ক্যাম্পাস

নোবিপ্রবি রেজিস্ট্রারকে অপসারণে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. জসিম উদ্দিনকে অব্যাহতি দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের যোগ্য লোককে নিয়োগ দেওয়াসহ ৮ দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
৮ দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেন নোবিপ্রবির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ছবি: স্টার

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. জসিম উদ্দিনকে অব্যাহতি দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের যোগ্য লোককে নিয়োগ দেওয়াসহ ৮ দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত নোবিপ্রবির কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তারা এ কর্মসূচি পালন করেন।

এর আগে, গতকাল নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য বরাবর অফিসার্স এসোসিয়েশন সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন পলাশ স্বাক্ষরিত ৮ দফা সম্বলিত স্মারকলিপি এবং ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়।

কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, তাদের প্রধান দাবি ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বর্তমান রেজিস্ট্রারের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া। দ্বিতীয় দাবি দ্রুত সময়ের মধ্যে স্থায়ী পদে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন রেজিস্ট্রার নিয়োগ। দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। তবে কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে জরুরি সার্ভিস, ক্লাস-পরীক্ষায় সহযোগিতাকারী এবং লাইব্রেরী রিডিং কক্ষের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

এ ছাড়া, তাদের অন্য দাবিগুলো হলো- কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমিতির অনুমোদন প্রদান। আগামী ৭ দিনের মধ্যে মাস্টার রোল ও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরি স্থায়ীকরণ এবং সদ্য স্থায়ীকৃত কর্মচারীদের আপগ্রেডেশন নিশ্চিতকরণ। আগামী এক মাসের মধ্যে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়োগ ও পদোন্নয়ন নীতিমালা সংশোধন করা এবং ৩টি আপগ্রেডেশনসহ টেকনিক্যাল-নন টেকনিক্যাল পদে নীতিমালা সংশোধন। আগামী ৭ দিনের মধ্যে কর্মচারী নিয়োগ বোর্ডে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরি স্থায়ীকরণ এবং অতীত চাকরিকাল গণনা কমিটিসহ কর্মকর্তা-কর্মচারী সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কমিটিতে কর্মকর্তাদের দিয়ে কমিটি পুনর্গঠন করা। সহকারী রেজিস্ট্রার ও সমমান সপ্তম গ্রেড থেকে ষষ্ঠ গ্রেড এবং ডেপুটি রেজিস্ট্রার ও সমমান পঞ্চম গ্রেড থেকে চতুর্থ গ্রেডের অফিস আদেশ বাস্তবায়ন করা। অনতিবিলম্বে প্রশাসনের বৈষম্যমূলক আচরণ ও দ্বৈতনীতি বন্ধ করতে হবে।

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার্স এসোসিয়েশন সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন পলাশ জানান, ৮ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তাদের দাবি মেনে নেওয়া না হলে আরও বড় পরিসরে কর্মসূচি পালন করা হবে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তারা জানান, বিকেলে উপাচার্যের সঙ্গে তাদের বৈঠক রয়েছে। বৈঠক শেষে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।  

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নোবিপ্রবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার জসিম উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ বিষয়ে আপনি বিশ্ববিদ্যালয় অথরিটির সঙ্গে কথা বলেন। তাদের কাছে উত্তর আছে।'

তবে তার বিরুদ্ধে স্মারকলিপিতে কোনো অভিযোগ নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

নোবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক দিদারুল আলমের ফোনে কল করা হলে রিসিভ করেন তার ব্যক্তিগত সহকারী জোবায়ের হোসেন। তিনি বলেন, 'উপাচার্য মিটিংয়ে আছেন। এখন কথা বলতে পারবেন না।'

গত ২২ নভেম্বর দৈনিক সমকালে 'অভিযোগের পাহাড় ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে' শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়েছিল। এ ছাড়াও, দ্য ডেইলি স্টারসহ একাধিক প্রথম শ্রেণির জাতীয় দৈনিকে এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়।

এসব প্রতিবেদনে নোবিপ্রবির রেজিস্ট্রার মো. জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে দাপ্তরিক নথির ডুপ্লিকেট কপি তৈরি, সিন্ডিকেট সভার কার্যবিবরণী পরিবর্তন, বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা হাতিয়ে নেওয়া, প্রতারণা এবং নারী সহকর্মীদের সঙ্গে অশোভন আচরণসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠে আসে।

তবে নোবিপ্রবির উপাচার্য রহস্যজনক কারণে রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করেননি।

 

Comments