ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে

টোল আদায়-রক্ষণাবেক্ষণ খরচ ৭১৭ কোটি টাকা

টোল আদায়ের পাশাপাশি আগামী ৫ বছর ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সরকারকে ৭১৭ কোটি টাকা ব্যয় করতে হবে।
ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে

টোল আদায়ের পাশাপাশি আগামী ৫ বছর ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সরকারকে ৭১৭ কোটি টাকা ব্যয় করতে হবে।

কোরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশন (কেইসি) একটি বাংলাদেশি ও একটি কোরিয়ান প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় এই কাজটি করবে।

কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে কেইসির সঙ্গে আলোচনা করেছে এবং এর জন্য ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৭১৭ কোটি টাকা। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিকে দেওয়া হয়েছে।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ঢাকা জোন) সবুজ উদ্দিন খান গতকাল মঙ্গলবার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা আশা করছি, প্রস্তাবটি শিগগির অনুমোদন পাবে।'

তিনি আরও বলেন, 'আমরা ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে (কেইসির সঙ্গে) চুক্তি সই করতে পারবো বলেও আশা করছি। অবশ্য কেইসি ইতোমধ্যেই প্রস্তুতিমূলক কাজ শুরু করেছে।'

আগামী ১ জুলাই থেকে দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারের জন্য যানবাহন থেকে টোল আদায় শুরু করতে যাচ্ছে সওজ।

গত বছরের আগস্টে অর্থনৈতিক বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটি এক্সপ্রেসওয়ে থেকে টোল আদায়ের দায়িত্ব কেইসিকে দেওয়ার প্রস্তাব অনুমোদন করে।

২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে পদ্মা সেতু পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ কোরিয়ান প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে টোল আদায়ের পাশাপাশি পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একটি সমঝোতা স্মারক সই করার পর এক্সপ্রেসওয়ের কাজের জন্য কেইসিকে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সওজ সূত্রে জানা গেছে, এক্সপ্রেসওয়ে ও পদ্মা সেতুর সব কাজের সঙ্গে একীভূত হওয়া এবং বাংলাদেশে এ ধরনের অন্যান্য কোম্পানি না থাকায় কোরিয়ান কোম্পানিটিকে বেছে নেওয়া হয়েছে।

সওজ যখন কেইসির সঙ্গে আলোচনা শুরু করে, তখন প্রতিষ্ঠানটি এই কাজের জন্য ২টি সাব-কন্ট্রাক্টরের নাম জমা দেয়। এর একটি কোরিয়ার এস-ট্রাফিক কোম্পানি লিমিটেড এবং অপরটি বাংলাদেশের টেলি টেল কমিউনিকেশনস।

পরবর্তীতে সওজ ও কেইসি ৭১৭ কোটি টাকায় কাজটি করতে সম্মত হয়।

টোল আদায় ও ৫৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এক্সপ্রেসওয়ে রক্ষণাবেক্ষণের পাশাপাশি কেইসি এর জন্য ইন্টেলিজেন্ট ট্রান্সপোর্টেশন সিস্টেম (আইটিএস) স্থাপন ও পরিচালনা করবে বলে জানান সবুজ উদ্দিন।

প্রকৌশলীরা জানান, আইটিএস-এর অধীনে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা উন্নত করতে এবং ট্র্যাফিক জ্যাম ও সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ খরচ কমাতে আধুনিক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।

গত বছরের এপ্রিলে অর্থ মন্ত্রণালয় পদ্মা সেতু চালু না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের প্রস্তাবিত এক্সপ্রেসওয়ের বেস টোল হিসেবে ১০ টাকা অনুমোদন করে।

একটি মাঝারি আকারের ট্রাকের (দুই-এক্সেল) জন্য কিলোমিটার প্রতি ফি বেস টোল হিসেবে বিবেচিত হয় এবং টোল নীতি-২০১৪ অনুযায়ী অন্যান্য যানবাহনের জন্য টোল নির্ধারণ হওয়ার কথা ছিল।

সে হিসাবে, প্রতি কিলোমিটারে বাসের টোল বেস টোলের ৯০ শতাংশ হবে, যেখানে গাড়ির জন্য এর ২৫ শতাংশ এবং মোটরসাইকেলের জন্য ৫ শতাংশ।

পূর্বে নির্ধারিত টোল হার বাস্তবায়নের আগেই সরকার এই টোল হার বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। সেক্ষেত্রে পরিবহন খরচ বেড়ে যাবে।

সওজ ৪টি বেস টোল প্রস্তাব করেছে। সেগুলো হচ্ছে ১৮ টাকা ৪০ পয়সা, ২৫ টাকা, ৩৩ টাকা ৭১ পয়সা ও ৩৪ টাকা ৭০ পয়সা, যা আগের নির্ধারিত হারের চেয়ে ৮৪ থেকে ২৫০ শতাংশ বেশি।

তবে নতুন টোল ঠিক করতে আরও কিছুটা সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছে সূত্র।

গত সোমবার সবুজ উদ্দিন বলেন, 'যদি ১ জুলাইয়ের আগে নতুন টোল হার নির্ধারণ করা না হয়, তাহলে আমরা অন্তর্বর্তীকালীন টোল হার অনুযায়ী টোল আদায় শুরু করবো।'

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, টোল আদায়ের জন্য প্রয়োজনীয় প্রধান অবকাঠামো প্রস্তুত রয়েছে।

তবে, কেইসি টোল সংগ্রহের জন্য একটি স্বয়ংক্রিয় সিস্টেম চালু করবে। এর জন্য আরও ৩ মাস সময় লাগতে পারে। এর আগ পর্যন্ত ম্যানুয়ালি টোল আদায় করা হবে বলে যোগ করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Driest April in 43 years

Average rainfall in Bangladesh was one millimetre in April, which is the record lowest in the country since 1981

12h ago