দুর্নীতিমুক্ত দেশের স্বপ্ন সরকারি সুবিধা না নেওয়া ভাষাসৈনিক কায়েসের

কয়েস উদ্দিন। ছবি: স্টার

ভাষাসৈনিক ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ৯৭ বছর বয়সী কয়েস উদ্দিন। তিনি সবার কাছে 'কয়েস ভাই' নামে পরিচিত। তার স্বপ্ন, মৃত্যুর আগে সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি, দুর্নীতিমুক্ত এবং অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলা দেখে যেতে চান।

জামালপুরের একমাত্র জীবিত ভাষা আন্দোলনের নায়ক তিনি। জামালপুর সদরের গেটপাড় এলাকায় একটি পরিত্যক্ত দোকানে একা থাকেন কয়েস উদ্দিন। তার থাকার কোনো ঘর নেই। নেননি সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা কিংবা ভাতা।

স্থানীয়রা জানান, যৌবনে রাজনীতিতে দৃঢ়ভাবে সক্রিয় ছিলেন কয়েস উদ্দিন। তিনি ছিলেন রাজনৈতিক নেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর অনুসারী।

কয়েস উদ্দিনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে দরিদ্রতার কারণে আর পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারেননি। পরবর্তীতে তিনি ব্রিটিশদের উপমহাদেশ থেকে বিতাড়িত করার জন্য সংগঠিত আন্দোলনের সঙ্গে সক্রিয় হন। তৎকালীন ব্রিটিশ শাসকের অবিচার, শোষণ, বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে অনেক গান রচনা করেন। ভাষা আন্দোলনে তার লেখা ও গাওয়া গান ও কবিতার মাধ্যমে সর্বদা বাঙালিদের অনুপ্রাণিত করতেন। আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে গান রচনা করায় তাকে এক বছরের জন্য জেলে যেতে হয়েছিল।

কায়েস উদ্দিন জানান, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বাড়িতে পাকিস্তানি সেনারা আগুন দিয়েছিল। তখন তার সমস্ত রচনাও পুড়ে যায়। জীবদ্দশায় তিনি সরকারের কাছে কোনো সাহায্য ও স্বীকৃতি নেননি। সরকারের কাছে তার চাওয়া, মৃত্যুর আগে তিনি দুর্নীতিমুক্ত সোনার বাংলা দেখে যেতে চান।

জামালপুরের জেলা প্রশাসক শ্রাবস্তী রায় বলেন, প্রশাসন থেকে কয়েকবার তাকে সাহায্য করতে চেয়েছি। কিন্তু তিনি সরকারের কোনো সাহায্য নিতে রাজি হননি। তবে এবারের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসন থেকে তাকে পুরস্কৃত করা হবে।

Comments

The Daily Star  | English

The end of exemption?

TRIPS waiver end poses dual challenge: legal and technological

19h ago