এক-তৃতীয়াংশ সরকারি বাস আইন মানে না

সরকারের মালিকানাধীন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) ৩০ শতাংশ বাসে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম পেয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) বিশেষ ভ্রাম্যমান আদালত। যে অনিয়মগুলো সড়ক পরিবহন আইনের লঙ্ঘন।
brtc bus
স্টার ফাইল ফটো

সরকারের মালিকানাধীন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) ৩০ শতাংশ বাসে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম পেয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) বিশেষ ভ্রাম্যমান আদালত। যে অনিয়মগুলো সড়ক পরিবহন আইনের লঙ্ঘন।

বিআরটিএ কর্মকর্তারা জানান, চলতি মাসের প্রথম দুই সপ্তাহে রাস্তায় চলাচল করা ১৯০টি বিআরটিসির বাসের মধ্যে ৫৬টি বাসকে ৪০ হাজার ৩০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

ডিজিটাল নম্বর প্লেট ও ভাড়ার তালিকা না থাকা, বাসের ভেতরে চালকের ছবি ও মোবাইল নম্বর না থাকা, স্বাস্থ্যবিধি না মেনে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করা, বাসের ভেতরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশসহ বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন বিআরটিএ কর্মকর্তারা।

বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, ‘বিআরটিসি বাসগুলোকে আরও সেবামুখী করতে এবং অনিয়ম বন্ধ করার জন্য (সড়ক পরিবহন ও সেতু) মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার পর গত ১ জানুয়ারি থেকে আমরা বিশেষ অভিযান শুরু করেছি।’

গতকাল মঙ্গলবার দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, ‘আমরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে যে সমস্যাগুলো পেয়েছি তা বিআরটিসি কর্তৃপক্ষকেও জানিয়েছি। যাতে করে তারা এসব সমস্যা সমাধানে ব্যবস্থা গ্রহণ করে।’

তিনি আরও জানান, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বৈঠকেও এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালত নিয়মিতভাবে সড়ক পরিবহন খাতে বিভিন্ন ধরণের অনিয়মের বিরুদ্ধে, বিশেষ করে যানবাহন ও চালকদের বৈধ কাগজপত্র আছে কি না তা নিশ্চিত করতে অভিযান পরিচালনা করে।

কয়েক বছর ধরে বিআরটিএর মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছেন এমন একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, ‘আমরা সাধারণত সকল ধরণের যানবাহন চালকের লাইসেন্স পরীক্ষা করি। তবে বিআরটিসি বাসসহ সরকারি যানবাহনের কাগজপত্র কম পরীক্ষা করা হতো। সরকারি অনেক গাড়ির কাজগপত্রই আপডেট করা নেই।’

বিআরটিসির সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুসারে, সংস্থাটির এক হাজার ৮৩৫টি বাসের মধ্যে এক হাজার ৪৫০টি এবং ৫৮৮টি ট্রাকের মধ্যে ৫৭০টি চলছে।

দক্ষ মেকানিকের ঘাটতি, অপর্যাপ্ত রক্ষণাবেক্ষণ, কর্তৃপক্ষের সঠিক সিদ্ধান্তের অভাব এবং বিআরটিসি কর্মীদের একাংশের দুর্নীতির কারণে ‘বাসগুলো প্রত্যাশিত আয়ুষ্কালের আগেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে’ বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

বিআরটিএ উপপরিচালক (এনফোর্সমেন্ট) মুহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক জানান, গত মাসে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় বিআরটিএকে তার বাসের সেবার মান দেখতে এবং কোনো অনিয়ম পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছে।

গতকাল তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, এই নির্দেশনা পেয়ে বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালত চলতি মাসের প্রথম দুই সপ্তাহে ৫৬টি বাসকে জরিমানা করেছে এবং তুলনামূলক কম সমস্যা রয়েছে এমন অনেক বাসকে সতর্ক করেছে।

তিনি আরও জানান, এই অভিযান চলবে।

বিআরটিএ চেয়ারম্যান গত ১৪ জানুয়ারি সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের মাসিক সমন্বয় সভায় বিশেষ এই অভিযানের বিষয়টি জানিয়েছেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব নজরুল ইসলাম। চালক, কন্ডাক্টর ও হেল্পারদের আইন মানার বিষয়ে সতর্ক করতে ডিপো ম্যানেজারদের নির্দেশনা দিতে বিআরটিসি কর্তৃপক্ষকে বলেন তিনি।

যোগাযোগ করা হলে বিআরটিসির মুখপাত্র আমজাদ হোসেন জানান, তারা ইতোমধ্যে ডিপো ম্যানেজারদের কাছে বার্তা পৌঁছে দিয়েছে এবং কিছু চালক ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘কোনো কর্মকর্তা যদি কোনো ধরনের অনিয়মের জন্য দোষী প্রমাণিত হন, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা ইতোমধ্যে বেশিরভাগ বাসের কাগজপত্র আপডেট করেছে এবং শিগগির বাকিগুলো করে ফেলবেন।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

10h ago