বাংলাদেশের ভেতরে বারবার মিয়ানমারের মর্টার শেল, ‘সতর্ক অবস্থানে’ বিজিবি

ছবি: স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেল বিস্ফোরণে গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ১ রোহিঙ্গা যুবক নিহত ও ৪ জন আহতের ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। কূটনৈতিক পর্যায়েও প্রতিবাদ জানানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বিজিবির পরিচালক (অপারেশন) লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফয়জুর রহমান আজ শনিবার দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

এর আগেও মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেল বাংলাদেশে এসে পড়েছে। তখনও কূটনৈতিকভাবে প্রতিবাদ জানানো হয়েছিল। কিন্তু মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেল বাংলাদেশে পড়া বন্ধ হয়নি।

ফয়জুর রহমান বলেন, 'মাইন বিস্ফোরণের ঘটনাটি মিয়ানমারের ভেতরের অংশে ঘটায় এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি। কারণ সেটি তাদের সীমানা। এ ঘটনায় আহত ব্যক্তি বাংলাদেশি তঞ্চঙ্গা সম্প্রদায়ের সদস্য। তিনি মিয়ানমার অংশে যাওয়ার কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে। সেখানে যাওয়াটা ঝুঁকিপূর্ণ ছিল এবং তিনি সেই ঝুঁকির মধ্যে পড়েছেন।'

সীমান্তের দায়িত্বে থাকা এই বিজিবি কর্মকর্তা বলেন, 'মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেল বিস্ফোরণে ১ রোহিঙ্গা যুবক নিহতের ঘটনাটি গত রাতে ঘটেছে। আমরা রাত থেকেই তথ্য সংগ্রহ করছি। এখনো ২টি মর্টার শেল অবিস্ফোরিত অবস্থায় আছে। সেগুলো ঘিরে রাখা হয়েছে। ওই এলাকায় চলাচলে সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে।'

ঘটনার পরপরেই বিজিবির পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, 'কূটনৈতিক পর্যায়েও প্রতিবাদ জানানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।'

বেশ কয়েকদিন ধরেই মিয়ানমারের গোলা বাংলাদেশে দেশে এসে পড়ছে। এটি কেন বন্ধ হচ্ছে না এবং এটি বন্ধে কী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'মিয়ানমারে বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষ বেশ কয়েকদিন ধরেই চলছে। আমরা শুরু থেকেই সতর্ক আছি। মিয়ানমারের কোনো নাগরিক যেন বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারেন, সে বিষয়েও সর্বোচ্চ সতর্ক আছি। তাদের গোলা যেন আমাদের দেশে না আসে সে বিষয়ে তাদেরকে আগেও জানানো হয়েছে। নতুন করে আবারো জানানো হবে এবং কূটনৈতিকভাবেই এটি বন্ধ করার জন্য আলোচনা হচ্ছে।'

এর আগে গতকাল সকালে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুমের বাইশফাঁড়ি সীমান্তের কাছে 'মাইন বিস্ফোরণে' বাংলাদেশি যুবক অংথোয়াইং তঞ্চঙ্গার (২২) একটি পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

ঘুমধুম ইউনিয়নের বাইশফাঁড়ি চাকমা পাড়া সংলগ্ন সীমান্তের ৩৫ নম্বর পিলার থেকে মিয়ানমার ভূখণ্ডের ১০০ গজের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।

গত ৩০ আগস্ট সকাল ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ঘুমধুম ইউনিয়নের বাইশফাঁড়ি সীমান্তের ৩০০ থেকে ৪০০ গজ ভেতরে মিয়ানমারের একটি হেলিকপ্টার বেশ কয়েকবার ঘুরতে দেখা যায়। সে সময় মিয়ানমার থেকে কয়েক রাউন্ড গোলাবর্ষণ করা হয়।

তার আগে গত ২৮ আগস্ট দুপুরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তে ৩৪ ও ৩৫ নম্বর পিলার এলাকায় মিয়ানমারের ২টি মর্টার শেল এসে পড়ে।

ওই ঘটনার পর পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, 'আমরা এ ধরনের ঘটনায় সাধারণত প্রতিবাদ করে থাকি। এবারও কড়া প্রতিবাদ জানাবো, যেন বাংলাদেশের ভেতরে এ ধরনের বিষয় আর না ঘটে।'

 

Comments

The Daily Star  | English

'Election Commission shamelessly favouring a particular party'

Hasnat Abdullah says police obstructed NCP leaders and activists from entering EC building

45m ago