চট্টগ্রামে বকেয়া বেতনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে শ্রমিক বিক্ষোভ

চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে বকেয়া বেতন পরিশোধসহ বিভিন্ন দাবিতে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা।
উপজেলার চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের খোয়াজনগর এলাকায় গোল্ডেন সন লিমিটেড কারখানায় আজ রোববার সকাল ৬টা থেকে এই বিক্ষোভ শুরু হয়।
ইলেকট্রনিক পণ্য, ফ্যান ও বিভিন্ন খেলনা তৈরি হয় এই কারখানায়। শ্রমিকদের অভিযোগ, মালিকপক্ষ তাদের দুই মাসের বেতন দিচ্ছেন না।
শ্রমিকদের বিক্ষোভ ও সড়কে অবস্থান কর্মসূচির কারণে যানজট সৃষ্টি হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে সড়ক থেকে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের সরিয়ে দিলে কারখানার গেইটে অবস্থান নেন তারা।
বেতনের দাবিতে কারখানা গেইটে অবস্থান করা শ্রমিক মোহাম্মদ ইসমাঈল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত মার্চ ও এপ্রিল মাসের বেতন পরিশোধ করেনি কারখানা কর্তৃপক্ষ। এর বাইরেও অনেক শ্রমিক আছেন, যারা কয়েকমাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। আমরা সারা মাস কাজ করেও পরিবারের মুখে খাবার তুলে দিতে পারব না কেন?'
তিনি আরও বলেন, 'শ্রমিকরা বছরের পর বছর ধরে এখানে কাজ করছেন। তাদের বেতনবৃদ্ধিও করা হচ্ছে না। বেতনবৃদ্ধির কথা বললেই চাকরি থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেয় মালিকপক্ষ।'

কারখানার আরেক শ্রমিক নজরুল ইসলাম বলেন, 'আমরা কোনো মাসেই ঠিকমতো বেতন পাই না। মাসের শুরুতে বেতন চাইতে গেলে বলে- সময় হলে বেতন পাবে, না হলে চাকরি থেকে চলে যাও। আমরা কোথায় যাব? চাকরি করেও বেতন পাই না, পরিবারকে জবাব দিতেও পারি না।'
কারখানার স্টোর সেকশনের এক শ্রমিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, 'কর্তৃপক্ষ কেন আমাদের বেতন দিতে পারছে না? কাজ তো থেমে নেই, শ্রমিকদের বাধ্যতামূলক পাঁচ ঘণ্টা ওভারটাইম করানো হচ্ছে। তারপরও কেন সঠিক সময় বেতন দেবে না?'
শ্রমিকদের দাবিগুলো হলো- পূর্বের সব বকেয়া পরিশোধ করা, শ্রমিকের বেতন বাড়ানো, ১-১০ তারিখের মধ্যে পূর্ণ বেতন পরিশোধ। এ ছাড়া, কোনো শ্রমিককে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিলে, ওই শ্রমিকের প্রাপ্য সরকারি নিয়মে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরিশোধ করা।
এ বিষয়ে জানতে গোল্ডেন সন লিমিটেড কারখানার মানবসম্পদ কর্মকর্তা মোহাম্মদ নোমান এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আমিনুল ইসলামের ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।
কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শরীফ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আন্দোলনরত শ্রমিকদের দাবি মালিকপক্ষ মেনে নেওয়ায় শ্রমিকরা সড়ক থেকে সরে গেছেন। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে।'
Comments