‘বিয়ের পর ভারতে পাচার’ কিশোরীর ফেরার আকুতি

Lalmonirhat_DS_Map.jpg
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার এক কিশোরীকে (১৭) ভারতে পাচার করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। 'বাড়ি ফেরার আকুতি' জানিয়ে ওই কিশোরীর দেওয়া একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

৪ মিনিট ২৮ সেকেন্ডের ভিডিওতে ওই কিশোরী বলেন, 'আমি বাঁচতে চাই, আমাকে বাঁচান। আমাকে ভারতের শিলিগুড়িতে একটি বাড়িতে আটকে রাখা হয়েছে। আমার ওপর অমানবিক নির্যাতন করা হচ্ছে। আমি বাড়ি ফিরতে চাই। আমাকে মিথ্যা প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে ভারতে পাচার করা হয়েছে। আমাকে প্রথমে ঢাকায় নিয়ে বিয়ে করেছিল। পরে ঢাকা থেকে ভারতে পাচার করা হয়।'

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই কিশোরী লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার মধ্য গড্ডিমারী গ্রামের বাসিন্দা। স্থানীয় একটি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী তিনি। বাবা মারা যাওয়ায় ভাইয়ের কাছে থেকেই পড়াশোনা করছিলেন। গত ৫ আগস্ট ওই তরুণী গোপনে ভারত থেকে একটি ভিডিও তৈরি করে তার ভাইয়ের কাছে পাঠায়। ৯ আগস্ট ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

ওই কিশোরীর ভাই দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি এক ব্যক্তি মারফত ভিডিওটি পাই। পুলিশকেও ভিডিওটি দিয়েছি। এখনো আমার বোনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। জানি না আমার বোন কী অবস্থায় আছে। আমার বোনকে ভারত থেকে উদ্ধার করার জন্য প্রশাসনের কাছে বিনীত প্রার্থনা করছি।'

তিনি বলেন, 'আমার বোনকে প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে গত বছরের ৫ ডিসেম্বর অপহরণ করা হয়। এ ঘটনায় গত ৬ জানুয়ারি ৫ জনকে অভিযুক্ত করে হাতীবান্ধা থানায় একটি মামলা করেছি। এরপর ২৭ মে পুলিশ ৫ জনের মধ্যে ২ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেয়।'

'কিন্তু, আমার বোনকে উদ্ধারে পুলিশের কোনো তৎপরতা দেখিনি। তাকে যে ভারতে পাচার করা হয়েছে, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সুকুমার রায় বিষয়টি জানতেন,' যোগ করেন তিনি।

চার্জশিটে অভিযুক্ত আসামিরা হলেন— হাতীবান্ধা উপজেলার গেন্দুকুড়ি গ্রামের ধনঞ্জয় চন্দ্রের ছেলে তিলক চন্দ্র (২০) ও মধ্য গড্ডিমারী গ্রামের ফজলুল রহমান খলিলের ছেলে হামিদুল ইসলাম হৃদয় (১৯)।

ভিডিওতে ওই কিশোরী আরও জানায়, তিলক চন্দ্র ওরফে শুভ ওরফে নীরব ইসলাম তাকে বিয়ে করে। এরপর ঢাকায় কিছুদিন অবস্থান করার পর তাকে ভারতে পাচার করা হয়।

এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হাতীবান্ধা থানার এসআই সুকুমার রায় ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ ঘটনার সঙ্গে তিলক ও হামিদুলের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। অপর ৩ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।'

'ঘটনার পর থেকে আসামি ও ভুক্তভোগী কিশোরীর মোবাইল বন্ধ থাকায় তাদের লোকেশন ট্র্যাক করা যায়নি। সে কারণে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করতে পারিনি। এক্ষেত্রে পুলিশের আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি ছিল না,' বলেন তিনি।

হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহা আলম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা জানতে পেরেছি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি পুলিশ ইতোমধ্যে ওই কিশোরীকে উদ্ধার ও আসামিকে আটক করেছে। তাদের উভয়কেই বাংলাদেশে ফেরত আনতে আমরা আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছি। আশা করছি শিগগিরই তাদেরকে দেশে ফেরত আনা সম্ভব হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Yunus joins stakeholders’ dialogue on Rohingya crisis in Cox’s Bazar

The three-day conference began with the aim of engaging global stakeholders to find solutions to the prolonged Rohingya crisis

29m ago