মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে ৪ হাজার চা শ্রমিকের ২৫ কিলোমিটার পদযাত্রা

মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে ৪ হাজার চা শ্রমিকের ২৫ কিলোমিটার পদযাত্রা
মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে ৪ হাজার চা শ্রমিকের ২৫ কিলোমিটার পদযাত্রা। ছবি: মিন্টু দেশোয়ারা/স্টার

মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে ২৫ কিলোমিটার পদযাত্রা করেছেন মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ছয়টি চা বাগানের প্রায় ৪ হাজার শ্রমিক।

আজ বুধবার সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের পঞ্চম দিন চা শ্রমিকেরা তাদের দাবি নিয়ে সভা, সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার মুড়াইছড়া, গাজীপুর, কালিটি, রাঙ্গিছড়া, আসকরাবাদ ও রাধানগর চা-বাগানের প্রায় ৪ হাজার শ্রমিক মিছিল নিয়ে বাগান থেকে বের হয়ে গাজীপুর চৌমুহনীতে এসে একত্রিত হন। সেখান থেকে তারা পদযাত্রা করে কুলাউড়া শহরের দিকে আসেন।

সেসময় 'চা-শ্রমিকদের আন্দোলন চলছে, চলবে', 'আটা-রুটির সংগ্রাম চলছে, চলবে', 'চুক্তি নিয়ে টালবাহানা চলবে না, চলবে না', '৩০০ টাকা মজুরি দিতে হবে, দিতে হবে', 'করুনা নয়, অধিকার চাই' ইত্যাদি লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে স্লোগান দেন তারা।

এসময় রাস্তার দুপাশে কয়েকশ গাড়ি আটকা পরে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। কুলাউড়া মূল শহরে প্রবেশের পর শ্রমিকরা পুরো রাস্তা দখলে নিয়ে মিছিল করে উপজেলা পরিষদে প্রাঙ্গণের গিয়ে তাদের কর্মসূচি শেষ করেন।

চা শ্রমিক কলতি রবিদাশ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সকাল ৯টায় চা বাগান থেকে বের হয়ে হেঁটে উপজেলা প্রশাসনের অফিসে এসেছি। ২টা বেজে এখানে এসেছি। সকালে চা আর চালভাজা খেয়ে রওনা দিয়েছিলাম।'

পদযাত্রায় অংশ নেওয়া চা শ্রমিক দয়াল অলমিক ও অপু দাস বলেন, 'আমরা ৫ দিন ধরে কর্মবিরতি পালন করছি। কিন্তু কেউ আমাদের ডাকে সাড়া দেয়নি এমনকি কোনো আশ্বাসও দেয়নি। আমরা এত কষ্ট করে কাজ করি, কিন্তু আমাদের ন্যায্য মজুরি দেওয়া হয় না। মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে আজকে সকালে পদযাত্রা করে বেরিয়েছি।'

এদিকে মজুরি বৃদ্ধির দাবি নিয়ে আলোচনার জন্য ঢাকায় আসার কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিপেন পাল বলেন, 'বড় আশা নিয়ে আমরা ঢাকায় আছি। আশা করছি, বৈঠক থেকে মালিকপক্ষ আমাদের শ্রমিকদের দুঃখ–দুর্দশার কথা চিন্তা করে মানসম্মত মজুরি নির্ধারণ করবে। আমাদের ২৩ আগস্ট পর্যন্ত আন্দোলন বন্ধ করে অপেক্ষা করতে বলা হয়েছিল। আমরা সেটা মানিনি। পরে আবার আমাদের সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় আলোচনার জন্য প্রস্তাব দেওয়ার হয়। আমরা প্রস্তাবে রাজি হয়েছি। তবে দাবি না মানা পর্যন্ত সারা দেশের চা শ্রমিকেরা কাজে যোগ দেবে না। আমাদের আন্দোলন চলবে।'

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সফি আহমদ সালমান চা-শ্রমিকদের দাবির প্রতি একাত্মতা পোষণ করে বলেন, 'চা-শ্রমিকরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে অনেক কষ্ট করে মানবেতর জীবনযাপন করছে। তাদের দাবির প্রতি বাগান মালিক পক্ষ যেন মেনে নেয় সেই দাবি জানাচ্ছি।'

বুধবার পদযাত্রা শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহমুদুর রহমান খোন্দকার চা শ্রমিকদের ধৈর্য্য ধরার আহ্বান জানিয়ে বলেন, 'আপনার শান্ত থেকে ধৈর্য্য ধরুন। আপনাদের নায্য দাবি নিয়ে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে আলোচনা চলছে।'

 

Comments

The Daily Star  | English
BNP's stance on president removal in Bangladesh

BNP for polls roadmap in 2 to 3 months

Unless the interim government issues a roadmap to the next election in two to three months, the BNP may take to the streets in March or April next year, say top leaders of the party.

6h ago