দেশে দেশে ঐতিহ্যবাহী ঈদ রসনা

ঈদ মানেই সিয়াম সাধনার পর আনন্দের জোয়ার। নতুন জামা, ঈদি আর ঘোরাঘুরির পাশাপাশি ঈদানন্দের একটা বড় অংশ জুড়ে থাকে মুখরোচক সব খাবার।

ঈদে সেমাই তো টেবিলে থাকেই। তবে শুধু কি তাই? ঝাল-মিষ্টি আরও নানান পদ ঈদের দিন জুড়ে খাওয়া হয় প্রতিটি দেশে। দেশভেদে ঈদের ঐতিহ্যগত এই খাবারগুলোও হয়ে থাকে ভিন্ন।

চলুন দেখে নেওয়া যাক পৃথিবীর কয়েকটি দেশের ঐতিহ্যগত ঈদুল ফিতরের খাবারগুলো।

মামোউল। ছবি: সংগৃহীত

মামোউল

দীর্ঘকাল ধরে চলে আসা মধ্যপ্রাচ্যের দারুণ এই রেসিপিটি মূলত দেখা যায় সিরিয়া ও লেবাননে। মাখন দিয়ে তৈরি এই কুকিতে থাকে খেজুর, আখরোট ও পিস্তাচিও। সঙ্গে এর ওপরে জড়ানো চিনির গুড়ো তো আছেই।

ঠিক মামোউলের মতো কুকিই আবার ইরাক, সুদান, মিশরে পাওয়া যায়। তবে এর নাম একটু ভিন্ন। প্রায় একইরকম এই কুকিকে এই দেশগুলোতে ডাকা হয় ক্লেইচা নামে।

ক্যাম্বাবুর। ছবি: সংগৃহীত

ক্যাম্বাবুর

অনেকটা আফ্রিকান রুটি ইনজেরার মতো দেখতে হলেও সোমালিয়ান এই ঈদের খাবারটিকে ডাকা হয় ক্যাম্বাবুর নামে। ভিন্ন নামে ডাকার মূল কারণ হলো খাবারটির মশলা। ইনজেরার থেকে একদম আলাদা মশলা ব্যবহার করা হয় ক্যাম্বাবুরে। বিশেষ এই ডিশটি ছাড়া সোমালিয়ান ঈদ উৎসব যেন অপুর্ণ। তাই চিনি আর দই মাখা সুস্বাদু এই রুটিটি ঈদের দিনে সব দেশেই দেখতে পাওয়া যায়। সোমালিয়া ছাড়াও মজাদার এই খাবারটি জিবুতিতেও জনপ্রিয়।

শীর খুরমা। ছবি: সংগৃহীত

শীর খুরমা

অনেকটা সেমাইয়ের মতো হলেও শীর খুরমা প্রচুর বাদাম আর খেজুরে ভর্তি একদম আলাদা একটি এশিয়ান রেসিপি। পিস্তাচিও, আখরোট, আমন্ডস, কিশিমিশসহ নানারকম বাদাম ব্যবহার করা হয় এটি বানাতে। সঙ্গে থাকে ঘন দুধ আর চিনি। বাংলাদেশসহ আফগানিস্তান, ভারত ও পাকিস্তানে জনপ্রিয় এই ডেজার্টটি।

তাজিনে। ছবি: সংগৃহীত

তাজিনে

শুধু সেমাই বা মিষ্টি খাবার নয়, ঈদে থাকে ঝাল ঝাল মাংসের রেসিপিও। তেমনই একটি মাংসের রেসিপি মরোক্কোর তাজিনে। খাবারটি মূলত ধীরে ধীরে রান্না করা স্ট্যু। সাধারণত ভেড়া ও গরুর মাংস দিয়ে তৈরি হলেও এর সঙ্গে থাকে নানারকম সবজি ও ফল। আলজেরিয়াতেও এই খাবারটি যথেষ্ট জনপ্রিয়।

ডোরো ওয়াট। ছবি: সংগৃহীত

ডোরো ওয়াট

মুরগি দিয়ে বানানো ইথিওপিয়ান এই স্যুপ বা তরকারিটা খাওয়া হয় মূলত ইনজেরা ব্রেডের সঙ্গে। ঈদের দিন সবাই একসঙ্গে খেতে বসার উদ্দেশ্য নিয়েই এই তরকারিটি তৈরি করা হয়।

লোকুম। ছবি: সংগৃহীত

লোকুম

লোকুম মূলত টার্কিশ ডিলাইট। শুধু ঈদ নয়, যেকোনো ছুটিতেই এই খাবারটি তুরস্কের খাবার টেবিলে থাকেই। জেলের মতো দেখতে এই ডেজার্টটি তৈরি করা হয় চিনি, স্টার্চ আর খেজুর, বাদামের মতো উপাদান দিয়ে। ঈদ আনন্দের পরিচায়ক হিসেবে এই খাবারটিতে নানানরকম রঙও ব্যবহার করা হয়।

তুফাহজিয়া। ছবি: সংগৃহীত

তুফাহজিয়া

ঈদ উদযাপনের জন্য বসনিয়ায় তুফাহজিয়া নামক মিষান্নটি প্রস্তুত করা হয়। সেদ্ধ আপেলের মধ্যে আখরোট ভর্তি এই খাবারটি চিনি দিয়ে মোড়ানো থাকে। অনেক সময় বড় গ্লাসের মধ্যে সিরাপ ও ক্রিমসহ তুফাহজিয়া পরিবেশন করা হয়।

মানতি। ছবি: সংগৃহীত

মানতি

রাশিয়ায় ঈদের দিন মানতি নামের মাংসের ডামপ্লিং খাওয়া হয়। চিনে প্রথম তৈরি হওয়া এই খাবারটি সাধারণত ভেড়া বা গরুর মাংস দিয়ে ভর্তি করে পরিবেশন করা হয়। দেশভেদে মানতির আকার ও আকৃতি ভিন্ন ভিন্ন হয়।

বোলানি। ছবি: সংগৃহীত

বোলানি

আফগান খাবার বোলানি মূলত আলু, ডাল, কুমড়া ইত্যাদি সবজির পুর ভরা রুটি। টক দই দিয়ে পরিবেশিত এই খাবারটি কখনো অ্যাপেটাইজার, আবার কখনো মেইন ডিশ হিসেবে পরিবেশন করা হয়। ঈদ ও বিশেষ আয়োজনে বোলানি খাওয়া হলেও রমজানের পুরো মাসেও এটি খাবার টেবিলে রাখেন অনেকেই।

Comments

The Daily Star  | English
Anti-Terrorism Act

Banning party activities: Govt amends anti-terror law

The interim government is set to bring the curtain down on the Awami League as a functioning political party.

7h ago