বিপর্যস্ত উত্তরের জনজীবন, আরও কয়েকদিন থাকতে পারে শৈত্যপ্রবাহ

আজ শনিবার সকালে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল ছিল ৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ছবি: কামরুল ইসলাম রুবাইয়াত/স্টার

প্রায় এক সপ্তাহ ধরে পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁওসহ উত্তর জনপদের ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।

আজ শনিবার সকালে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল ছিল ৯.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস । 

এসব এলাকার ওপর দিয়ে শীতল হাওয়া অনবরত বয়ে যাওয়ায় কুয়াশা কমলেও শীতের তীব্রতা কমেনি বলে দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহ্ ।

গতকাল ও আজ পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, তীব্র শীতে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। এতে কৃষি শ্রমিক, দিনমজুর, রিকশা ও ভ্যান চালকসহ নিম্ন আয়ের মানুষ চরম বিপাকে পড়েছেন।

পঞ্চগড় সদর উপজেলার চাকেলাহাট এলাকার কৃষক মনোয়ার হোসেন বলেন, 'সপ্তাহ খানেক ধরে কাজ-কর্মে খুব অসুবিধা হচ্ছে। ফাঁকা মাঠে কাজ করাটাই দূরুহ হয়ে পড়েছে। হাত-পা জড়ো হয়ে আসছে।'

ছবি: কামরুল ইসলাম রুবাইয়াত/স্টার

কিছুদিন আগে কুয়াশায় কিছুই দেখা না গেলেও এত ঠান্ডা লাগেনি। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে কুয়াশা কমেছে তবে বেড়েছে শীত। সারাদিন ঠান্ডা হাওয়া বইছে। 

একই এলাকার কৃষি শ্রমিক দেবারু বলেন, 'গত কয়েকদিন ধরে বয়ে যাওয়া শীতল হাওয়ায় খেতে কাজ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। কিছুক্ষণ কাজের পর হাত-পা জমে যাচ্ছে, মাঠে থাকা কঠিন।'  

ঠাকুরগাঁও শহরের মধ্য বয়সী রিকশাচালক ক্ষিতীশ বর্মণ বলেন, 'শীতের মধ্যে রিকশা চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। এছাড়াও দিনভর বরাবরের মত যাত্রীর দেখা মিলছে না। কারণ মানুষ নেহাৎ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না। এতে করে আয়ও কমে গেছে।' 

তিনি বলেন, 'স্বাভাবিক সময়ে সাধারণত ৬০০-৭০০ টাকা আয় হয়। মহাজনকে দিয়ে ৪০০-৫০০ টাকা রোজগার করা যায়। কিন্তু কয়েকদিন ধরে যাত্রীর অভাবে ৩০০ টাকা আয় করাই কঠিন হয়ে গেছে।'

শহরের খালপাড়া এলাকার আলেমা বিবি বলেন, 'গত কয়েকদিন ধরে শীতে খুব কষ্ট হচ্ছে। বেড়ার ফাঁক দিয়ে অনবরত ঠান্ডা বাতাস প্রবেশ করায় ২-৩টা কাঁথা কম্বল দিয়েও শীত নিবারণ করা যায় না।'

শীতজনিত অসুস্থতায় শিশু ও বয়স্ক মানুষের হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যাও বেড়েছে।

ঠাকুরগাঁওয়ের সিভিল সার্জন ডা. নূর নেওয়াজ জানান ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে ৪৫ বেডের বিপরীতে গড়ে ভর্তি থাকছে ১৫০ জন। প্রাপ্ত বয়স্কদের ওয়ার্ডে ভর্তি থাকছে প্রায় ৩৫০ জন। যাদের অধিকাংশই শীতজনিত অসুস্থতায় ভুগছেন। অন্যদিকে বহির্বিভাগেও রোগীর অতিরিক্ত চাপ দেখা দিয়েছে।

একই অবস্থা পঞ্চগড় সদর হাসপাতালেও বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. তৌফিক আহমেদ।  

পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম দাবি করেছেন, জেলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ২৫ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। প্রাপ্তি সাপেক্ষে আরও বিতরণ করা হবে ।  

ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক মো. মাহবুবুর রহমান দাবি করেন, জেলায় প্রায় ২৬ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে ।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যেবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহ্ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আকাশে মেঘ ও কুয়াশা কমে গেছে। মৃদু শৈত্যপ্রবাহ এসব এলাকার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়ায় শীতের তীব্রতা বেড়েছে। আরও কয়েকদিন এসব এলাকায় এমন আবহাওয়া থাকতে পারে।'

Comments

The Daily Star  | English

Central bank at odds with BPO over Nagad’s future

The discord became apparent after Faiz Ahmed Taiyeb, special assistant to the chief adviser with authority over the Ministry of Posts, Telecommunications and IT, sent a letter to the BB governor on May 12 and posted the letter to his Facebook account recently

5h ago