উত্তর কোরিয়ার অস্থিতিশীল কার্যক্রমের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা দেবে যুক্তরাষ্ট্র
নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথমবারের মত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান সফরে যাচ্ছেন। দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদমাধ্যম কোরিয়া হেরাল্ডের এক প্রতিবেদন মতে, আগামী ২০ থেকে ২৪ মে তিনি দেশ দুটি সফর করবেন।
হোয়াইট হাউজের প্রেস সচিব জেন সাকি গতকাল টেলিভিশনে প্রচারিত এক ব্রিফিংয়ে জানান, এই সফরে উত্তর কোরিয়ার 'অস্থিতিশীল কার্যক্রমের' বিরুদ্ধে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াকে সুরক্ষা দেওয়ার প্রতিজ্ঞার কথা আবারও জানাবেন বাইডেন।
আগামী ২১ মে সিউলে দক্ষিণ কোরিয়ার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইয়োলের সঙ্গে বাইডেন বৈঠক করবেন। এরপর ২৩ মে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার সঙ্গে বৈঠকের জন্য টোকিও যাবেন তিনি।
২৪ মে বাইডেন অস্ট্রেলিয়া, জাপান, ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমন্বয়ে গঠিত কোয়াড্রিল্যাটেরেল সিকিউরিটি ডায়ালগের (কোয়াড) নেতাদের সাথে বৈঠক করবেন।
সাকি বলেন, ইউন ও কিশিদার সঙ্গে আলোচনার সময় বাইডেন দেশগুলোর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নিরাপত্তা সম্পর্ক আরও জোরদার করা এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বাড়ানোর সুযোগ নিয়ে আলোচনা করবেন।
দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের সঙ্গে বাইডেনের বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে রয়েছে জলবায়ু পরিবর্তন, করোনাভাইরাস মহামারিসহ অন্যান্য সমস্যা।
এছাড়াও, ইউক্রেনের জনগণকে সমর্থন এবং রাশিয়াকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার জন্য যৌথ প্রচেষ্টা নিয়ে আলাপ করবেন তারা।
তবে উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ মিত্রদের প্রতি উত্তর কোরিয়ার হুমকি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা উদ্যোগের বিষয়টি নিয়েই মূলত আলোচনা হবে। উত্তর কোরিয়া সম্প্রতি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা অব্যাহত রেখে এ অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়িয়েছে এবং স্পষ্টতই তারা আবারও পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা শুরু করার জন্য প্রস্তুত।
প্রেস ব্রিফিংয়ে সাকি আরও জানান, উত্তর কোরিয়া প্রসঙ্গে অবশ্যই আলোচনা হবে। এ অঞ্চলের সার্বিক নিরাপত্তায় দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপান উভয়ই যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তা মাথায় রেখেই এ আলোচনা হবে।
'একাধিক আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ সহ এ অঞ্চলে উত্তর কোরিয়ার অব্যাহত অস্থিতিশীল কার্যক্রমের কারণে প্রেসিডেন্ট বাইডেন স্পষ্ট করে দেবেন যে কোরিয়া প্রজাতন্ত্র এবং জাপানি মিত্রদের নিরাপত্তার প্রতি আমাদের যে প্রতিজ্ঞা আছে, তা কখনোই ভঙ্গ হবে না এবং এর মাঝে বর্ধিত প্রতিরোধের প্রতিজ্ঞাও অন্তর্ভুক্ত', যোগ করেন সাকি।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস বৃহস্পতিবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে উত্তর কোরিয়ার ধারাবাহিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার প্রতিক্রিয়ায় দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের সঙ্গে সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেন।
প্রাইস আরও বলেন, 'আমরা মনে করি, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, আমাদের মিত্রদের পাশাপাশি সারা বিশ্বের অংশীদাররা (উত্তর কোরিয়াকে) খুব স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে যে এ ধরনের উসকানিমূলক আচরণ সহ্য করা হবে না। এতে তাদের কৌশলগত অবস্থানেরও কোনো উন্নতি হবে না এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সারা বিশ্ব তাদেরকে উপযুক্ত জবাব দেবে।
'উত্তর কোরিয়ার একটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রসহ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের একাধিক সনদের অবমাননা হয়েছে, যা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচটি স্থায়ী ও অন্যান্য ১০টি অস্থায়ী সদস্য স্বাক্ষর করেছে', যোগ করেন প্রাইস।
Comments