জাপানিদের উজ্জ্বল ত্বকের রহস্য কী

জাপান, জে-বিউটি রূপচর্চা, স্কিনকেয়ার,
ছবি: সংগৃহীত

সাধারণত জাপানিদের ত্বক কোমল, স্বচ্ছ ও উজ্জ্বল হয়। এজন্য বিশ্বজুড়ে জাপানিদের সৌন্দর্যের বেশ খ্যাতি আছে। কিন্তু, কীভাবে তাদের ত্বক এমন হয়? এর মূল রহস্য কী?

জাপানিদের এই স্বাস্থ্যকর ত্বকের রহস্য হলো জে-বিউটি বা জাপানিজ বিউটি। তাদের স্কিনকেয়ারে শত বছরের ঐতিহ্য এই জে-বিউটি।

জে-বিউটি কী?

জে-বিউটি কেবল দ্বীপ রাষ্ট্রটিতে উদ্ভূত সৌন্দর্য পণ্যের জন্য একটি নির্দিষ্ট শব্দ নয়। এটি শত বছরের ঐতিহ্য ও আধুনিক ধারণা নিয়ে ব্যাপক গবেষণার ফল। জে-বিউটিতে নিরাময় বা চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়। ফলে, যারা স্বাস্থ্যকর ত্বক চান তাদের জন্য আদর্শ স্কিনকেয়ার পদ্ধতি হলো জে-বিউটি। এ কারণে বিশ্বব্যাপী এর জনপ্রিয়তা ক্রমবর্ধমানভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

জে-বিউটির উৎপত্তি

জাপানি এই স্কিনকেয়ার পদ্ধতিকে গেইশাদের ইতিহাসের সঙ্গে যুক্ত করা যেতে পারে। তখন পেশাদার বিনোদনকারী হিসেবে গেইশাদের ত্বকের যত্ন নেওয়া অপরিহার্য ছিল। তারা ত্বকের যত্ন নিতে সহজ কিন্তু কার্যকর জাপানি ডায়েটরি উপাদান চাল, সামুদ্রিক শৈবাল, গ্রিন টি এবং ক্যামেলিয়া তেল ব্যবহার করতো। এই ঐতিহ্যগত জ্ঞান প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে চলে আসছে। এভাবেই জে-বিউটির উৎপত্তি হয়। যা স্কিন কেয়ারের একটি 'স্কিনিমালিজম' (স্কিন মিনিমালিজম) বা স্বাস্থ্যকর পদ্ধতি হিসেবে পরিচিত।

লাইফস্টাইল এশিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাপানিরা কয়েক দশক ধরে এই পদ্ধতিতে রূপচর্চা করে আসছে। কিন্তু, তারা মাত্র কয়েকটি পণ্য ব্যবহার করলেও সেগুলো অনেক কার্যকর। যেহেতু জে-বিউটি একটি মিনিমালিস্টিক স্কিনকেয়ার পদ্ধতি তাই অতিরিক্ত পণ্য ব্যবহারের বিষয়টি এখানে এড়িয়ে চলা হয়। কেননা এর মূল চাবিকাঠি হলো ত্বকের প্রয়োজন আছে শুধু এমন পণ্য ব্যবহার করা। এই পদ্ধতি মূলত প্রাকৃতিকভাবে সৌন্দর্যকে উজ্জ্বল করে তোলে।

জে-বিউটির সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো- এই স্কিনকেয়ার পদ্ধতি নিখুঁত ত্বকের চেয়ে স্বাস্থ্যকর ত্বককে প্রাধান্য দেয়। এখানে ক্লিনজিং অয়েল, লাইটওয়েট লোশন এবং ময়েশ্চারাইজারের মতো হাতে গোণা কয়েকটি পণ্য ব্যবহার করা হয়। এগুলো তৈরিতে পুরোপুরিভাবে বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করা হয়। এর উপাদানের মধ্যে আছে- গ্রিন টি, চাল, ক্যামেলিয়া ফুলের তেল, ইউজু, হিনোকি, আওমোরি আপেল, জাপানিজ ওয়াইল্ড রোজ, ওয়াকামে, কম্বু সিউইড, চেরি ফুল, রেইশি মাশরুম, সিশো ইত্যাদি।

জে-বিউটির ৪টি ধাপ

তেলভিত্তিক ক্লিনজার: মেকআপ, অতিরিক্ত সিবাম, সানস্ক্রিন ইত্যাদি ধুয়ে ফেলতে তেলভিত্তিক ক্লিনজার দিয়ে এর ধাপ শুরু হয়। যা ত্বকে আলতো করে ম্যাসাজ করা হয় এবং হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলা হয়।

ফোম ক্লিনজার: দ্বিতীয় ধাপ হলো ফোম ক্লিনজার। এই ধাপে ত্বক থেকে ঘাম, দূষণ ও মরা লোমকূপ গভীরভাবে পরিষ্কার এবং তুলতে পানিভিত্তিক ফোমিং ক্লিনজার ব্যবহার করা হয়।

লিকুইড লোশন: এটি হলো তৃতীয় ধাপ। এই ধাপে আগেই পরিষ্কার করা ত্বক পুনরায় হাইড্রেট করতে হালকা লোশন আলতো করে মুখে লাগানো হয়।

ময়েশ্চারাইজার: শেষ ধাপে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা হয়। যা হাইড্রেট হওয়া ত্বককে আরও কোমল ও স্বচ্ছ করে তোলে।

জেনে রাখা ভালো

ডাবল ক্লিনজিং এবং ডাবল ময়েশ্চারাইজিংয়ের উৎপত্তি জাপানে গেইশাদের সময় থেকে। তাদের প্রাচীন ঐতিহ্য অনুসরণ করে জাপানি নারীরা ত্বকে ইমোলিয়েন্ট তেল মালিশ করে তারপর ধুয়ে ফেলে এবং ফোমিং ক্লিনজার দিয়ে ভারী মেকআপ তুলে ফেলে। এরপর হালকা হাইড্রেটিং লোশন ও ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করে। ফলে, ত্বক হয় কোমল ও উজ্জ্বল। আর এটাই হলো জে-বিউটি বা জাপানি বিউটি।

Comments

The Daily Star  | English
Binimoy platform suspended by Bangladesh Bank

BB suspends Binimoy over irregularities

During the previous AL govt, it was developed by the IDEA under the ICT Division at a cost of Tk 65 crore.

11h ago