পুলিশ চলে আসায় বাল্যবিয়ে না করেই পালালেন ইউপি সদস্য
নাটোরে বাল্যবিয়ে করতে এসে পুলিশের ধাওয়া খেয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে পালিয়েছেন ইউপি সদস্য বর। আজ শুক্রবার দুপুরে নাটোর সদর উপজেলার কাফুরিয়া ইউনিয়নের কসবা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশের অভিযানে ওই ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আরিফুল ইসলামের (৩২) সঙ্গে কসবা গ্রামের দশম শ্রেণীর এক ছাত্রীর বিয়ে বন্ধ হয়।
নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছিম আহমেদ দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ওসি বলেন, 'কাফুরিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আরিফুল ইসলামের সঙ্গে একই ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য লুৎফর রহমানের ১৬ বছর বয়সী ভাতিজির বিয়ে ঠিক হয়েছিল। শুক্রবার সকালে বিয়ের আয়োজনের খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে বিয়ে বন্ধ করে দেয়।'
এ সময় কনের অভিভাবকরা প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত মেয়ের বিয়ে দেবে না বলে মুচলেকা দেয় বলে জানান ওসি।
'দুপুরে তারা আবার বিয়ের আয়োজন করছে, খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বরসহ বরযাত্রীরা পালিয়ে যায়,' যোগ করেন ওসি।
নাটোর সদর থানার উপপরিদর্শক মো. জামাল উদ্দিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কনের জন্মনিবন্ধনসহ অন্যান্য কাগজপত্র পরীক্ষা করে দেখা যায় কনে অপ্রাপ্তবয়স্ক। পরে কনের অভিভাবকরা বিয়ে দেবে না বলে মুচলেকা দেয়।'
জানতে চাইলে নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির সঙ্গে আরেক নির্বাচিত প্রতিনিধির ভাতিজির বাল্যবিয়ে হচ্ছে, এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। বাল্যবিয়ে তাদেরই বন্ধ করার কথা। তারপরও এমন খবর পেয়ে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।'
যোগাযোগ করা হলে পাত্র ইউপি সদস্য আরিফুল ইসলাম রিপন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কনের বিয়ের বয়স হয়নি, এমন খবর আমি জানতাম না। প্রশাসনের লোকজন আমাকে নিষেধ করায় আমি বিয়ে বন্ধ করে দিয়েছি।'
তবে বিয়ের আসর থেকে পালানোর কথা অস্বীকার করে তিনি জানান, বিয়ের অনুষ্ঠানে বরযাত্রী গেলেও তিনি যাননি।
কনের চাচা ইউপি সদস্য লুৎফর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার ছোট ভাইয়ের মেয়ের সঙ্গে আরিফুল ইসলাম রিপন মেম্বারের বিয়ে হওয়ার কথা থাকলেও, প্রশাসনের বাধায় বিয়ে দেওয়া হয়নি। তবে বরপক্ষের লোকজন দুপুরে দাওয়াত খেতে এলে কে বা কারা প্রশাসনকে বলেছে পুনরায় বিয়ে হচ্ছে। এমন খবরে আবারও পুলিশ আসে।'
Comments