বিএনপি চায় সকাল থেকেই সমাবেশ, পুলিশ বলছে দুপুরের আগে নয়

সমাবেশস্থল মাদ্রাসা ময়দানে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হলেও, পুলিশ শুক্রবার রাতে বিএনপি নেতাকর্মীদের সেখানে প্রবেশ করতে দেয়নি। ছবি: স্টার

আগামীকাল শনিবার রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা ময়দানে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ। সমাবেশের সব প্রস্তুতি প্রায় শেষ হলেও আজ শুক্রবার রাত ৮টা পর্যন্ত বিএনপিকে মাঠে প্রবেশ করতে দেয়নি পুলিশ।

পুলিশ বলছে, শনিবার দুপুর ২টা থেকে মাদ্রাসা মাঠে প্রবেশ করা যাবে। কিন্তু বিএনপি চায় শনিবার ভোর থেকেই যেন সমাবেশস্থলে প্রবেশ করা যায়।

এ নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। 

শুক্রবার রাতে দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মিজানুর রহমান বলেন, 'আমরা উদ্বিগ্ন এটা ভেবে যে সরকার আসলে চাচ্ছে কী। আমরা সাহস, ধৈর্য এবং সহনশীলতার সঙ্গে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। কেউ যেন স্যাবোটাজ না করতে পারে, সেজন্য সতর্কভাবে সবকিছু করা হচ্ছে।'

তার অভিযোগ, পুলিশ মাদ্রাসা ময়দানের প্রতিটি প্রবেশপথে প্রহরা বসিয়ে বিএনপি কর্মীদের সমাবেশস্থলে প্রবেশে বাধা দিয়েছে।

তিনি বলেন, 'আমরা শনিবার ফজরের নামাজের পরেই সমাবেশস্থলে প্রবেশ করতে চাই। দুপুর ২টার পরিবর্তে সকাল ৯টা থেকে সমাবেশ শুরু করতে চাই।'

পূর্ব নির্ধারিত সময় এগিয়ে নেয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে মিনু বলেন, 'তৃণমূলের নেতাকর্মীরা না খেয়ে কষ্ট করে দূর-দূরান্ত থেকে অনেক আশা নিয়ে সমাবেশে যোগ দিতে রাজশাহী এসেছেন। তারা কী চান, সেটা সমাবেশে বলার সুযোগ করে দিতে চাই।'

তিনি আরও বলেন, 'তৃণমূলের বক্তব্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি যুক্ত থেকে সরাসরি শুনবেন। এর আলোকে ঢাকার মহাসমাবেশে কর্মীদের জন্য নির্দেশনা আসবে। এ কারণে রাজশাহীর সমাবেশ একটু আগে শুরু করা দরকার।'

রাজশাহী বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এখন দিন ছোট এবং বক্তব্য দেবেন এমন নেতার সংখ্যা অনেক। কাজেই সমাবেশ আমাদের একটু আগেই শুরু করতে হবে। সকাল সকাল সমাবেশ শুরু করে বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলবে।'

সমাবেশস্থলের পাশে ঈদগাহ মাঠে তাঁবু, ত্রিপল টানিয়ে অবস্থান নিয়েছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। ছবি: স্টার

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু কালাম সিদ্দিক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিএনপিকে তাদের আবেদন অনুযায়ী শনিবার বেলা ২টা থেকে সমাবেশস্থল ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী সমাবেশস্থলে নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় সমাবেশের সময় পরিবর্তিত হলে নিরাপত্তা ব্যবস্থাতেও পরিবর্তন আনতে হবে। সেটা এত দ্রুত সম্ভব নয়।'

তিনি বলেন, 'অন্তত ১ হাজার ৫০০ পুলিশ সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে আছেন। তাদের নির্দেশনা দিয়ে মাঠে নামানো হয়েছে। আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ছাড়াও সাদা পোশাকে অনেক পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। সুইপিং টিম নিয়োজিত আছে।'

'বিএনপি শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করুক, আপত্তি নেই। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তারা সময় পরিবর্তন করবে কেন? সময় এগিয়ে এলে ওই সময়ের নিরাপত্তার দায়িত্ব কে নেবে? কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটলে তার দায়িত্ব কে নেবে,' বলেন তিনি।

গণসমাবেশের প্রস্তুতি সম্পন্ন 

এদিকে শনিবারের গণসমাবেশের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। মঞ্চ তৈরি হয়ে গেছে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দরা ইতোমধ্যে রাজশাহী পৌঁছেছেন।

রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সমাবেশের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে, ব্যানার টানানো হয়েছে। ঢাকা থেকে ২০০ মাইক নিয়ে আসা হয়েছে, অনেকগুলো ইতোমধ্যে স্থাপন করা হয়েছে।' 

শুক্রবার রাতের মধ্যেই চেয়ার সাজানো এবং বাকি মাইকগুলো স্থাপন করা হয়ে যাবে বলে জানান তিনি।

তিনি জানান, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও সেলিমা রহমান ইতোমধ্যে রাজশাহী এসে পৌঁছেছেন।

দুলু বলেন, 'সমাবেশ উপলক্ষে কয়েক লাখ নারী-পুরুষের সমাগম হয়েছে রাজশাহী শহরে। এমন কোনো বাড়ি নাই, মেস নাই, হোটেল নাই যেখানে বিএনপির দুয়েকজন কর্মী অবস্থান করছে না। অনেকে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সবাইকে সমাবেশস্থলে জায়গা দিতে হবে।'

Comments

The Daily Star  | English
cyber security act

A law that gagged

Some made a differing comment, some drew a political cartoon and some made a joke online – and they all ended up in jail, in some cases for months. This is how the Digital Security Act (DSA) and later the Cyber Security Act (CSA) were used to gag freedom of expression and freedom of the press.

8h ago