২০১ জন উপকারভোগীর কার্ড আটকে রাখার অভিযোগ ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

ইউপি চেয়ারম্যান আনিছ উদ্দিন ওরফে শাহিন। ছবি: সংগৃহীত

নরসিংদীর মনোহরদীতে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ২০১ জন উপকারভোগীর কার্ড নিয়ে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। 

ভুক্তভোগীরা 'কার্ড পুনরুদ্ধার' চেয়ে আজ বুধবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। 

অভিযুক্ত আনিছ উদ্দিন ওরফে শাহিন মনোহরদীর চরমান্দালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে তিনি জয়ী হয়েছেন।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, হতদরিদ্রদের জন্য সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় কার্ডের মাধ্যমে প্রতিমাসে নগদ ৩০০ টাকায় ৩০ কেজি চাল কিনতে পারেন উপকারভোগীরা। সম্প্রতি চাল বিতরণের নির্দিষ্ট দিনে কার্ডধারীরা চাল কিনতে গেলে নতুন কার্ড দেওয়ার কথা বলে ২০১ জনের কার্ড রেখে দেন চেয়ারম্যান আনিছ উদ্দিন।

পরে উপকারভোগীরা কার্ড ফেরত চাইলে তিনি তাদের তাড়িয়ে দেন। কার্ড ফিরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করলে চেয়ারম্যান তাদের জানান, নির্বাচনে তাকে ভোট না দেওয়ায়, তাদের আর চাল দেওয়া হবে না। 

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ইউপি নির্বাচনে যে পরিবারগুলো তার পক্ষে কাজ করেনি, ভোটে জিতে যাওয়ার পর সেই পরিবারগুলোর কার্ড কেড়ে নিয়েছেন তিনি। বারবার অনুরোধ করার পরও কার্ড ও চাল দেওয়া হয়নি তাদের। 

উত্তর চরমান্দালিয়া গ্রামের দিনমজুর মতিউর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি দুই বছর ধরে ৩০০ টাকা দিয়ে ৩০ কেজি করে চাল পাচ্ছি। আমাদের চাল উত্তোলনের কার্ড ডিলারের কাছে ছিল। সেখান থেকে চেয়ারম্যান আমার কার্ড নিয়ে যান। পরে চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করে জানতে চাইলে তিনি কার্ড বাতিল করেছেন বলে জানিয়ে দেন। এখন আমাকে কার্ড বা চাল কোনটিই দেওয়া হচ্ছে না।' 

আরেক উপকারভোগী আব্দুর রহিম বলেন, 'নির্বাচনে অনেকেই অনেকের পক্ষে কাজ করেছেন। আমি নৌকার পক্ষে কাজ করেছিলাম। নির্বাচনে বর্তমান চেয়ারম্যানের বিপক্ষে কাজ করায় তিনি আমার পেটে লাথি দিয়েছেন। অনেকেরই কার্ড রেখে দিয়েছেন।'

রিকশাচালক হাবিবুর রহমান বলেন, '১০ টাকা কেজি দরে মাসে ৩০ কেজি চাল পেতাম। বর্তমান চেয়ারম্যান নতুন করে কার্ড দেওয়ার নাম করে আমার কার্ড নিয়ে গেছেন। কার্ড ফেরত চাইলে চেয়ারম্যান ধমক দেন। গত দুই মাস ধরে চাল পাচ্ছি না।'

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন চেয়ারম্যান আনিছ উদ্দিন ওরফে শাহিন।

তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করা হচ্ছে। আমি কারও কার্ড কেড়ে নেইনি, কারও কার্ড বাতিল করার সুযোগও আমার নেই।'

জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ এস এম কাসেম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'উপকারভোগীদের লিখিত অভিযোগ এখনো আমার কাছে এসে পৌঁছায়নি। এমন ঘটনা যদি ঘটে থাকে, তাহলে বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।' 

Comments

The Daily Star  | English

Effective tariff for RMG exports to US climbs to 36.5%: BGMEA

The tariff will be a bit less if 20% of the cotton used in garment production is sourced from the USA

2h ago