পাকিস্তানের বন্যায় নিহতের সংখ্যা ১,২৮০ ছাড়াল

পাকিস্তানের নওশেরা জেলার একটি এলাকায় বন্যার পানির মধ্য দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে এক বালক। ছবি: রয়টার্স (সেপ্টেম্বর ৩, ২০২২)
পাকিস্তানের নওশেরা জেলার একটি এলাকায় বন্যার পানির মধ্য দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে এক বালক। ছবি: রয়টার্স (সেপ্টেম্বর ৩, ২০২২)

পাকিস্তানে নজিরবিহীন বন্যায় নিহতের সংখ্যা বেড়েই যাচ্ছে। মানবিক সহায়তা প্রদানকারী সংস্থাগুলো সতর্ক করেছে, দেশটির দীর্ঘমেয়াদী ত্রাণ সহায়তা প্রয়োজন। 

১৪ জুন থেকে শুরু করে গতকাল শনিবার পর্যন্ত বন্যায় নিহত হয়েছেন ১ হাজার ২৮২ জন। দেশটির জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, নিহতদের প্রায় এক তৃতীয়াংশই শিশু।

কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদ সংস্থা সিএনএন জানিয়েছে, শনিবার ৫৭ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে ২৫ জন শিশু।

ত্রাণ সংস্থাগুলো আশংকা প্রকাশ করেছে, পাকিস্তানের মানুষের দুর্ভোগ শেষ হতে এখনও অনেক দেরি, এবং এই দুর্যোগের প্রভাব যত বেশি দিন ধরে চলবে, শিশুরা ততদিন সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে থাকবে।

জাফরাবাদ জেলায় বেশিরভাগ মানুষের বাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। যারা বেঁচে আছেন, তারা এই উঁচু জায়গায় অস্থায়ী আবাস তৈরি করেছেন। ছবি: রয়টার্স
জাফরাবাদ জেলায় বেশিরভাগ মানুষের বাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। যারা বেঁচে আছেন, তারা এই উঁচু জায়গায় অস্থায়ী আবাস তৈরি করেছেন। ছবি: রয়টার্স

পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলের পর্বতে বরফ গলে যাওয়া এবং রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টির কারণে দেশটিতে এই নজিরবিহীন বন্যা দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এটাই পাকিস্তানের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ।

ইউরোপের মহাকাশ সংস্থার ধারণকৃত স্যাটেলাইট ছবিতে দেখা গেছে, বন্যার কে পর্যায়ে দেশটির এক তৃতীয়াংশ অঞ্চল পানিতে ডুবে গেছে। সরকার ও ত্রাণ সংস্থাদের দাবি, বন্যাদুর্গত মানুষের সংখ্যা ৩ কোটি ৩০ লাখ ছাড়িয়েছে।

ইউনিসেফ জানিয়েছে, পানিবাহিত রোগ, ডুবে যাওয়া ও অপুষ্টির হাত থেকে বাঁচার জন্য ৩০ লাখ শিশুর জরুরি ভিত্তিতে মানবিক সহায়তা প্রয়োজন। এছাড়াও, বন্যায় প্রায় ১৭ হাজার ৫৬৬টি স্কুল ধ্বংস ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে গত ২ বছর ধরে করোনাভাইরাসের কারণে পিছিয়ে থাকা শিশুদের শিক্ষা আরও বড় হুমকির মুখে পড়েছে বলেও সংস্থাটি দাবি করে।

পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলের বেলুচিস্তান ও সিন্ধু প্রদেশ বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই দুই প্রদেশে অবকাঠামো ও সুপেয় পানির সরবরাহ প্রক্রিয়া বড় আকারে ক্ষতির শিকার হয়েছে।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্য চেয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ।

তিনি জানান, বন্যায় অবকাঠামো, বাড়িঘর ও ফসলি জমিতে আনুমানিক ১ হাজার কোটি ডলারের বেশি ক্ষতি হয়েছে।

পাকিস্তানের চারসাদ্দা জেলায় বন্যায় ভেঙে পড়া নিজের বাড়ি দেখছেন এক প্রৌঢ়। ছবি: রয়টার্স
পাকিস্তানের চারসাদ্দা জেলায় বন্যায় ভেঙে পড়া নিজের বাড়ি দেখছেন এক প্রৌঢ়। ছবি: রয়টার্স

ইতোমধ্যে দেশটিতে একটি জাতীয় বন্যা প্রতিক্রিয়া ও সমন্বয় কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও, আহতদের চিকিৎসা, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রয়োজনীয় উপকরণ পাঠানো ও সংক্রামক ব্যাধির ছড়িয়ে পড়া ঠেকানোর জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ১ কোটি ডলার তহবিল দিয়েছে। চীন ও যুক্তরাজ্যও ত্রাণ দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ১০ লাখেরও বেশি বাসস্থান ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে। অন্তত ৫ হাজার কিলোমিটার সড়কও ক্ষতির শিকার হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Govt publishes gazette of 1,558 injured July fighters

Of them, 210 have been enlisted in the critically injured "B" category, while the rest fall under the "C" category of injured fighters

6h ago