নারায়ণগঞ্জ

‘ঢাকতে গিয়ে দুঃশাসন আরও প্রকাশিত হয়েছে’

যশোরের ভবদহ আন্দোলনের সংগ্রামী সংগঠক রণজিৎ বাওয়ালীকে সম্মাননা প্রদান। ছবি: স্টার

'শাসকগোষ্ঠী কালো কাপড় দিয়ে তাদের দুঃশাসন ঢাকতে চায়' বলে মন্তব্য করেছেন সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক ও নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের উপদেষ্টা রফিউর রাব্বি।

আজ শুক্রবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

একুশের অনুষ্ঠানে পুলিশি বাধার প্রতিবাদ জানিয়ে রফিউর রাব্বি বলেন, 'শাসকগোষ্ঠী কালো কাপড় দিয়ে তাদের দুঃশাসন ঢাকতে চায়। এটা হয় না। শহীদ মিনারে একুশে ফেব্রুয়ারির একটি অনুষ্ঠান হচ্ছিল, তার ব্যানারে লেখা ছিল "একুশের উচ্চারণ, দূর হ দুঃশাসন"। এই ব্যানার নামিয়ে ফেলার জন্য চাপ দেয় প্রশাসন। পরে ব্যানারটির "দূর হ দুঃশাসন" লেখাটি কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে অনুষ্ঠান শেষ করা হয়। সাংস্কৃতিক জোটের একুশের অনুষ্ঠানের ব্যানার কালো কাপড় দিয়ে ঢাকতে গিয়ে দুঃশাসন আরও তীব্রভাবে প্রকাশিত হয়েছে।'

তিনি বলেন, 'দুঃশাসনে তাদের লজ্জা নেই। কিন্তু দুঃশাসক বললে তাদের লজ্জা হয়। চোরকে চোর, ডাকাতকে ডাকাত, ধর্ষককে ধর্ষক বললে যেমন লজ্জা হয়, তেমনি দুঃশাসককে দুঃশাসক বলায় তাদের লজ্জা হয়েছে। তাদের লজ্জা যে হয়, বিষয়টা একদিক থেকে ভালোই।'

সমগীত সংস্কৃতি প্রাঙ্গণের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে যশোরের ভবদহ আন্দোলনের সংগ্রামী সংগঠক রণজিৎ বাওয়ালীকে সম্মাননা প্রদান ও 'তারুণ্য তাড়নার গান' অনুষ্ঠানের আলোচনা পর্বে বক্তব্য রাখেন রফিউর রাব্বি।

এসময় তিনি বলেন, 'পৃথিবীর সব দেশে সংস্কৃতি ও রাজনীতি হাত ধরাধরি করেই অগ্রসর হয়েছে। পথ হারিয়ে ফেলা রাজনীতিকে পথ দেখিয়েছে সংস্কৃতি। আমাদের দেশেও তাই হয়েছে। সে কারণে সংস্কৃতির প্রতি শাসকগোষ্ঠীর প্রচণ্ড ভয় রয়েছে।'

ষাটের দশকের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে রফিউর রাব্বি বলেন, 'সে সময়ের রাজনীতিই ছিল সংস্কৃতির রাজনীতি। সংস্কৃতির দায় হচ্ছে দুঃশাসকের নৃশংসতা প্রকাশ করা, তাদের জঘন্য, বর্বর চেহারা তুলে ধরা। চোর, ডাকাত, দুঃশাসককে ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। এই দেশটি তাদের লুণ্ঠনের একটি জায়গা। লুণ্ঠন, লুটপাট তাদের চরিত্র। স্বাধীনতাপূর্বের স্বৈরশাসকদের সঙ্গে আজকের স্বৈরশাসকদের চরিত্রের কোনো পার্থক্য দেখি না। উন্নয়নের ঢোল যেমন আইয়ুব খানও পিটিয়েছেন, তেমনি এই সরকারও পেটাচ্ছে। এই চরিত্রগত বৈশিষ্ট্য পাল্টাতে হবে। রাজনীতি কখনো একভাবে চলে না। মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নের বাস্তবায়ন আমরা ঘটাবই।'

সম্মাননা পাওয়া ভবদহ আন্দোলনের সংগঠক রণজিৎ বাওয়ালী বলেন, 'এ দেশ নদীর দেশ, সাগরের দেশ। নদী শাসনের নামে দেশটাকে ধ্বংস করা হচ্ছে। যে জায়গায় জাহাজে-নৌকায় যেতে হতো, সেখানে হেঁটে যাওয়া যায়। পদ্মা কাঁদছে। অচিরেই পদ্মা সেতুর নিচে গরু ঘাস খাবে।'

নদী বাঁচানোর তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, 'নদীকে বাঁচাতে হবে। নদী না বাঁচলে মানুষ বাঁচবে না, এই দেশ থাকবে না। নদীকে শাসন করা যায় না। নদী বাঁচলেই আমরা বাঁচব।'

সমগীত সংস্কৃতি প্রাঙ্গণের কেন্দ্রীয় সভাপ্রধান দীনা তাজরিনের সঞ্চালনায় এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন খেলাঘর আসরের কেন্দ্রীয় সভাপতি রথীন চক্রবর্তী ও শিল্পী অমল আকাশ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সমগীতের জেলা কমিটির সভাপ্রধান আলী আশরাফ।

আলোচনা পর্ব শেষে 'তারুণ্য তাড়নার গান' শিরোনামে গান পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী সায়ান, গানের দল লীলা, সর্বনাম, নিষিদ্ধ, গঙ্গাফড়িং ও সমগীত।

 

Comments

The Daily Star  | English

Shahjalal International Airport Terminal-3: Operations face further delay

The launch of Dhaka airport’s third terminal faces a further delay, as the Civil Aviation Authority of Bangladesh (CAAB) is still negotiating an operation and maintenance agreement -- a prerequisite for starting services -- with a Japanese consortium.

9h ago