অ্যান্ড্রয়েড ফোনে বিজয় কি-বোর্ড প্রি ইনস্টল থাকতে হবে, ব্যবহার বাধ্যতামূলক নয়

মোবাইল ফোন উৎপাদক বা আমদানিকারকদের জন্য বাধ্যতামূলকভাবে অ্যান্ড্রয়েড ফোনে বিজয় কি-বোর্ডের সফটওয়্যার আগে থেকে ইনস্টল (প্রিইনস্টল) করতে হবে। তবে ব্যবহারকারীদের জন্য বিজয় কি-বোর্ড বাধ্যতামূলক নয় বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
মোবাইলে বাধ্যতামূলক বিজয় কি-বোর্ড, যা জানা গেল

মোবাইল ফোন উৎপাদক বা আমদানিকারকদের জন্য বাধ্যতামূলকভাবে অ্যান্ড্রয়েড ফোনে বিজয় কি-বোর্ডের সফটওয়্যার আগে থেকে ইনস্টল (প্রিইনস্টল) করতে হবে। তবে ব্যবহারকারীদের জন্য বিজয় কি-বোর্ড বাধ্যতামূলক নয় বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

তিনি বলেন, 'ব্যবহারকারীরা তাদের ফোন থেকে সেকেন্ডের মধ্যে যেকোনো কিছু আনইনস্টল করতে পারেন। সুতরাং, এখানে 'বাধ্যতামূলক' শব্দটি ব্যবহার করার দরকার নেই।'

৩ দিনব্যাপী 'ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলা ২০২৩' আয়োজনের এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা বলেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, 'যিনি উৎপাদক অথবা আমদানিকারক তার জন্য এটি বাধ্যতামূলক। আমরা তাদেরকে ফোনে বিজয় কি-বোর্ড অ্যাপ প্রিইনস্টল করতে বলেছি যাতে কেউ চাইলে এটি ব্যবহার করতে পারে।'

গত ১৩ জানুয়ারি সব অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে বিজয় কি–বোর্ড ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা রয়েছে উল্লেখ করে দেশের মুঠোফোন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।

বিটিআরসির চিঠিতে বলা হয়েছে, আমদানি করা ও স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা সব অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে বিজয় অ্যান্ড্রয়েড এপিকে ফাইল ব্যবহারের লক্ষ্যে বিটিআরসির তরঙ্গ বিভাগ থেকে বিনা মূল্যে ফাইলটি দেওয়া হবে। স্মার্টফোনগুলো কমিশন থেকে বাজারজাতকরণের অনুমতি নেওয়ার আগে এপিকে ফাইলটি ইনস্টল করে তা প্রদর্শন করতে হবে, না হলে অনাপত্তি সনদ দেওয়া হবে না।

আদেশ জারির পরপরই এ নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়।

প্রযুক্তিবিদ ও লেখক ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এক ফেসবুক পোস্টে বলেছেন, 'সব অ্যান্ড্রয়েড ফোনে বিজয় কীবোর্ড ব্যবহার করার জন্য বিটিআরসির নির্দেশ অযৌক্তিক, হাস্যকর এবং অধিকার লঙ্ঘনকারী সিদ্ধান্ত।'

এলআইআরএন এশিয়া-এর সিনিয়র পলিসি ফেলো আবু সাঈদ খান জানান, বিটিআরসির নির্দেশনা লঙ্ঘন করলে কী হবে এই নিয়ে কোনো আইনের কোনো ধারা তারা উল্লেখ করেননি, কারণ এই ধরনের আদেশ জারি করার ক্ষমতা তাদের নেই।

ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের প্রতিষ্ঠিত আনন্দ কম্পিউটার্স বিজয় কি-বোর্ড সরবরাহ করে। এটির মেধাস্বত্ব মোস্তাফা জব্বারের নামে রয়েছে উল্লেখ করেও এই নির্দেশনার সমালোচনা করেন তিনি।

উল্লেখ্য, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রতিষ্ঠান বিটিআরসি।

সংশ্লিষ্টদের মতে, বিজয় কি-বোর্ড কম্পিউটারে এবং কিছু পেশাদার কর্মক্ষেত্র, বিশেষ করে প্রকাশনা শিল্পে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।

তবে এর প্রতিযোগী রিদমিক কিবোর্ড মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়।

এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতে চাইলে টেলিকম মন্ত্রী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিজয় ইতোমধ্যে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের সুপারিশে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন কর্তৃক একটি 'স্ট্যান্ডার্ড' কীবোর্ড হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।'

এর আগে তিনি জানান, সেই সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে, বিএসটিআই কর্তৃক নির্ধারিত বাধ্যতামূলক পণ্য ও সেবার তালিকায় বিজয় কি-বোর্ড নেই।

Comments