ঢাকার প্রবেশমুখে তল্লাশি, সড়কে বাস কম, যাত্রী ভোগান্তি
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন প্রবেশমুখে পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে এ দৃশ্য দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, যাত্রাবাড়ী এলাকায় আজ সকাল থেকেই পুলিশের উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে। ওই এলাকায় পুলিশের ৩টি চেকপোস্ট দেখা গেছে।
ডেমরা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার এ.এস.এম আজাদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা, কুতুবখালী ও সাইনবোর্ড এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়েছি৷ রুটিন চেক করা হচ্ছে৷'
যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সকাল থেকেই আমরা চেকপোস্ট বসিয়েছি৷ তবে এখন পর্যন্ত সন্দেহজনক কাউকে আমরা পাইনি৷ আর অপ্রীতিকর কোনোকিছু ঘটেনি।'
দারুসসালাম থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) আসাদুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এটা নিয়মিত তল্লাশির অংশ। বিশেষ কিছু নয়।'
তবে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় তল্লাশিতে গুরুত্ব বাড়ানো হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
রাজধানীর মৌচাক এলাকা থেকে মোটরসাইকেলে করে গাবতলিতে যাওয়া রবিউল আলম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গাবতলী একটি স্কুলে ছেলে পড়াশোনা করে। ওর জন্য শীতের কাপড় নিয়ে এসেছিলাম। এখানে চেকপোস্টে দাঁড় করিয়ে পুলিশ অযথা ৫ মিনিট ধরে তল্লাশি করলো। এটা নিছক হয়রানি ছাড়া কিছু না।'
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর এলাকার শফিকুল ইসলাম আরিফ জানান, তিনি বিআরটিসি বাসে করে একটি চাকরির ইন্টারভিউ দিতে মতিঝিল যাচ্ছিলেন। তবে চেকপোস্টে আরও ৫ থেকে ৭ জনের সঙ্গে তাকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নামানো হয়। প্রায় ৫ মিনিট ধরে তার সঙ্গে থাকা ব্যাগ তল্লাশি করা হয়। পরবর্তীতে তার মোবাইল ফোন ও চেক করেন দায়িত্বরত ২ পুলিশ কর্মকর্তা। ১০ মিনিট পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, '২৮৫ টাকা ভাড়া দিয়ে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থেকে বাসে উঠেছিলাম। এখন আবার নতুন করে বাস ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে যেতে হবে। এই ভোগান্তির কোনো মানে হয় না।'
সকালের দিকে গাবতলী এলাকায় মোটরবাইক, প্রাইভেট কার, লেগুনা, বাস, এমনকি পথচারীদেরকেও তল্লাশি করতে দেখা গেছে। এতে গাড়ি চলাচলে ধীরগতি দেখা গেছে।
টঙ্গী এলাকায় পুলিশের চেক পোস্ট দেখা গেলেও গাড়ি তল্লাশি করতে দেখা যায়নি। তবে দূরপাল্লার বাসের পাশাপাশি রাজধানীতে চলাচলকারী বাসের সংখ্যাও কম দেখা গেছে।
রাজধানীর মিরপুর-গুলিস্তান রুটে চলাচলকারী তানজিল পরিবহনের সুপারভাইজার ডেইলি স্টারকে বলেন, অন্যান্য দিনে তুলনায় আজ রাজধানীতে বাসের সংখ্যা কম।
ঢাকা পরিবহন মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমানও রাজধানীতে বাসের সংখ্যা কম থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গতকাল নয়াপল্টনের ঘটনার পর বাস মালিকরা সড়কে বাস চালাতে ভয় পাচ্ছেন। তবে এখন বাসের সংখ্যা কিছুটা বাড়ছে।'
গাবতলীতে দূরপাল্লার বাস ও যাত্রী দুটোই কম দেখা গেছে।
বরিশালগামী সুরমা পরিবহনের লাইনম্যান মোহাম্মদ জুয়েল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যাত্রী সংখ্যা কমে গেছে। আমরা সাধারণত প্রতিদিন ৫টি ট্রিপ দেই। আজ সকাল পর্যন্ত মাত্র ১টি ট্রিপ দিয়েছি।'
এছাড়া, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী ও সাভারের বিভিন্ন সড়কে পুলিশের চেকপোস্ট দেখা গেছে। এসব এলাকায় সড়কে বাস চলাচল কম হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দ্য ডেইলি স্টারের সংবাদদাতারা।
Comments