চট্টগ্রামে বিগত ৯ মাসের তুলনায় অক্টোবরে দ্বিগুণ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে

চট্টগ্রামে বিগত ৯ মাসের তুলনায় অক্টোবরে দ্বিগুণ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে
এডিস মশা ও লার্ভা নির্মূলে বৃহস্পতিবার নগরীতে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম শুরু করেছে চসিক। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামে গত ৯ মাসের তুলনায় চলতি মাসে দ্বিগুণ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

গত ৯ মাসে চট্টগ্রামে মোট ৮১৫ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। অন্যদিকে শুধু অক্টোবর মাসেই শুক্রবার পর্যন্ত মোট ১ হাজার ৫৬০ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর শুক্রবার পর্যন্ত চট্টগ্রামে মোট ২ হাজার ৩৭৫ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৪ জন।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) প্রতিদিন নগরীতে মশা ও লার্ভা ধ্বংস করতে মশা প্রতিরোধী কীটনাশক স্প্রে করলেও চট্টগ্রামে দিন দিন বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা।

এ বিষয়ে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াস চৌধুরী বলেন, 'চট্টগ্রামে অক্টোবর মাসে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৯ মাসের মোট রোগীর সংখ্যার প্রায় দ্বিগুণ। আতঙ্কের বিষয় হলো প্রায় প্রতিদিনই প্রায় প্রতিটি উপজেলায় ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হচ্ছে। তবে প্রায় ৯৯ শতাংশ রোগী চিকিৎসায় সুস্থ হয়েছেন।'

'আমাদের শহর ও উপজেলার হাসপাতালগুলো ডেঙ্গু রোগীদের কার্যকরভাবে চিকিৎসা করছে। যারা মারা গেছে তারা দেরিতে হাসপাতালে এসেছেন,' বলেন তিনি।

অক্টোবরে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এ মাসে প্রায় প্রতিদিনই কমবেশি বৃষ্টিপাত হয় যা ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার বংশবৃদ্ধির অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে।'

সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত জুন মাস থেকে চট্টগ্রামে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে।

জানুয়ারিতে চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, ফেব্রুয়ারিতে ৪ জন, মার্চে ১ জন, এপ্রিলে ৩ জন এবং মে মাসে কোনো ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন নি। এছাড়া জুন মাসে ১৯ জন, জুলাইয়ে ৬৪ জন, আগস্টে ১১৪ জন এবং সেপ্টেম্বরে ৬০১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

এদিকে এডিস মশা ও লার্ভা নির্মূলে বৃহস্পতিবার নগরীতে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম শুরু করেছে চসিক। চকবাজার ওয়ার্ডে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।

এ সময় তিনি বলেন, 'এডিস মশা স্বচ্ছ পানিতে জন্মায়; যেমন ছাদ, বাগানের টব, পরিত্যক্ত পাত্র, নির্মাণাধীন ভবন এবং বাড়ির উঠোনে জমে থাকা পানি। মানুষকে তাদের চারপাশ পরিষ্কার করার জন্য এই বিষয়ে সচেতন হতে হবে।'

তিনি আরও বলেন, 'সিটি কর্পোরেশনের একার পক্ষে ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা শতভাগ সম্ভব নয়। এ বিষয়ে ব্যাপক গণসচেতনতা আবশ্যক। সিটি করপোরেশন শুধু ঘরের বাইরে মশা মারতে পারে। তাই আমাদের নিজ নিজ বাড়ি ও উঠান পরিষ্কার রাখতে হবে।'

চসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা আবুল হাসেম বলেন, 'কারো বাড়ির আঙিনায় বা প্রতিষ্ঠানের কোথাও পানি জমে থাকলে আমরা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছি।'

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা কীটতত্ত্ববিদ এন্তাজের ফেরদৌস ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মশার লার্ভা মারার জন্য চসিক কর্মীদের সন্ধ্যা ও ভোরে কীটনাশক স্প্রে করতে হবে। ভোর ও সন্ধ্যার আগে মশার কীটনাশক স্প্রে করার উপযুক্ত সময়।'

তিনি আরও বলেন, 'আমাদের গবেষণায় আমরা দেখেছি যে মশার ঘনত্ব খুব ভোরে (সূর্য উঠার এক ঘণ্টা পরে) এবং সন্ধ্যায় (সূর্যাস্তের এক ঘণ্টা আগে) বেশি থাকে। আমরা আশা করি চসিক বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Trump calls for Iran's 'unconditional surrender' as Israel-Iran air war rages on

Israel says conducted 'extensive strikes' in Iran's west, while explosions near Tel Aviv, sirens blare across Israel; smoke rises after explosion in Iran’s Tabriz

5h ago