বৈরি আবহাওয়ায় পশ্চিম রেলের শিডিউল বিপর্যয়

ঘন কুয়াশা আর বৈরি আবহাওয়ার কারণে রেলের পশ্চিম জোনের অধীন উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের জেলার মধ্যে চলাচলকারী ট্রেনের চরম শিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে। প্রতিটি ট্রেন কমপক্ষে দুই থেকে ৩ ঘণ্টা দেরিতে চলাচল করছে। উত্তর ও দক্ষিণের দূরবর্তী জেলার অনেক ট্রেন ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা পর্যন্ত দেরি হচ্ছে। কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ার মধ্যে গতি কমিয়ে দিনের বেলায় হেড লাইট জ্বালিয়ে ট্রেন চলাচল করছে বলে জানায় রেল বিভাগ।
ঘন কুয়াশা, শিডিউল বিপর্যয়, রেল, উত্তরাঞ্চল, দক্ষিণাঞ্চল, দুর্ভোগ,
বৈরি আবহাওয়ার কারণে রেলের পশ্চিম জোনের অধীন উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের জেলার মধ্যে চলাচলকারী ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। ছবি: আহমেদ হুমায়ুন কবির তপু/ স্টার

ঘন কুয়াশা আর বৈরি আবহাওয়ার কারণে রেলের পশ্চিম জোনের অধীন উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের জেলার মধ্যে চলাচলকারী ট্রেনের চরম শিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে। প্রতিটি ট্রেন কমপক্ষে দুই থেকে ৩ ঘণ্টা দেরিতে চলাচল করছে। উত্তর ও দক্ষিণের দূরবর্তী জেলার অনেক ট্রেন ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা পর্যন্ত দেরি হচ্ছে। কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ার মধ্যে গতি কমিয়ে দিনের বেলায় হেড লাইট জ্বালিয়ে ট্রেন চলাচল করছে বলে জানায় রেল বিভাগ।

এদিকে ট্রেনের জন্য ঘন কুয়াশা আর হিমশীতল বাতাসের মধ্যেই বিভিন্ন রেল স্টেশনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে যাত্রীদের। এতে যাত্রীরা দুর্ভোগের পড়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। আবহাওয়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আগ পর্যন্ত ট্রেন চলাচলে বিপর্যয় দূর হওয়ার আশা নেই বলে জানিয়েছেন রেল কর্মকর্তারা।

সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম পার রেল স্টেশন এবং পাবনার চাটমোহর রেল স্টেশনে গত ২৪ ঘণ্টায় রেল চলাচলের রোসটার দেখে পশ্চিম রেলের শিডিউল বিপর্যয়ের চিত্র ফুটে উঠেছে।

বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম রেল স্টেশনের মাস্টার মো. মনিরুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ঢাকাগামী রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনটি বুধবার সকাল সাড়ে ৮টায় বঙ্গবন্ধু স্টেশন ছেড়ে যায়, অথচ রাত সাড়ে ৩টায় এ ট্রেনটি এ স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। ঢাকার যাত্রা পথে প্রায় ৫ ঘণ্টা দেরি হয় উত্তরের এ ট্রেনটির। একই ভাবে ঢাকার পথে পঞ্চগর এক্সপ্রেস ৩ ঘণ্টা, নীল সাগর একপ্রেস ২ ঘণ্টা, একতা এক্সপ্রেস প্রায় পৌনে ২ ঘণ্টা, বনলতা এক্সপ্রেস প্রায় ২ ঘণ্টা দেরিতে চলাচল করে। একইভাবে ঢাকা থেকে ফিরে আসা উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের ট্রেনগুলো কয়েক ঘণ্টা করে দেরিতে চলাচল করে বলে জানান তিনি।

এর আগে মঙ্গলবার বিকাল থেকেই ট্রেন চলাচলে বিলম্ব ঘটতে থাকে বলে জানান এ কর্মকর্তা। মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেন ঢাকার উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু স্টেশন ছাড়ার কথা থাকলেও রাত ৮টায় এ স্টেশন অতিক্রম করে। বেনাপোল এক্সপ্রেস সন্ধ্যা ৫.৩০ মিনিটে স্টেশন অতিক্রম করার কথা থাকলেও রাত ৯টার পর স্টেশন ছেড়ে যায়। এভাবে প্রতিটি ট্রেন কয়েক ঘণ্টা করে দেরিতে চলাচল করে।

বগুড়ার শান্তাহারের বাসিন্দা বুলবুল হোসেনের সাথে পাবনার চাটমোহর রেলস্টেশনে বুধবার দুপুরে কথা হয় এই প্রতিবেদকের সঙ্গে। বুলবুল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, স্ত্রীকে নিয়ে সান্তাহারে বাড়িতে ফেরার জন্য রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট কেটে ৪ ঘণ্টা স্টেশনে দাড়িয়ে রয়েছি এখনও ট্রেনের দেখা নেই।

চাটমোহরে কোথাও থাকার জায়গা নেই তাই ঘন কুয়াশা আর হিমশীতল বাতাসের মধ্যে চার ঘণ্টা ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে তাকে।

পাবনার ফরিদপুর উপজেলার বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, রংপুরে যাওয়ার জন্য পুরো পরিবার নিয়ে স্টেশনে এসে পৌঁছেছি বেলা ১২ৱটায়। ট্রেনের নির্ধারিত সময় ছিল ১২.৪৫ মিনিটে। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর ট্রেন স্টেশনে পোঁছায়। ট্রেনের জন্য শীতের মধ্যে অপেক্ষা করতে করতে অসুস্থ হয়ে পড়েছে বাচ্চারা।

চাটমোহর স্টেশনের মাস্টার মাসুম আলি খান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ঘন কুয়াশায় রংপুর এক্সপ্রেস ঢাকা যাওয়ার পথে প্রায় ৫ ঘণ্টা দেরি হওয়ায় ফেরার পথেও কয়েক ঘণ্টা দেরি হচ্ছে। একই অবস্থা উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোর মধ্যে চলাচলকারী প্রতিটি ট্রেনের। ঘন কুয়াশা আর শীতের কারণে ট্রেন চলাচলে শিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে বলে জানান তিনি।

রেলের পশ্চিম জোনের পাকশি বিভাগের সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা মো. সাজেদুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ঘন কুয়াশার কারণে ট্রেন চালানোর সময় লাইনের উপর কিছু দেখতে না পারায় দিনের বেলায়ও ট্রেনের হেডলাইট জ্বালিয়ে গতি কমিয়ে ট্রেন চালাতে হচ্ছে। ফলে নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছে না ট্রেন।

গত তিন চার দিন ধরে ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঘটছে, ২ জানুয়ারি খুলনা-ঢাকাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেন প্রায় ৮ ঘণ্টা বিলম্ব হয়। এর পর থেকে প্রতিটি ট্রেনেই কয়েক ঘণ্টা করে বিলম্ব হচ্ছে।

রেলের পাকশি বিভাগের পরিবহন কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের দূরবর্তী জেলার মধ্যে চলাচলকারী রেলের পশ্চিম জোনের প্রতিটি ট্রেন কমপক্ষে ২ থেকে ৩ ঘণ্টা করে দেরিতে চলাচল করছে।

আবহাওয়ার বিপর্যয়ের কারণে চাইলেও ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। আবহাওয়ার উন্নতি হওয়ার আগ পর্যন্ত শিডিউল মোতাবেক ট্রেন চলাচল নিয়ে সংশয় রয়েছে বলে জানান তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Horrors inside the Gaza genocide: Through a survivor’s eyes

This is an eye-witness account, the story of a Palestinian in Gaza, a human being, a 24-year-old medical student, his real human life of love and loss, and a human testimony of war crimes perpetrated by the Israeli government and the military in the deadliest campaign of bombings and mass killings in recent history.

1d ago