ্চু, কাবুলিওয়ালা ও চাচ্চু আমার চাচ্চু সিনেমায় অভিনয় করে। তারপর লম্বা সময়ের বিরতি।
টানা আট বছর পর আবার ক্যামেরার সামনে। এবার নায়িকা হিসেবে। হাতে পাঁচটি সিনেমা। চলতি মাসেই কাজী হায়াতের নতুন সিনেমার জন্য ক্যামেরার সামনে দাঁড়াবেন। কথা হচ্ছিল দীঘির সঙ্গে।
টানা আট বছরের বিরতি কি একটু বেশি সময়ের হয়ে গেল?
সত্যি কথা বলতে বছর হিসেবে আট বছর অনেকদিন। একটু টেনশনে ছিলাম, একটু ভয়ে ছিলাম, এত বছর পর ক্যামেরার সামনে দাঁড়াচ্ছি, কেমন হবে? আবার অনেক উত্তেজিত ছিলাম নতুন কাজ করা নিয়ে। কিন্তু, ক্যামেরার সামনে যাওয়ার পর সব সহজ হয়ে যায়। কারণ, সবকিছু তো আমার চেনা। সংলাপ দেওয়ার পর মনে হলো, যেন গতকালও শুটিং করে গেছি। মনেই হয়নি আট বছর পর শুটিং করছি।
নতুন সিনেমা নিয়ে কিছু বলবেন?
নতুন সিনেমাটির নাম টুঙ্গিপাড়ার মিয়াভাই। পরিচালনা করছেন শামীম আহমেদ রনি। শাপলা মিডিয়ার সিনেমা এটি। এই সিনেমায় আমি অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের চরিত্রে অভিনয় করছি। কাজটি করার আগে অনেক বই পড়েছি। রিসার্চ করেছি। তাকে জেনেছি। তারপরই কাজটি করছি। এইরকম একটি বিখ্যাত চরিত্রে অভিনয় করতে পেরে আমি অনেক খুশি ।
শোনা যাচ্ছে একসঙ্গে বেশ কয়েকটি সিনেমার নায়িকা হয়ে ফিরছেন?
টুঙ্গিপাড়ার মিয়াভাই সিনেমাটি ছাড়াও বেশ কয়েকটি কাজ আমার হাতে আছে। শিশুশিল্পী হিসেবে কতটা ভালো করেছি, তা সবাই জানেন। কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তিন বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ঘরে তুলেছি। আমার মা-বাবা দুজনেই শিল্পী। তারা সিনেমারই মানুষ। সব মিলিয়ে সিনেমা নিয়ে ভালো একটা স্বপ্ন তো আছেই। ভালো একটা অবস্থান চাই। সবার ভালোবাসা নিয়ে কাজ করতে চাই। কিন্তু, পড়ালেখা বাদ দিয়ে নয়। পড়ালেখা ঠিক রেখে তারপর সিনেমা করে যাব।
কাদের কাজ করছেন?
শাপলা মিডিয়ার দুটি কাজ হবে। কাজী হায়াত সাহেবের পরিচালনায় একটি সিনেমা করব। এই কাজটি এ মাসেই শুরু করব। মালেক আফসারীর পরিচালনায় একটি সিনেমা করব। এফ আই মানিকের একটি সিনেমা করব। শামীম আহমেদ রনির আরও একটি কাজ করব। বলতে পারেন বেশ ভালোভাবেই ফিরছি আমি।
করোনাকালে শুটিং করছেন। কতটা স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজটি হচ্ছে?
আমরা সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনেই শুটিং করছি। বাইরের মানুষ অ্যালাউড না। প্রয়োজনীয় সবকিছু সেটে থাকছে। কারও যেন সমস্যা না হয়, তা মেনে চলছি সবাই। করোনাকাল এটা মেনে এবং সবার প্রতি সবাই সচেতন হয়েই কাজ করছি।
আপনার বাবা-মা দুজনেই ঢাকাই সিনেমার নায়ক নায়িকা ছিলেন, প্রয়াত মা দোয়েলকে কতটা মনে পড়েছে শুটিং করার সময়?
মায়ের জন্যই আজকের আমি। মায়ের জন্যই আজ এখানে আসতে পেরেছি। শুটিংয়ে যাওয়ার আগের রাতে সারারাত মায়ের কথা ভেবে কেঁদেছি। ভোর ছয়টায় কল ছিল। সাড়ে পাঁচটা নাগাদ কেঁদেছি। সেটে যাওয়ার সময় বাবা বলেছেন, ‘তোমার মা বেঁচে থাকলে খুব খুশি হতেন।’ তখন আরও ইমোশনাল হয়ে পড়ি। আসলে মায়ের কথা বলে শেষ করা যাবে না। মা যেখানে আছ, ভালো থেকো। তোমার জন্যই আজকে এখানে আমি।
Comments