ইংল্যান্ডকে ১৫৬ রানে আটকে ফেলল বাংলাদেশ

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

ফিল সল্ট ও জস বাটলার উদ্বোধনী জুটিতে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দিলেন। সল্ট ফিরলেও জীবন পেয়ে অধিনায়ক বাটলার তুলে নিলেন ফিফটি। তবে শেষদিকে অনুমিত তাণ্ডব চালাতে পারল না ইংল্যান্ড। বাংলাদেশের পেসাররা দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে মাঝারি পুঁজিতে আটকে দিলেন প্রতিপক্ষকে।

বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে টস জিতে আগে বোলিং বেছে নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। আগে ব্যাটিং পেয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৫৬ রান তুলেছে ইংল্যান্ড। বাটলারের ঝড়ে ইনিংসের মাঝপথে বড় স্কোরের দিকে এগোচ্ছিল দলটি। তবে শেষ ৪ ওভারে মাত্র ২১ রান করতে ৩ উইকেট খোয়ায় তারা।

ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে শুরু থেকেই চালিয়ে খেলতে থাকে ইংল্যান্ড। পাওয়ার প্লের প্রতি ওভারেই বাউন্ডারি মারেন দুই ওপেনার সল্ট ও বাটলার। সেসময় তাদের আক্রমণের সবচেয়ে বড় শিকার হন মোস্তাফিজুর রহমান। এই বাঁহাতি পেসার ইনিংসের পঞ্চম ওভারে চার-ছক্কায় হজম করেন ১৩ রান।

৬ ওভার শেষে ইংলিশদের সংগ্রহ দাঁড়ায় বিনা উইকেটে ৫১ রান। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে সল্ট ও বাটলার দুজনই সাজঘরে ফিরতে পারতেন। কিন্তু সুযোগ হাতছাড়া করে বাংলাদেশ। সল্টের সজোরে হাঁকানো শটে ফিরতি ক্যাচ লুফে নেওয়া বোলার নাসুম আহমেদের জন্য ভীষণ কঠিন ছিল। তাকে দায়ী করতে দুবার ভাবতে হলেও অধিনায়ক সাকিবকে কাঠগড়ায় তোলাই যায়। অবিশ্বাস্যভাবে তিনি মুঠোয় জমাতে পারেনি বাটলারের আকাশে তুলে দেওয়া বল।

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

দশম ওভারের শেষ বলে প্রথমবারের মতো ম্যাচে উইকেটের স্বাদ মেলে বাংলাদেশের। ছক্কায় ওড়ার এক বল পরই বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আনেন সাফল্য। তার বল সল্টের ব্যাটের নিচের কানায় লেগে জমা পড়ে উইকেটরক্ষক লিটন দাসের গ্লাভসে। সল্ট রিভিউ নিলেও পাল্টায়নি মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত। ৮০ রানের উদ্বোধনী জুটিতে তার অবদান ৩৫ বলে ৩৮ রান। তিনি মারেন ৪ চার ও ১ ছক্কা।

ক্রিজে ডাভিড মালানের স্থায়িত্ব দীর্ঘ হয়নি। সাকিবের দ্রুতগতির ডেলিভারিতে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে আউট হন তিনি। লং অনে ক্যাচ লুফে নেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ৭ বল খেলে ৪ রান আসে মালানের ব্যাট থেকে।

ধাক্কা সামলে একপ্রান্তে বাটলারের আগ্রাসন চলতে থাকে। হাসান মাহমুদকে ১৩তম ওভারে টানা ২ ছক্কায় সীমানাছাড়া করেন তিনি। সোজাসুজি মারা প্রথম ছক্কায় পূরণ করে ফেলেন হাফসেঞ্চুরি। সেজন্য তার লাগে মাত্র ৩২ বল। উইকেটে এসে বেন ডাকেটও চড়াও হন। বাহারি সব শটে বাউন্ডারি আনতে থাকেন এই বাঁহাতি। তরতর করে বাড়তে থাকে ইংলিশদের রান।

স্লোয়ারে ডাকেটকে বোল্ড করে ২৫ বলে ৪৭ রানের জুটি ভাঙেন মোস্তাফিজ। তিনি ৩ চারে ১৩ বলে করেন ২০ রান। পরের ওভারের প্রথম বলেই ফের উইকেট পাওয়ার তৃপ্তি মেলে বাংলাদেশের। বাটলারকে সাজঘরে পাঠান তার হাত আগে মার খাওয়া হাসানই। টাইমিংয়ে গড়বড় করে লং অনে শান্তর তালুবন্দি হন ইংল্যান্ড অধিনায়ক। ৪২ বলে সমান ৪ ছক্কা ও চারে তিনি করেন ৬৭ রান।

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

বাটলারকে ফেরানো ওভারটি ছিল ইনিংসের ১৭তম। তরুণ ডানহাতি পেসার হাসান ওই ওভারে দুর্দান্ত বোলিংয়ে দেন মাত্র ১ রান। মোস্তাফিজ পরের ওভারে দেন ৭ রান। আক্রমণে ফিরে নিজের শেষ ও ইনিংসের ১৯তম ওভারে হাসান খরচ করেন কেবল ৪ রান। পাশাপাশি নেন ধুঁকতে থাকা স্যাম কারানের উইকেট। ১১ বলে ৬ রান করে লং অনে শান্তকে ক্যাচ দেন তিনি।

শেষ ওভারে পেসার তাসকিন আহমেদ ৯ রান দিলেও নেন দেখা পান উইকেটের। প্রথম বলেই তার স্লোয়ারে স্টাম্প উপড়ে যায় ক্রিস ওকসের। ২ বলে ১ রান করেন তিনি। শেষ বলেও উইকেট পেতে পারতেন তাসকিন। ডিপ মিড উইকেটে মঈন আলির হাওয়ায় ভাসানো বল ধরে সীমানার বাইরে চলে যাওয়ার আগে ভেতরে ছুঁড়ে দেন শান্ত। তবে ঝাঁপিয়ে পড়েও তা হাতে জমাতে পারেননি রনি তালুকদার।

পাঁচে নেমে মঈন স্ট্রাইকে যাওয়ার তেমন সুযোগ পাননি। ৭ বলে ৮ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। ক্রিস জর্ডানের ব্যাট থেকে আসে ৩ বলে অপরাজিত ৫ রান। নজরকাড়া বল করা হাসান ২ উইকেট পান ২৬ রানে। সমান রান দিয়ে ১ উইকেট নেন সাকিব। উইকেটের স্বাদ নেন আক্রমণে যাওয়া বাকি তিন বোলার তাসকিন, মোস্তাফিজ আর নাসুমও।

Comments

The Daily Star  | English

The end of exemption?

TRIPS waiver end poses dual challenge: legal and technological

19h ago