৭ বছরেও হয়নি নাটোরের বখতারপুর সেতু, ভোগান্তিতে ১২ গ্রামের মানুষ
নাটোরের সিংড়া উপজেলার বখতারপুর পানাউল্লাহ খালের সেতুটির ২ পাশ ধসে পড়ে ৭ বছর আগে। কিন্তু, আজও সেখানে নতুন সেতু নির্মাণ হয়নি। ফলে, ঝুঁকি নিয়ে উপজেলার অন্তত ১২ গ্রামের মানুষ এই সেতু দিয়ে চলাচল করছেন।
স্থানীয়রা জানান, ২০১৫ সালে সেতুটি হেলে পড়ে। পরে ২০১৮ সালের বন্যায় এটির ২ পাশ ধসে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এই অঞ্চলের ১২ গ্রামের মানুষ। তখন থেকে কোনো রকমে ভ্যান-রিকশা নিয়ে পারাপার হচ্ছেন তারা।
তারা আরও জানান, বন্যায় ধসে পড়ার পর ২০১৮ সালে সেতুটি পারের সময় এক জেএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছিল। আহত হয়েছেন অসংখ্য মানুষ। অন্য কোনো বিকল্প না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে সেতুটি ব্যবহার করছেন স্থানীয়রা।
গোপেন্দ্রনগর গ্রামের বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম বলেন, 'সিংড়ার লালোর ইউনিয়নের পানাউল্লাহ খালের ওপর নির্মিত সেতুটি নাটোরের সিংড়া, নলডাঙ্গা ও সদর উপজেলা এবং নওগাঁর আত্রাই উপজেলার অন্তত ১২টি গ্রামের বাসিন্দাদের যোগাযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।'
বখতারপুর গ্রামের সঞ্জয় হালদার বলেন, 'সেতুটি ধসে পড়ার পর স্থানীয়রা ক্ষতিগ্রস্ত কংক্রিটের সেতুটি ব্যবহার করতে বাঁশের মাচা তৈরি করে। এখন ৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ হাজার হাজার মানুষ ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন ভাঙা সেতুটি ব্যবহার করছে।'
সিংড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বলেন, 'বখতারপুর সেতু দিয়ে কয়েকটি উপজেলার মানুষ চলাচল করত। এখন তাদের অনেক পথ ঘুরে যেতে হয়। এই অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে ভাঙা সেতু পার হয়। নাটোর এবং নওগাঁ জেলার শত শত মানুষ এই সেতুটি ব্যবহার করে নাটোর, নওগাঁ ও বগুড়ায় যাতায়াত করে। এছাড়া, চলনবিল এলাকার কৃষকরা তাদের কৃষিপণ্য পরিবহনে সেতুটি ব্যবহার করে।'
পাটুল হাপানিয়া ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক মো. আকতার উজ জামান বলেন, 'ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর কারণে হাজার হাজার মানুষ বছরের পর বছর দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। কিন্তু, স্থানীয় প্রশাসন এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেয়নি।'
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শহিদুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বখতারপুর খালের ওপরে সেতু নির্মাণের জন্য আড়াই কোটি টাকার প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু, পরে জানা যায়- ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় সেতু তৈরির পরিকল্পনা করছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সড়কের ওপর সেতু নির্মাণ করতে হলে অনুমতি নিতে হয় সেটাও তারা নেয়নি।'
সিংড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আল আমিন সরকার বলেন, 'ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে নতুন সেতু নির্মাণের জন্য টেন্ডার হয়েছে। বর্ষার পানি নেমে গেলেই কাজ শুরু হবে।'
Comments