শিক্ষক হত্যা: অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বয়স এজাহারে ১৬, জন্ম সনদে ১৯

উৎপল কুমার সরকার। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

সাভারের আশুলিয়ায় হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীর বয়স মামলায় ১৬ বছর দেখানো হলেও জন্ম সনদ ও নবম শ্রেণীর রেজিস্ট্রেশন অনুযায়ী তার বয়স ১৯ বছর ৬ মাস।

আজ বুধবার এ তথ্য জানিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।

হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের সমাজকল্যাণ বিষয়ের প্রভাষক সফিকুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা মূলত শিক্ষার্থীদের জন্ম সনদ অনুযায়ী ভর্তি করি। জন্ম সনদ অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশন করা হয়। জন্ম সনদে তার জন্ম তারিখ ১৭ জানুয়ারি ২০০৩। ওই জন্ম সনদ অনুযায়ীই তার নবম শ্রেণীর রেজিস্ট্রেশন হয়েছে। সে অনুযায়ী, তার বয়স ১৯ বছর ৬ মাস। কিন্তু মামলায় বয়স দেখানো হয়েছে ১৬ বছর।'

প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ওই ছাত্র মাদ্রাসায় পড়েছে, লেখাপড়ায় অনিয়মিত ছিল। ইয়ার ড্রপ দিয়ে আমাদের প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়। ভর্তির সময় আমরা জন্ম সনদে উল্লেখিত জন্ম তারিখ অনুযায়ী তাকে ভর্তি করি। নবম শ্রেণীর রেজিস্ট্রেশনে তার জন্ম তারিখ উল্লেখ রয়েছে ১৭ জানুয়ারি ২০০৩।'

মামলার এজাহারে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর প্রকৃত বয়স উল্লেখের দাবি জানিয়েছেন মামলার বাদী নিহতের ভাই অসীম কুমার সরকার।

তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মামলায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বয়স উল্লেখ করা হয়েছে ১৬ বছর, প্রকৃত বয়স উল্লেখ করা হয়নি। প্রকৃত বয়স উল্লেখ না করলে ওই ছাত্রের বিচার হবে কিশোর আদালতে, আর প্রকৃত বয়স উল্লেখ করলে বিচার হবে সাধারণ আদালতে।'

তিনি আরও বলেন, 'মামলায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর প্রকৃত বয়স উল্লেখ করতে হবে। এ ছাড়া আমার ভাইকে হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের সবাইকে শনাক্ত করে দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে। ভাই হত্যার বিচার চাই। এ ছাড়া আমাদের আর কিছুই চাওয়ার নেই।'

আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম কামরুজ্জামান খান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মামলায় আসামির বয়স কম উল্লেখ করা হয়ে থাকলে পরবর্তীতে প্রকৃত বয়স উল্লেখের সুযোগ রয়েছে। আমরা সব বিষয়ই তদন্ত করছি। আমাদের কয়েকটি টিম অভিযুক্ত ওই শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালনা করছে।'

গত ২৫ জুন দুপুরে সাভারের আশুলিয়ায় হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের স্কুল শাখার ছাত্রীদের আন্তঃশ্রেণি ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় খেলা পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন বিদ্যালয়ের পৌরনীতি ও সুশাসন বিষয়ের শিক্ষক এবং শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি উৎপল কুমার সরকার (৩৭)। সে সময় ওই স্কুলের দশম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থী অতর্কিত একটি স্টাম্প দিয়ে উৎপল কুমার সরকারের ওপর হামলা করেন। স্টাম্প দিয়ে উপর্যুপরি উৎপল কুমারের পেট ও মাথায় আঘাত করে তাকে রক্তাক্ত করে। এরপর সেখান থেকে চলে যায়।

গত ২৭ জুন ভোরে সাভারের এনাম মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান উৎপল।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বাবাকে আজ ভোর রাতে কুষ্টিয়ার কুমারখালি থেকে আটকের পর মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হলেও অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

 

Comments

The Daily Star  | English

Yunus promises election on time

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus yesterday reaffirmed his commitment to holding the 13th national election in the first half of February next year.

8h ago