প্রযুক্তি খাতে বিপুল ছাঁটাই কী বার্তা দিচ্ছে?

বেশ কয়েকবছর বিপুল প্রবৃদ্ধির পরও সিলিকন ভ্যালির প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো হাজার হাজার কর্মী ছাঁটাই শুরু করেছে৷ এমন অবস্থায় মার্কিন অর্থনীতি মন্দা আর বিপুল বেকারত্বের কবলে পড়বে কিনা সেই বিতর্কে বিভক্ত অর্থনীতিবিদেরা৷
প্রযুক্তি খাতে বিপুল ছাঁটাই কী বার্তা দিচ্ছে
ছবি: ডয়চে ভেলে

বেশ কয়েকবছর বিপুল প্রবৃদ্ধির পরও সিলিকন ভ্যালির প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো হাজার হাজার কর্মী ছাঁটাই শুরু করেছে৷ এমন অবস্থায় মার্কিন অর্থনীতি মন্দা আর বিপুল বেকারত্বের কবলে পড়বে কিনা সেই বিতর্কে বিভক্ত অর্থনীতিবিদেরা৷

শুরুতে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মতো ব্যাপার মনে হলেও এখন সেটা রীতিমত জলস্রোতে পরিণত হয়েছে৷ বাঘা বাঘা মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিদিন হাজারও কর্মী ছাঁটাই করছে৷ করোনাকালের বিধিনিষেধ এসব প্রতিষ্ঠানের মুনাফায় লাগাম টেনেছিল, এখন তাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় মুনাফা বাড়াতে উদ্যোগী তারা৷

করোনাকালেই অবশ্য মাইক্রোসফট, গুগল, অ্যামাজন আর ফেসবুকের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো বিপুল জনবল নিয়োগ দিয়েছিল৷ কারণ সেসময় এসব প্রতিষ্ঠানের সেবার চাহিদা হুড়মুড়িয়ে বাড়ছিল৷ কিন্তু রেকর্ড ছুঁয়ে স্থায়ী হওয়া মুদ্রাস্ফীতি আর পরিচালনা খরচ বিপুল বেড়ে যাওয়ায় সিলিকন ভ্যালি নিজের বাড়তি মেদ কমানো ছাড়া আর কোনো বিকল্প দেখছে না আপাতত৷ 

গত ১২ মাসে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো সবমিলিয়ে ৩ লাখ ৩০ হাজারের বেশি কর্মী ছাঁটাই করেছে৷ এরমধ্যে ৯০ হাজারের চাকরি গেছে চলতি বছর৷ 

যেহেতু মুদ্রাস্ফীতি এখনো বেশ উঁচু, আর সুদের হার বাড়ার পাশাপাশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি কমছে, তাই স্বাভাবিকভাবেই আশঙ্কা করা হচ্ছে যে মার্কিন অর্থনীতির অন্যান্য খাতেও প্রযুক্তি খাতের এই প্রবণতা ছড়িয়ে পড়তে পারে৷ তবে, অর্থনীতিবিদেরা বলছেন ভিন্ন কথা৷ 

ফিচ রেটিংসের মার্কিন আঞ্চলিক অর্থনীতিব বিভাগের প্রধান ওলু সিনোলা ডয়চে ভেলেকে বলেন, 'তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কর্মসংস্থানের হার করোনা মহামারির আগের তুলনায় ৮ শতাংশ বেশি, যেখানে বর্তমানে সামগ্রিকভাবে কর্মসংস্থানের হার সেসময়ের চেয়ে কিছুটা বেশি৷ এর অর্থ হচ্ছে ২০২১ এবং ২০২২ সালে এই খাতে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি লোক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে৷'

টুইটার, স্পটিফাই এবং টেসলার মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে মার্কিন অর্থনীতির ভবিষ্যত গতিপথ নির্ধারক হিসেবে বিবেচনা করা হয়৷ ফলে এসব প্রতিষ্ঠানের নেতিবাচক যেকোনো খবর দ্রুতই শিরোনামে পরিণত হয় এবং সেসবের ভিত্তিতে এক ধরনের জনমতও তৈরি হয়৷ কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে মার্কিন মুল্লুকে অনেক কর্মীই নিয়মিত তাদের চাকরি পরিবর্তন করছেন৷ দেশটির চাকরির বাজার এক্ষেত্রে বেশ নমনীয়৷ 

পিটারসন ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল ইকোনোমিকসের অনাবাসিক ঊধ্বর্তন ফেলো করেন ডিনান ডয়চে ভেলেকে বলেন, 'মার্কিন চাকরি বাজারে প্রতিমাসে চাকরি হারান ১৫ লাখের মতো মানুষ৷ সে তুলনায় প্রযুক্তি খাতে মাসে ৩০ হাজার কর্মী চাকরি হারাচ্ছেন৷ প্রযুক্তি খাতে চাকরিচ্যুতি ব্যাপকভাবে মনোযোগ আকর্ষণ করলেও সামগ্রিকভাবে মার্কিন শ্রমবাজারে তার প্রভাব খুবই সীমিত৷'

তাছাড়া শুধু ছাঁটাই নয়, অনেক প্রতিষ্ঠান নতুন কর্মী নিয়োগও দিচ্ছে৷ সিলিকন ভ্যালির অবস্থা দেখে তাই মার্কিন অর্থনীতির গতিপথ বোঝা দুরুহ৷ 

 

Comments

The Daily Star  | English
quota reform movement,

Govt publishes preliminary list of those killed in July-August protests

The interim government today published a preliminary list of the people who died during the student-led mass protests in July and August.

1h ago