রিয়ালকে আবার হারিয়ে শিরোপার সম্ভাবনা উজ্জ্বল করল বার্সেলোনা

ছবি: এএফপি

দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটের খেলা চলছিল তখন। সমতায় থাকা ম্যাচে ব্যবধান গড়ে দিলেন ফ্রাঙ্ক কেসিয়ে। তার শট জালে পৌঁছাতেই উল্লাসে ফেটে পড়ল গোটা ক্যাম্প ন্যু। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদকে আবার হারানোর স্বাদ নিল বার্সেলোনা। লা লিগার শিরোপা পুনরুদ্ধারের পথে তারা এগিয়ে গেল আরও এক ধাপ।

ঘরের মাঠে রোববার রাতে আসরের মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ২-১ গোল জিতেছে জাভি হার্নান্দেজের দল। পিছিয়ে পড়ার পর দারুণভাবে ঘুরে তারা আদায় করে নেয় পূর্ণ তিন পয়েন্ট।

রোনালদ আরাউহোর আত্মঘাতী গোলে শুরুর দিকে পিছিয়ে পড়ে বার্সা। প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে তাদেরকে সমতা ফেরান সার্জি রবার্তো। তার বদলি হিসেবে নেমে শেষদিকে জয়সূচক গোল করেন কেসিয়ে।

এই জয়ে লিগের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে নিজেদের অবস্থান আরও মজবুত করল বার্সেলোনা। ২৬ ম্যাচে তাদের অর্জন ৬৮ পয়েন্ট। তারা দুইয়ে থাকা রিয়ালের চেয়ে এগিয়ে আছে ১২ পয়েন্ট। আসরের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা সমান ম্যাচে পেয়েছে ৫৬ পয়েন্ট। দুই দলের মধ্যকার পয়েন্টের যে বড় ব্যবধান, তাতে লা লিগার শিরোপার লড়াই কার্যত শেষ বলা চলে। রিয়ালের পক্ষে এখনও কাগজে-কলমে বার্সাকে পেছনে ফেলা সম্ভব। তবে তেমন কিছু ঘটলে সেটা হবে বিস্ময়কর।

এই ম্যাচে ৫৪ শতাংশ সময় বল পায়ে রাখা বার্সা গোলমুখে শট নেয় ১৭টি। এর মধ্যে লক্ষ্যে ছিল সাতটি। অন্যদিকে, রিয়ালের নেওয়া ১১টি শটের তিনটি ছিল লক্ষ্যে।

প্রথম মিনিটেই সুযোগ আসে রিয়ালের ফরাসি স্ট্রাইকার করিম বেনজেমার সামনে। তার শট রুখে দিতে বেগ পেতে হয়নি জার্মান গোলরক্ষক মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেনের। দুই মিনিট পর প্রতিপক্ষের রক্ষণে ভীতি ছড়ায় বার্সেলোনা। পোলিশ স্ট্রাইকার রবার্ত লেভানদভস্কির ডি-বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শট ঠেকান গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়া। তিন মিনিট পর রাফিনহার হেডও তাকে পরাস্ত করতে পারেনি। ফিরতি বলে রবার্তোর শট চলে যায় ক্রসবারের সামান্য উপর দিয়ে।

ধারার বিপরীতে নবম মিনিটে এগিয়ে যায় রিয়াল। ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের ক্রস আরাউহোর মাথায় লেগে জালে জড়ায়। বল গোললাইন অতিক্রম করা আটকাতে পারেননি টের স্টেগেন।

সমতায় ফেরার জন্য আক্রমণের ধারা বজায় রাখে কাতালানরা। ২৪তম মিনিটে রাফিনহার ক্রসে আন্দ্রেয়াস ক্রিস্টিয়ানসেনের হেড লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। আট মিনিট পর ফের চেষ্টা চালান ডেনিশ ডিফেন্ডার। ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ংয়ের ক্রসে কাছের পোস্টে ক্রিস্টিয়ানসেনের ফ্লিক ঠেকান কোর্তোয়া। দুই মিনিট পর ঝাঁপিয়ে পড়ে রাফিনহাকেও হতাশায় পোড়ান তিনি।

৪৫তম মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা মেলে স্বাগতিকদের। রিয়ালের ডি-বক্সে জটলার মধ্যে তাদের একাধিক শট প্রতিহত হওয়ার পর রবার্তোর পায়ে যায় বল। স্প্যানিশ মিডফিল্ডারের শট ফিরিয়ে এবার আর ত্রাতা হতে পারেননি বেলজিয়ান কোর্তোয়া।

বিরতির পর একই ছন্দে খেলতে থাকে বার্সেলোনা। ৫৯তম মিনিটে ডাচ মিডফিল্ডার ডি ইয়ংয়ের পাসে লেভানদভস্কির শট একটুর জন্য থাকেনি লক্ষ্যে। রিয়ালও ফাঁকে ফাঁকে সুযোগ তৈরি করতে থাকে। চার মিনিট পর প্রতিপক্ষের ভুলে বল পেয়ে যান এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা। তার পাস পেয়ে ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার রদ্রিগোর নেওয়া শট বিপজ্জনক হয়নি।

৬৭তম মিনিটে লেভানদভস্কির অ্যাক্রোব্যাটিক প্রচেষ্টা বাজেভাবে ব্যর্থ হয়। সাত মিনিট পর ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড রাফিনহার শট ফের রুখে দেন কোর্তোয়া। ৭৯তম মিনিটে বড় বাঁচা বেঁচে যায় বার্সা। নিজেদের ডি-বক্সে জুলস কুন্দে বাজে পাসে বল তুলে দেন বেনজেমার পায়ে। তবে সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করে আক্ষেপ জাগান বেনজেমা।

বদলি নামা মার্কো আসেনসিও দুই মিনিট পর রিয়ালের হয়ে লক্ষ্যভেদ করলেও তাদের উদযাপন স্থায়ী হয়নি। অফসাইডের কারণে বাতিল হয় সেই গোল। এরপর উল্টো বার্সা মাতোয়ারা হয় উল্লাসে। যোগ করা সময়ে আলেহান্দ্রো বালদে ডি-বক্সে খুঁজে নেন কেসিয়েকে। অরক্ষিত অবস্থা থেকে ডান পায়ের নিচু শটে জাল কাঁপান তিনি।

এই নিয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা তিনটি এল ক্লাসিকোয় রিয়ালকে হারাল বার্সেলোনা। স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালের পর চলতি মাসের শুরুতে কোপা দেল রের সেমিফাইনালের প্রথম লেগেও তারা জিতেছিল। আসন্ন আন্তর্জাতিক বিরতির পর ঘরের মাঠে দ্বিতীয় লেগে কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যদের মোকাবিলা করবে তারা।

Comments

The Daily Star  | English

How Dhaka’s rickshaw pullers bear a hidden health toll

At dawn, when Dhaka is just beginning to stir, thousands of rickshaw pullers set off on their daily grind.

17h ago