লকডাউন বাড়নোর প্রস্তাব, বাস্তবায়নে কঠোরতার ইঙ্গিত

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে চলমান লকডাউনের মেয়াদ আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোর প্রস্তাব করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
বিমানবন্দর সড়ক। ১৬ এপ্রিল ২০২১। ছবি: পলাশ খান

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে চলমান লকডাউনের মেয়াদ আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোর প্রস্তাব করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

আজ সোমবার মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্র বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছে।

সূত্র জানায়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এই সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে পাঠানো হবে।

এর আগে, আজ সকালে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তার সরকারি বাসভবন থেকে দেওয়া ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে সরকার সারাদেশে আরও এক সপ্তাহ সর্বাত্মক লকডাউন বাড়ানোর সক্রিয় চিন্তা-ভাবনা করছে।’

তিনি বলেন, ‘জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে সরকার ঈদের আগে লকডাউন শিথিলেরও চিন্তা-ভাবনা করছে।’

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সূত্র বলছে, এই বর্ধিত লকডাউন কার্যকর করতে প্রয়োজনে আরও কঠোর হবে প্রশাসন।

সেক্ষেত্রে কর্মকর্তারা সত্যিকার অর্থেই নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি হয় এমন দোকানগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো খোলা রাখার ব্যবস্থা করবেন। একই সঙ্গে জনসমাগম কমাতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী পাড়া-মহল্লা ও অলি-গলিতে নজরদারি বাড়াবে।

গত ৫ এপ্রিল থেকে নানাবিধ নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই দেশে সংক্রমণ বাড়ার পাশাপাশি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে।

গতকাল রোববার কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘চলমান লকডাউন আরও এক সপ্তাহের জন্য বাড়তে পারে। দু-এক দিনের মধ্যেই হয়তো এই সংক্রান্ত ঘোষণা আসবে। আগামীকাল (সোমবার) মন্ত্রিপরিষদ সভায় এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে।’

গতকাল ছিল চলাচলসহ নানাবিধ বিধিনিষেধের ১৪তম দিন। এই দিনে করোনা আক্রান্ত হয়ে সর্বোচ্চ ১০২ জনের মৃত্যুর খবর আসে।

চলমান লকডাউনের মধ্যে গণপরিবহন চলাচলসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও জরুরি সেবাসহ কলকারখানা ও ব্যাংকের কার্যক্রম চালু রয়েছে।

এ সময় প্রধান সড়কগুলো তুলনামূলক ফাঁকা থাকলেও অলিগলির চিত্র আগের মতোই। নিত্যপণ্যের দোকানগুলো শাটার অর্ধেক খোলা রেখে দিনভর বেচাকেনা করছে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে সরকার বিধিনিষেধগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আরও কঠোর হওয়ার কথা ভাবছে।’

চলমান পরিস্থিতিতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে মূল সড়ক কিংবা এর আশপাশে তৎপর দেখা গেলেও অলিগলিতে তাদের উপস্থিতি ছিল খুবই কম।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এ দফায় অলিগলিগুলো কঠোর নজরদারির আওতায় আনা হবে। যদিও সব সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের ওপর।’

গত ৪ এপ্রিল সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ একগুচ্ছ নিষেধাজ্ঞাসহ ১১ দফা নির্দেশনা দেয়। যা ৫ এপ্রিল সকাল থেকে ১১ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত কার্যকর ছিল। নির্দেশনায় নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীদের শাস্তির আওতায় আনার কথা বলা হয়েছিল।

এ সময় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিস ও কলকারখানা এই নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত রাখা হয়। শুরুতে গণপরিবহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ৭ এপ্রিল থেকে ১১টি সিটি করপোরেশন এলাকায় তা তুলে নেওয়া হয়।

৮ এপ্রিল জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতামত উপেক্ষা করে ৯ এপ্রিল থেকে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত দোকানপাট ও শপিংমল আট ঘণ্টা করে খোলা রাখার ঘোষণা দেয় সরকার।

এ সময় অসংখ্য মানুষকে পথঘাট, বাজার, শপিংমল ও চায়ের দোকানসহ নানা জায়গায় ভিড় করতে দেখা যায়। তখন নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে কার্যত কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।

এই পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা এমন ঢিলেঢালা লকডাউনের সুফল নিয়ে সংশয় প্রকাশ করলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ১৪ এপ্রিল সকাল থেকে ২১ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত সর্বাত্মক লকডাউনের প্রজ্ঞাপন দেয়।

Comments

The Daily Star  | English
Sakib Jamal. Photo: Crain's New York Business. Image: Tech & Startup

Bangladeshi Sakib Jamal on Forbes 30 under 30 list

Bangladeshi born Sakib Jamal has been named in Forbes' prestigious 30 Under 30 list for 2024. This annual list by Forbes is a compilation of the most influential and promising individuals under the age of 30, drawn from various sectors such as business, technology, arts, and more. This recognition follows his earlier inclusion in Crain's New York Business 20 under 20 list earlier this year.

4h ago