মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের দাবিতে কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের সমাবেশ-মানববন্ধন

ছবি: স্টার/ মুহাম্মদ আলী জিন্নাত

গণহত্যার সুষ্ঠু বিচার ও নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দিয়ে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের দাবিতে কক্সবাজারের ক্যাম্পগুলোতে মানববন্ধন, সমাবেশ ও মিছিল করেছেন রোহিঙ্গারা।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হত্যা, অগ্নিসংযোগ, নির্যাতন-নিপীড়নে রাখাইন ছাড়ার ৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়।

সকাল ১০টায় উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের তানজিমারখোলা এলাকার ১৩ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের খেলার মাঠে সমাবেশ করেন রোহিঙ্গারা। বিভিন্ন দাবি সম্বলিত ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে ক্যাম্পের বিভিন্ন ব্লক থেকে রোহিঙ্গারা এই সমাবেশে যোগ দেন।

এ সময় রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতা, ক্যাম্প মাঝি ও মসজিদের খতিবরা বক্তব্য দেন। রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ মোজাম্মেল তার বক্তব্যে লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশ সরকার, প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশের জনগণের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

১৩ নম্বর ক্যাম্পের হেড মাঝি মোহাম্মদ আলী বলেন, 'আমরা বাংলাদেশে ভাল আছি, শান্তিতে আছি। তারপরও নিজ জন্মভূমি ও নিজ ভিটেমাটিতে ফিরে যেতে সবসময় মন কাঁদে। আমাদের ২টি দাবি। ২০১৭ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গণহত্যার বিচার এবং আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিয়ে সসম্মানে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন।'

সমাবেশে হেড ইমাম নুরুল ইসলাম, হেড মাঝি মোহাম্মদ ইব্রাহিম বক্তব্য দেন। সমাবেশ শেষ হওয়ার পর রোহিঙ্গারা মিছিল বের করেন।

উখিয়ার শফিউল্লাহ কাটা এলাকায় অবস্হিত ১৬ নম্বর ক্যাম্পের কমিউনিটি সেন্টারের সমাবেশে রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতারা বক্তব্য দেন।

রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ ফয়সালের এ সময় বলেন, 'আমরা আজ সমবেত হয়েছি মূলত ৫ বছর আগে মিয়ানমারে আমাদের জীবনে ঘটে যাওয়া সেই  দুঃখজনক, হৃদয়বিদারক, দু:সহ ঘটনাগুলোকে স্মরণ করার জন্য। পাশাপাশি আমাদের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নতুন ও আগামী প্রজন্মের কাছে সেসব ইতিহাস তুলে ধরতে চাই।'

সকাল সাড়ে ১০টায় ১৩ নম্বর ক্যাম্পে এইচএমবিডি ফাউন্ডেশন পরিচালিত চিকিৎসা সেবাকেন্দ্রের আঙিনায় কথা হয় রোহিঙ্গা হোসনে আরার সঙ্গে।

তিনি বলেন, 'আমার স্বামী মারা গেছেন। আমি আমার ৫ সন্তানকে নিয়ে আমার দেশে ফিরে যেতে চাই। বাংলাদেশের হুকুমতের (সরকার) কাছে আমার আবেদন, আমাদেরকে এমনভাবে যেন পাঠানো হয় যাতে আর এদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিতে না হয়।'

উখিয়া উপজেলার ১১টি ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) উপ-অধিনায়ক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কামরান হোসাইন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, '১১টি ক্যাম্পের মধ্যে ১০টিতে আজ বিভিন্ন দাবি নিয়ে রোহিঙ্গারা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করেছেন। সমাবেশ চলাকালে যেন অপ্রীতিকর কিছু না ঘটে, সে জন্য পুলিশ মোতায়েন ছিল।'

অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ শামসুদ্দৌজা বলেন, 'ক্যাম্পে সীমিত পরিসরে শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ ও আলোচনা করার জন্য রোহিঙ্গাদের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তারা উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ২০ স্মাথানে সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছেন বিভিন্ন দাবিতে।'

Comments

The Daily Star  | English

4.8 lakh narcotics cases pending despite deadline

Judge shortage, lack of witnesses, inadequate court infrastructure blamed for delays

6h ago