খালেদা জিয়ার সঠিক চিকিৎসা দেশে সম্ভব নয়: অধ্যাপক সিদ্দিকী

khaleda zia
খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক সব জটিলতার চিকিৎসা বাংলাদেশে সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক এ এফ এম সিদ্দিকী। 

করোনাভাইরাসের ঝুঁকির কারণে অসুস্থ হলেও খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে বাসায় স্থানান্তর করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বোর্ড।

হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার পর সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে খালেদা জিয়া গুলশানে তার বাসায় পৌঁছান।

আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতাল মিলনায়তনে মেডিকেল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদার বলেন, 'ম্যাডাম এখনো অসুস্থ। তিনি যে অবস্থায় এসেছিলেন সেই অবস্থা থেকে স্টেবল। কিন্তু বাকিগুলো, যেমন বিল্ডিং কমপ্লিকেশন ইটস এ ভেরি চ্যালেঞ্জিং গেম নাউ। কিডনি কমপ্লিকেশন আমরা ওয়াকওভার করেছি। উনি হাই রিস্ক অব বিল্ডিং। এখনো উনার দুইটা ব্লক রয়ে গেছে।'

খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সংগৃহীত

'সার্বিক পরিস্থিতির জন্য কোভিড বাড়ছে, উনাতে এখানে রাখতে চাচ্ছি না। কারণ কোভিড প্লাস ইনফেকশন ইজ এ চান্স। এ সব কারণে তার যদি এগুলো হয় আবার তিনি ক্রিটিক্যাল কন্ডিশনে চলে যাবেন। সেজন্য আমরা পূর্নাঙ্গ মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে তাকে আপাতত বাসায় নেওয়া হোক,' বলেন তিনি।

পরে কোনো কমপ্লিকেশন হলে বিএনপি চেয়ারপারসনকে আবার হাসপাতালে ভর্তি করা হবে বলে জানান অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন।

তিনি বলেন, 'উনার বিল্ডিং চান্স ইজ ভেরি ভেরি হাই। উনি রিস্কে আছেন। বাসায় থাকলেও আমাদের পুরো মনিটরিং রাখতে হবে।'

৭৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়া বুকে ব্যথা নিয়ে গত ১০ জুন রাতে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে দ্রুত এনজিওগ্রাম করে তার হৃদযন্ত্রে একটি স্টেন্ট বসানো হয়।

" layout="left"]

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মেডিকেল বোর্ড প্রধান বলেন, 'আরো যে দুটি ব্লক আছে, আমাদের আন্তর্জাতিক গাইড লাইন হচ্ছে যেই রক্তনালীর ব্লকের জন্য তার সমস্যা হচ্ছে, সেটা করা। ডু ইট অ্যান্ড কাম অন অ্যান্ড সেভ দ্য পেশেন্ট। আমরা সেটা করেছি।'

তিনি বলেন, 'এখন দ্বিতীয়টা করি, তৃতীয়টা করি, কোনো কোনো রোগীর ক্ষেত্রে করা হয়।  যাদের রক্তনালী বড় থাকে, যাদের কোনো কমপ্লিকেশন নাই, যাদের লিভার ডিজিস নাই, কিডনি ডিজিস নাই, চান্স অব হার্ট ফেইলিউর নাই, তাদের ক্ষেত্রে আমরা করি। কিন্তু আমাদের সেকেন্ড-থার্ড করার কোনো নিয়ম নাই। কারণ আপনি দেখেন উনার (খালেদা জিয়া) একটা ব্লক অপসারণ করতে গিয়ে তার কিন্তু কিডনি শাটডাউন হয়েছে, হার্ট ফেইলিউর হয়েছে। ওই দুটো যদি করতাম তার কিডনি টোটাল শাটডাউন হতো। সেজন্য আমরা ওই দুইটা ব্লক অপসারণ করিনি।'

মেডিকেল বোর্ড সদস্য অধ্যাপক এ এফ এম সিদ্দিকী বলেন, 'ম্যাডামের অনেক জটিল অসুস্থতা আছে। উনার রেনাল ফেইলিউর, বিল্ডিংয়ের চান্স, উনার যে সিরোসিস অব লিভার সেটা কিন্তু রয়ে গেছে। সেটার কোনো চিকিৎসা হয় না। আমরা শুধু উনার বিল্ডিং স্পটগুলোকে লাইগেশন করে দিয়ে বন্ধ করে রেখেছি। সেগুলোর কী অবস্থা, গত ৬ মাসে ফলোআপ করতে পারিনি। এখন এই কার্ডিয়াক কন্ডিশনের জন্য উনার ফলোআপ করাটা আরো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত আমরা যা করার করছি। আল্লাহর অশেষ রহমত, আমরা সামহাউ আমাদের সিদ্ধান্তগুলো এখন পর্যন্ত অলনাইট আপটু হার সারভাইভাল।'

'আমরা বার বার বলছি যে কমপ্রিহেনসিভ সব জটিলতাকে একটা বেস্ট সেন্টারে নিয়ে উনাকে সুস্থ করে তোলার যে প্রক্রিয়া যেটা কিন্ত আমরা এখানে করতে পারছি না। সেই ধরনের সেন্টার সেই ধরনের মেজার্স, সেই ধরনের সব কিছু করার সক্ষমতায় আমাদের অভাব আছে। সেজন্যই আমরা সবসময় বলেছি, এখনো বলছি যে, উনার সঠিক, সার্বিক ও সুষ্ঠু চিকিৎসা এই দেশে সম্ভব নয়। সেটা বিশ্বের কিছু উন্নত দেশের উন্নত সেন্টারে করতে পারলে উনার জন্য সবচেয়ে ভালো হবে,' যোগ করেন তিনি।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, 'আমাদের নেত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, উনার সহধর্মিনী ডা. জোবাইদা রহমানসহ উনার পরিবারের সব সদস্য হাসপাতালের সর্বস্তরের চিকিৎসক, নার্স, প্যারামেডিকস এবং ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।'

'বিএনপির চেয়ারপারসন দেশবাসীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। এটা গণমাধ্যমে দেশবাসীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য এবং উনার জন্য দোয়া করার অনুরোধ জানিয়েছেন,' বলেন তিনি।
   
সংবাদ সম্মেলনে মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ডা. শেখ ফরিদ আহমেদ, ডা. মো. জাফর ইকবাল, ডা. আল মামুন এবং হাসপাতালের মেডিকেল প্রমোশন বিভাগের প্রধান বিনয় কাউল উপস্থিত ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English
government decision to abolish DSA

A law that gagged

Some made a differing comment, some drew a political cartoon and some made a joke online – and they all ended up in jail, in some cases for months. This is how the Digital Security Act (DSA) and later the Cyber Security Act (CSA) were used to gag freedom of expression and freedom of the press.

12h ago