পদ্মার গর্ভে বিদ্যালয় ভবন, স্থানীয়দের দাবি বালু উত্তোলন দায়ী

পদ্মার ভাঙনে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে নদী গর্ভে বিলীন হলে গেল রাজবাড়ীর মিজানপুর ইউনিয়নের চরসিলিমপুর সরকারি প্রাথিমিক বিদ্যালয় ভবন। 
ছবি: স্টার

পদ্মার ভাঙনে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায় রাজবাড়ীর মিজানপুর ইউনিয়নের চরসিলিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন। 

আজ শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে ভাঙন শুরু হলে বিকেল ৫টার মধ্যে পুরো ভবনটি নদীতে ভেঙে পড়ে। 

বিদ্যালয় ভবন ছাড়াও প্রায় ১০০ মিটাল এলাকা ভাঙনের ফলে নদীগর্ভে হারিয়ে গেছে। ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে ওই এলাকার শতাধিক স্থাপনা। সেগুলোর মধ্যে বসতভিটা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও স্কুল ও মসজিদ রয়েছে। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের পাকা ভবনটির প্রায় পুরো অংশ নদীতে ভেঙে পড়েছে। ভাঙন শুরু হওয়ায় আতঙ্কে ঘর-বাড়ি সরিয়ে নিতে শুরু করেছেন ওই বিদ্যালয় ভবনের আশেপাশের বাসিন্দারাও। 

স্থানীয় বাসিন্দা সিরাজ ফকির দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, আজ সকালে হঠাৎ করে নদীতে ভাঙন শুরু হলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে স্কুল ভবনটি ভেঙে নদীতে চলে যায়। তিনি বলেন, 'আমাগো বাড়ি নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি, কখন নদীতে ভেঙে যায়।' 

নদী থেকে অতিরিক্ত বালু উত্তোলনের কারণে এই ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। 

চরসিলিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী রনি দ্য ডেইলি স্টারকে জানায়, ভেঙে যাওয়া স্কুলটার পাশেই তার বাড়ি। এখন সে জানে না, কোথায় পড়বে। এমনকি তার বাড়িটাও এখন ভাঙনের ঝুঁকিতে আছে। 

মিজানপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নদী থেকে বালু উত্তোলনের কারণে স্কুল ভবনটি ভেঙে গেছে। শুধু আমি না আমার ইউনিয়নের সবাই তাই মনে করে।'

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একজন ঠিকাদার বলেন, 'পরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন না করলে বালু তোলার পর সেখানে যে ঘূর্ণায়মান স্রোত তৈরি হয়, তাতে কয়েক মাইলের মধ্যে ভাঙন দেখা দিতে পারে।'

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শহিদুল আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। আগে থেকেই প্রতিরক্ষার জন্য বালুর বস্তা ফেলে আসছি। তবে, হঠাৎ ভাঙন শুরু হওয়ার কারণে স্কুলটি রক্ষা করা গেল না।'

স্কুলের কাছাকাছি ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'বালু উত্তোলনের জন্য ওই জায়গা লিজ দেওয়ার বিষয়ে জেলা প্রশাসক জানেন। এটা আমাদের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে না।'

তবে, এ বিষয়ে কথা বলার জন্য জেলা প্রশাসক দিলশাদ বেগমের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিদ্যালয় ভবনটি নদীতে ভেঙে গেছে বলে জানান। তবে, কল কেটে যাওয়ায় পরে আর তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
 

Comments

The Daily Star  | English

Taka to trade more freely by next month

Bangladesh will introduce a crawling peg system by next month to make the exchange rate more flexible and improve the foreign currency reserves, a key prescription from the International Monetary Fund.

35m ago