বৃষ্টি হলেই পানি বাড়ে হাকালুকিতে, বাড়ে দুর্ভোগ
হাকালুকি হাওর এলাকায় কখনো রোদ, কখনো বৃষ্টি। তবে গত মঙ্গলবার থেকে বৃষ্টি হওয়ায় পানি বাড়তে শুরু করেছে হাকালুকি হাওর অধ্যুষিত মৌলভীবাজারের উপজেলাগুলোয়। বৃষ্টি হলেই বাড়ে দুর্ভোগ। অনেক বাড়িতে এখনো পানি জমে আছে।
আজ বৃহস্পতিবার ভোরেও বৃষ্টি হয়েছে। এতে জনদুর্ভোগ আরও বেড়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বড়লেখা উপজেলার বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাট এখনো বানের পানিতে ডুবে আছে। পানিতে গৃহস্থালি জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে গেছে।
বড়লেখা উপজেলার মুর্শিদাবাদপুর গ্রামের বাসিন্দা হাকালুকি উচ্চবিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৩ সপ্তাহ থেকে পরিবার নিয়ে আছেন তাজুল মিয়া। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত ৩ সপ্তাহে মাত্র ৩ দিন ত্রাণ পেয়েছি। গত মঙ্গলবার থেকে বৃষ্টি হওয়ায় পানি বেড়েছে। মনে হয় ঈদের আগে বাড়ি যেতে পারবো না। বড় অসহায় লাগছে।'
আশ্রয়কেন্দ্রের আরেক বাসিন্দা রেজিয়া বেগম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বানের পানিতে আমাদের হাড়ি-পাতিল, লেপ-তোষক, চাল-ডাল সব ভেসে গেছে।'
তাজুল মিয়া ও রেজিয়া বেগম জানান, শুধু তারাই নন, দুর্গত সবারই একই অবস্থা।
একই এলাকার নিবেদন চন্দ্র দাস ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার ঘরে সব জিনিস নষ্ট হয়ে গেছে। ঘরের বেড়া ভেঙে গেছে। সরকারি সাহায্য ছাড়া ঘর তৈরি করতে পারবো না। পরিবারের ৫ সদস্য নিয়ে আমরা অন্যের বাড়িতে আছি। ঘরে যাওয়ার উপায় নেই। পানি আবার বাড়তে শুরু করেছে।'
বড়লেখার তালিমপুর এলাকার বাসিন্দা ও সংগঠক রিপন দাস ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত সোমবার বাড়ি থেকে পানি নেমে গিয়েছিল। বুধবার সকালে দেখি হাঁটু পানি। বৃষ্টি হলেই পানি বাড়ে।'
'বন্যার কারণে অনেক খেটে খাওয়া মানুষের রোজগার বন্ধ। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে। অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠছেন,' যোগ করেন তিনি।
মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনের গতকালকের তথ্য মতে, এখনো মৌলভীবাজারের জুড়ি, কুলাউড়া ও বড়লেখা উপজেলায় পানিবন্দি ৬৬ হাজার ৭৪৫ পরিবার। আশ্রয়কেন্দ্রে এখনো আছেন ১৩ হাজার ১০৬ জন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, কুশিয়ারা নদীর শেরপুর পয়েন্টে পানি বাড়ছে তবে তা এখনো বিপৎসীমার নিচে আছে। মনু নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে পানি বাড়ছে তবে এখনো বিপদসীমার নিচেই আছে।
Comments