সুইজারল্যান্ডে ২ কিলোমিটার দীর্ঘ যাত্রীবাহী ট্রেন

ধনী দেশ সুইজারল্যান্ডে ট্রেন চলাচলের ১৭৫ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে  ২ কিলোমিটার দীর্ঘ যাত্রীবাহী ট্রেন চালিয়ে নতুন বিশ্ব রেকর্ড গড়েছে। ছবি: সংগৃহীত
ধনী দেশ সুইজারল্যান্ডে ট্রেন চলাচলের ১৭৫ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে ২ কিলোমিটার দীর্ঘ যাত্রীবাহী ট্রেন চালিয়ে নতুন বিশ্ব রেকর্ড গড়েছে। ছবি: সংগৃহীত

একটি যাত্রীবাহী ট্রেনের দৈর্ঘ্য ২ কিলোমিটার। ভাবতে অবাক লাগছে?

ধনী দেশ সুইজারল্যান্ডে ট্রেন চলাচলের ১৭৫ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে গত শনিবার দেশটির রেল বিভাগ ২ কিলোমিটার দীর্ঘ যাত্রীবাহী ট্রেন চালিয়ে নতুন বিশ্ব রেকর্ড গড়েছে।

১০০ বগির ট্রেনটিতে আসন ছিল ৪ হাজার ৫৫০টি। এর ধারণ ক্ষমতা ছিল ২ হাজার ৯৯০ টন। দৈর্ঘ্যে ছিল প্রায় ২ কিলোমিটার।

গতকাল মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ১ হাজার ৯০৬ মিটারের এই বৈদ্যুতিক ট্রেনটি সুইজারল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলে প্রেদা থেকে আলভানু পর্যন্ত ঘণ্টায় ২৫ কিলোমিটার গতিতে চলেছিল। এটি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে খ্যাত দৃষ্টিনন্দন আলবুলা লাইনের ওপর দিয়ে যায়।

খাড়া পাহাড় ও ঘন ঘন বাঁকের জন্য আলবুলা লাইনের খ্যাতি বিশ্বজোড়া।

সুইস ট্রেন প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান স্ট্যাডলারের সহায়তায় রাইটিয়ান রেলওয়ে এই রেকর্ড সৃষ্টির কাজ করে।

ট্রেনের প্রধান চালক আন্দ্রিয়াস ক্রেমার (৪৬) গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, 'সবার কাছে আলবুলা লাইন সুপরিচিত। ট্রেনের গতি ও অন্যান্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে ছিল।'

প্রতিবেদন অনুসারে, যাত্রীবাহী ট্রেনটির প্রথম পরীক্ষামূলক চলাচল ব্যর্থ হয়। এর জরুরি ব্রেক ব্যবস্থা ঠিক মতো কাজ করছিল না। এমনকি, ট্রেনের ৭ চালক বেশ কয়েকটি সুড়ঙ্গ অতিক্রমের সময় নিজেদের মধ্যে রেডিও বা সেলফোনেও যোগাযোগ রাখতে পারছিলেন না।

ট্রেনচালক ক্রেমার জানিয়েছিলেন, তিনি ট্রেনের বাকি ৬ চালক ও ২১ টেকনিশিয়ানকে সহযোগিতা করেছেন। নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের জন্য সাময়িকভাবে ফিল্ড টেলিফোন ব্যবহার করা হয়।

ধনী দেশ সুইজারল্যান্ডে ট্রেন চলাচলের ১৭৫ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে  ২ কিলোমিটার দীর্ঘ যাত্রীবাহী ট্রেন চালিয়ে নতুন বিশ্ব রেকর্ড গড়েছে। ছবি: সংগৃহীত
ধনী দেশ সুইজারল্যান্ডে ট্রেন চলাচলের ১৭৫ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে ২ কিলোমিটার দীর্ঘ যাত্রীবাহী ট্রেন চালিয়ে নতুন বিশ্ব রেকর্ড গড়েছে। ছবি: সংগৃহীত

এ ছাড়াও, বিস্তৃত উপত্যকা ও সুড়ঙ্গের ভেতর দিয়ে যাওয়ার সময় ট্রেনটির গতি ঘণ্টায় ৩৫ কিলোমিটার রাখা হয়।

রাইটিয়ান রেলওয়ের পরিচালক রেনাতো ফাসিয়াতি গণমাধ্যমকে বলেন, 'রেলওয়ের জন্য সুইজারল্যান্ডের খ্যাতি আছে। এ বছর আমরা সুইস রেলওয়ের ১৭৫ বছর পূর্তি উদযাপন করছি। তাই, বিশ্ব রেকর্ড গড়ার চেষ্টা। এমন কিছু করতে চাই যা বিশ্ববাসী আগে দেখেননি।'

এই লাইন দিয়ে আরও অনেক ট্রেন চলাচল করে বলে ট্রেনের গতি নিয়ন্ত্রণ ও ব্রেক সিস্টেম নিয়ে চিন্তিত ছিল প্রতিষ্ঠানগুলো। তাই, এই ট্রেনের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ৩৫ কিলোমিটার রাখা হয়। এ জন্য সফটওয়ার পরিবর্তনের পাশাপাশি নিরাপত্তার জন্য কারিগরি ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নের কাজ চলে।

ট্রেনটি চলাচলের দৃশ্য টেলিভিশনে লাইভ দেখানো হয়েছিল। ছবি ধারণ করতে হেলিকপ্টার ও ড্রোন ব্যবহার করা হয়। সেদিন আলবুলা টানেল থেকে সেন্ট মরিৎজ পর্যন্ত নিয়মিত ট্রেন চলাচল ১২ ঘণ্টা বন্ধ ছিল।

বার্তা সংস্থা এপির বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম ইউরো নিউজ জানিয়েছে, এর আগে ১৯৯১ সালে যাত্রীবাহী দীর্ঘ ট্রেনের রেকর্ড গড়েছিল ন্যাশনাল বেলজিয়াম রেলওয়ে কোম্পানি। ৭০ বগি দিয়ে সাজানো সে ট্রেনের দৈর্ঘ্য ছিল ১ হাজার ৭৩২ মিটারের একটু বেশি।

বেলজিয়ামের ক্যানসার গবেষণার কাজে তহবিল সংগ্রহ করতে ট্রেনটি গেন্ট থেকে অসটেন্ড পর্যন্ত সাড়ে ৬২ কিলোমিটার ভ্রমণ করছিল।

" layout="left"]

 

Comments

The Daily Star  | English

Cops gathering info on polls candidates

Based on the findings, law enforcers will assess security needs in each constituency and identify candidates who may pose risks.

12h ago