সাজাপ্রাপ্তদের বিদেশে চিকিৎসার নজির আছে, সরকারের যুক্তি গ্রহণযোগ্য নয়: ফখরুল

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে না দেওয়ার ব্যাপারে সরকারের তরফ থেকে আইনগত বাধার কথা বলা হলেও তাকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ ও ‘খোঁড়া যুক্তি’ বলে অভিহিত করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
fakhrul_islam_alamgir_2_0_1.jpg
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে না দেওয়ার ব্যাপারে সরকারের তরফ থেকে আইনগত বাধার কথা বলা হলেও তাকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ ও ‘খোঁড়া যুক্তি’ বলে অভিহিত করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার জন্য তার পরিবারের আবেদন সম্পর্কে সরকারের একাধিক মন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে আজ দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।

ফখরুল বলেন, ‘উনারা বলেছেন, অনুমতি দিতে পারছেন না। কেন পারছেন না যে যুক্তিগুলো দিলেন, সেই যুক্তিগুলো একেবারেই অগ্রহণযোগ্য যুক্তি, খোঁড়া যুক্তি। তারা বলেছেন যে, সাজাপ্রাপ্তদের বিদেশে পাঠানোর নজির নেই। এটা তারা ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছেন, জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন।’

সাজাপ্রাপ্তদের বিদেশে চিকিৎসার নজির তুলে ধরে ফখরুল বলেন, ‘আমাদের প্রথম স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলনকারী আ স ম আবদুর রব জেলে ছিলেন। ১৯৭৯ সালে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সাহেব তাকে এই আইনে মুক্তি দিয়েছিলেন। চিকিৎসার জন্য তাকে জার্মানি পাঠানো হয়েছিল। এরপর আমাদের সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ২০০৮ সালে সাজাপ্রাপ্ত ছিলেন। বর্তমান সরকার তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়েছিল। এরপর আমি নাম বলব না, দুই সহোদর ভাই অত্যন্ত উচ্চপদস্থ প্রভাবশালী সরকারি কর্মকর্তার ভাই, তারা কিন্তু মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ছিলেন। এই ৪০১ ধারা অনুযায়ী তাদেরকে মাফ করে দিয়ে বাইরে পাঠানো হয়েছিল। খালেদা জিয়ার বেলায় কেন এই সমস্ত খোঁড়া যুক্তি? সোজা বলেন যে, আমরা দেবো না।’

তিনি আরও বলেন, ‘বলার মতো বদান্যতা আপনাদের নেই, সেই যে বড় হৃদয় সেটা আপনাদের নেই। শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবের এটা ছিল। উনিও তার অনেক রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে এসব সুবিধা দিয়েছেন, ছেড়ে দিয়েছেন, মুক্তি দিয়েছেন এবং তাদেরকে সাহায্যও করেছেন।’

‘কিন্তু আপনাদের সেই বন্যতা নেই। থাকলে বেগম খালেদা জিয়াকে অনেকদিন আগে আপনারা ছেড়ে দিতেন, আপনারা রাজনীতি করতে দিতেন।’

সরকারের কাছে প্রশ্ন রেখে ফখরুল বলেন, ‘এত ভয় কেন? নির্বাচন করবেন না, কারণ আপনারা জানেন যে নির্বাচন হলে আপনারা কোনো দিনই জিততে পারবেন না।’

‘কিসের গণতন্ত্রের কথা বলেন, কিসের নৈতিকতার কথা বলেন, কিসের ইথিক্সের কথা বলেন-আমরা আজ পর্যন্ত বুঝতে পারি না। সত্যিকার কথা বলতে কি—আওয়ামী লীগ এটা বিশ্বাসই করে না। যখনই তারা ক্ষমতায় এসেছে, তখনই তারা ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করার জন্য যা যা করা দরকার তা করেছে। বস্তুত তারা বাংলাদেশকে ধ্বংস করেছে। আমি আগেও বলেছি তারা বাংলাদেশের সোলটাকে (আত্মা) মেরে ফেলেছে, ধ্বংস করে ফেলেছে।’

তিনি বলেন, ‘ম্যাডামকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য যেতে না দেওয়ার বিষয়টা এটা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক, অমানবিক এবং জনগণকে ভ্রান্ত ধারণা দেওয়া হচ্ছে, বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা তখনও জানিয়েছি, এখনো জানাচ্ছি।’

 

আরও পড়ুন:

আইন অনুযায়ী খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার সুযোগ নেই: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়া প্রসঙ্গে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত স্বরাষ্ট্রে

খালেদা জিয়ার বিদেশ যাত্রায় দীর্ঘ সময়ের ফ্লাইটও অন্তরায়

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল 

খালেদা জিয়া হাসপাতালে ভর্তি 

বিদেশে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা বিষয়ে আইনমন্ত্রীর মতামত রোববার 

খালেদা জিয়ার দেশের বাইরে যেতে আইনি জটিলতা কী? 

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার ‘উন্নতি’ হচ্ছে

উন্নত চিকিৎসার জন্যে খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার আবেদন পরিবারের 

Comments

The Daily Star  | English
Garment factory owners revise minimum wage upwards to Tk 12,500

Workers’ minimum wage to be reviewed

In an effort to bring normalcy back to the industries, the government will review the workers’ wage through the minimum wage board, the interim government has decided.

2h ago