ট্রেড লাইসেন্স তৈরি-নবায়নে দুর্নীতি ব্যবসায়ের অন্যতম বাধা: জরিপ

উদ্যোক্তারা মনে করছেন যে দুর্নীতির কারণে বাজারে অসম প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হয়। ছবি: সংগৃহীত

ট্রেড লাইসেন্সে তৈরি করতে ও নবায়ন করতে দুর্নীতি ক্ষুদ্র ও মাঝারি (এসএমই) ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে অন্যতম বড় বাধা বলে একটি জরিপে উঠে এসেছে।

দেশের এসএমই খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৮০০ জন প্রতিনিধিকে নিয়ে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) এবং সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট এন্টারপ্রাইজের (সিআইপিই) যৌথ উদ্যোগে করা জরিপের ফলাফলে এমন তথ্যই দেখা গেছে।

এতে দেখা যায়, ৫২ শতাংশ এসএমই প্রতিষ্ঠানকে ঘুষ দিতে হয়। ৭১ শতাংশ এসএমই প্রতিষ্ঠান মনে করে যে দুর্নীতির কারণে বাজারে অসম প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হয়। ৬১ শতাংশ এসএমই প্রতিষ্ঠান ঘুষ দিয়ে সরকারি নিয়মকানুন এড়িয়ে যায়।

এছাড়া নতুন লাইসেন্স সংগ্রহ এবং নবায়নের ক্ষেত্রে ঘুষ দেওয়া-নেওয়া বেশি হয়ে বলে জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে।

জরিপে অর্ধেকের বেশি প্রায় ৫২ শতাংশ অংশগ্রহণকারী জানিয়েছেন যে নতুন লাইসেন্স তৈরি ও নবায়ন, সরকারি সেবা ব্যবহার, ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (টিন) সংগ্রহ, ভ্যালু অ্যাডেড ট্যাক্স (ভ্যাট) সনদপত্র সংগ্রহসহ ইত্যাদি ক্ষেত্রে ঘুষ দিতে হয়। 

নতুন লাইসেন্স তৈরির ক্ষেত্রে ৩৬ দশমিক ৪ শতাংশ এবং নবায়নের ক্ষেত্রে ৩১ দশমিক ৮ শতাংশ দুর্নীতির উপস্থিতির কথা বলেছেন।

জরিপের তথ্য অনুসারে, ঘুষ ও রাজনৈতিক প্রভাব দুর্নীতির প্রধান নিয়ামক। এ ছাড়াও এই তালিকায় আছে চাঁদাবাজি, স্বজনপ্রীতি এবং মাত্রাহীন পৃষ্ঠপোষকতা।

অংশগ্রহণকারীদের একটি বড় অংশ (৬২ দশমিক ৪ শতাংশ) মনে করেন যে প্রচলিত ব্যবস্থার মধ্যেই দুর্নীতির শেকড় এবং ৭১ দশমিক ৩ শতাংশ মনে করেন যে দুর্নীতির অত্যধিক উপস্থিতি বাজারকে আরও অসম প্রতিযোগিতামূলক করে তোলে। 

অর্ধেকের বেশি উত্তরদাতা মনে করেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতে কঠোর সরকারি নিয়মকানুন দুর্নীতি বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এই সব ধারণার কারণে জরিপে অংশগ্রহণকারী বেশিরভাগ এসএমই উদ্যোক্তা (৬১ শতাংশ) অনৈতিক পথ বেছে নিয়েছেন। 

দুই-তৃতীয়াংশ যারা ঘুষ দিয়েছেন, তারা মনে করছেন যে সেবা নেওয়ার ক্ষেত্রে ঘুষ দেওয়া প্রয়োজন এবং ঘুষ দিলে সময় বাঁচে।

জরিপে দেখা যায়, দুর্নীতির সবচেয়ে বড় জায়গাগুলো হচ্ছে লাইসেন্স ও রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত অফিস (২৮ দশমিক ৮ শতাংশ), ট্যাক্স অফিস (২১ দশমিক ৬ শতাংশ), স্থানীয় সরকার বা সিটি করপোরেশন বা পৌরসভা (১৯ দশমিক ৫ শতাংশ), ভূমি রেজিস্ট্রেশন অফিস (১৩ দশমিক ৫ শতাংশ), পরিবেশ অধিদপ্তর (১২ দশমিক ৩ শতাংশ) এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা (১০ দশমিক ৬ শতাংশ)।

২০২১ সালের অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকে শুরু করে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত পরিচালিত হয়। জরিপ থেকে প্রাপ্ত ফলাফলসমূহ ইতিমধ্যেই সিজিএস এবং সিআইপিই এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে।
 

Comments

The Daily Star  | English
rooppur-nuclear-power-plant

Gridline woes delay Rooppur Power Plant launch

The issue was highlighted during an International Atomic Energy Agency (IAEA) inspection in March

3h ago