‘মিষ্টি মেয়ে একজনই’

কবরী। ছবি: সংগৃহীত

দেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে মিষ্টি মেয়ে একজনই, তিনি কবরী। 'সুতরাং' দিয়ে তার ঢাকাই সিনেমায় অভিষেক ঘটেছিল। এরপর জয় করে নেন কোটি বাঙালির মন। সিনেমাপ্রেমিদের কাছে উজ্জ্বল হয়ে আছে কবরী নামটি।

ষাটের দশকে পথচলা শুরু করে একটানা কয়েক দশক তিনি অভিনয় করে গেছেন। পৌঁছেছিলেন খ্যাতির শীর্ষে। রোমান্টিক, সামাজিক ও ফোক ঘরানার সিনেমায় তিনি ছিলেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী।

মিষ্টি মেয়ে কবরীর জন্মদিন ১৯ জুলাই।

নায়ক রাজ রাজ্জাকের সঙ্গে সবচেয়ে সফল জুটি হিসেবে কবরীর নাম উঠে আসে সবার আগে। এই জুটির প্রথম সিনেমা 'আবির্ভাব'। 'নীল আকাশের নিচে', 'রংবাজ', 'ময়নামতি', 'দর্পচূর্ণ', 'দীপ নেভে নাই', 'স্মৃতিটুকু থাক'-সহ আরও বেশ কিছু সিনেমায় সফলতার স্বাক্ষর রেখেছেন।

সোহেল রানা অভিনীত প্রথম সিনেমা 'মাসুদ রানা'র নায়িকা ছিলেন কবরী। 'মাসুদ রানা' বাংলাদেশের সুপারহিট একটি সিনেমা।

নায়ক উজ্জ্বলের প্রথম সিনেমা 'বিনিময়'-এর নায়িকা ছিলেন কবরী। 'বিনিময়' প্রশংসিত একটি সিনেমা। আরও অনেক নায়কের বিপরীতে নায়িকা হিসেবে অভিনয় করেছেন কবরী।

বাংলা সিনেমা ছাড়াও কয়েকটি উর্দু সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। সেগুলোর মধ্যে 'জাগো হুয়া সাবেরা' ও 'বাহানা' অন্যতম।

নায়ক ফারুকের সঙ্গে জুটি হিসেবে সফলতার প্রমাণ রেখে গেছেন কবরী। এই জুটির সাড়া জাগানো কয়েকটি সিনেমা হচ্ছে- 'সুজন সখী', 'লাঠিয়াল', 'সারেং বৌ'।

রোমান্টিক সিনেমার নায়িকা হিসেবে যেমন সফল ছিলেন, তেমনি সামাজিক ও ফোক ঘারানার সিনেমায়ও তিনি ছিলেন তুলনাহীন। 'সাত ভাই চম্পা', 'লালন ফকির' ও 'অরুণ বরুণ কিরণ মালা' তার মধ্যে আলোচিত সিনেমা।

অভিনয়, প্রযোজনার ছাড়াও 'আয়না' সিনেমা পরিচালনা করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি। তার সবশেষ পরিচালিত সিনেমা 'এই তুমি সেই তুমি', যার কাজ অসমাপ্ত রেখেই তিনি মারা গেছেন।

অভিনয় জীবন ছাড়াও রাজনীতিবিদ ছিলেন কবরী। সংসদ সদস্য নির্ববাচিত হয়েছিলেন একবার।

তার প্রয়াণ দিবসে নায়ক সোহেল রানা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কবরীকে কখনো দূরের মানুষ মনে হয়নি। তিনি একেবারেই কাছের মানুষ ছিলেন, আপন মানুষ ছিলেন। প্রথম সিনেমার নায়িকা হিসেবে তাকে পেয়েছিলাম। সারাজীবন তার সঙ্গে আমার সুসম্পর্ক ছিল। আমি বলব, মিষ্টি মেয়ে একজনই।'

নায়ক উজ্জ্বল বলেন, ''বিনিময়' আমার প্রথম সিনেমা। সিনেমায় আমি ছিলাম নতুন আর কবরী ছিলেন তারকা। তারপরও শুটিংয়ের সময় একবারও মনে হয়নি, তিনি অনেক বড় তারকা। কেন না- নায়ক হিসেবে নতুন হলেও আমাকে যথেষ্ঠ সম্মান ও সহযোগিতা করেছিলেন। এ দেশের চলচ্চিত্রে তিনি বড় একটি জায়গা করে নিয়েছেন। যা চিরদিন থাকবে।'

তারিক আনাম খান বলেন, 'লাল সুরুজের পালা সিনেমায় নায়িকা হিসেবে কবরীকে পেয়েছিলাম। সত্যিই তিনি মিষ্টি মেয়ে। বাংলাদেশের সিনেমাকে সমৃদ্ধ করে গেছেন কবরী। নায়িকা হিসেবে তাকে কাছ থেকে যতটুকু দেখেছি, তাতে মনে হয়েছে সিনেমার জন্যই বুঝি তার জন্ম হয়েছে। অভিনয় জীবনে তিনি অন্যতম সফল একজন শিল্পী। আমি বলব অনেক বড় মাপের একজন  শিল্পী ছিলেন তিনি।'

Comments

The Daily Star  | English
Domestic violence killing women in Bangladesh

Domestic violence in Bangladesh: When numbers speak of the silence

When we are informed that 133 women have been killed by their husbands in seven months, it is no longer just a number.

9h ago