বৈশাখে স্বাচ্ছন্দ্যের সাজ

ছবি: সাজ্জাদ ইবনে সাঈদ

নতুন প্রত্যাশা বুকে নিয়ে বাংলা নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়াটা বাঙালির কাছে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। তাই ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সবার উৎসব পহেলা বৈশাখ। বিশেষ এই দিনে সবাই চায় নিজেকে লাগুক একটু পরিপাটি।

কেমন সাজপোশাক থাকতে পারে এবারের বৈশাখে, চলুন জেনে নিই।

বৈশাখের পোশাক

উৎসব-পার্বণে রঙিন সাজপোশাক তো থাকবেই। সাদা-লাল তো থাকছেই, বিভিন্ন মোটিফের পোশাকে এখন যুক্ত হয়েছে কমলা, মেরুন বা গাঢ় কোনো রং। এদিনে বাঙালিয়ানা পোশাক রাখতে পছন্দ করেন বেশিরভাগ মানুষ। তবে ওয়েস্টার্ন বা সেমি ওয়েস্টার্নসহ অন্যান্য পোশাকও পরতে দেখা যায়। এসব পোশাকের সঙ্গে রাখা যায় ছোট একটি লাল টিপ কিংবা লাল লিপস্টিক। এতেও প্রকাশ পাবে বৈশাখের আমেজ।

বৈশাখের মেকওভার

গরম ও ঝড়-বৃষ্টির বিষয়টা মাথায় রেখে হালকা বেইজ মেকআপ করা যায়। হালকা বেইজ অনেকক্ষণ পর্যন্ত ভালো থাকে। চোখের সাজে থাকতে পারে ব্রাউন শেড ও আইলাইনার। শাড়ি পরলে গাঢ় টানা কাজল ও আইলাইনারেও সাজানো যায় নিজেকে।

রিটাচ করে নিতে ফেস পাউডার বা কম্প্যাক্ট পাউডার রাখতে পারেন সঙ্গে। তবে সাজসজ্জায় কোথাও লালের আধিক্য যাতে না থাকে সেদিকেও খেয়াল রাখা প্রয়োজন।

গাঢ় পোশাকের সঙ্গে ন্যুড লিপস্টিক সুন্দর ও মানানসই। রাখতে পারেন পিংক, মভ, মাঝারি শেডের কোনো পিংক (রোজ পিংক, স্যামন পিংক, ভিন্টেজ পিংক) বা পিচ শেড।

আর ছেলেদের সাজের পুরোটা মূলত পোশাকেই হয়ে যায়! সুতি বা সিল্কের একটি সুন্দর রঙের পাঞ্জাবি বা ফতুয়ার সঙ্গে পায়জামা, ধুতি বা জিন্স পরতে পারেন।

তবে সারাদিন রোদে থাকতে হবে বলে ত্বকের যত্নে কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া যাবে না। ত্বক যেন রোদে পুড়ে না যায় সেজন্য ব্যবহার করতে হবে সানস্ক্রিন।

শাড়ির সঙ্গে খোলা চুলে ফুলের সাজের কোনো তুলনাই হয় না। কিন্তু অস্বস্তিকর গরমে চুল বেঁধে রাখা ছাড়াও যেন উপায় নেই। খোঁপায় গুঁজে নিতে পারেন রঙিন কোনো ফুল। নাহলে অন্তত হাতে জড়ানো থাকতে পারে ফুলের মালা। এতে অনেক বেশি সতেজ ও স্নিগ্ধ লাগে।

সাদা রঙের ফুল যে কোনো পোশাকের সঙ্গেই মানানসই। লাল টিপের সঙ্গে লাল রঙ্গন, গোলাপ, জবা, গ্ল্যাডিওলাস, জারবেরা পরলেও ভালো লাগবে। সেই সঙ্গে চুলে করে নিতে পারেন খোপা, পনিটেইল, ফ্রেঞ্চরোল কিংবা ডোনাট বান।

জুতা

পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে জুতা বাছাই করাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু সারাদিন গরম থাকতে পারে, তাই পা যেন ঘেমে না যায় বাছাই করতে হবে তেমন জুতা। ছেলেরা এ সময় স্লিপার পরতে পারেন। তাহলে পা ঘেমে যাওয়ার আশঙ্কা থাকবে না। এই দিনে বেশি হাঁটাহাঁটি হয় তাই মজবুত অল্প হিলের জুতা বা স্লিপার পরতে পারেন নারীরা।

গয়না

এদিন শাড়ির সঙ্গে মাটির গয়না বেছে নিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন নারীরা। এছাড়াও কাঠ, রুপা, মুক্তা বা তামার মালাও পরতে পারেন। ভারী গয়না পরতে না চাইলে ফুলের মালা বেছে নিতে পারেন।

এ ছাড়া মাদুলি ও হাঁসুলি বা অ্যান্টিকের গলার মালাও পরেন নারীরা। কাঁচের চুড়ির মতো অনেকে প্রাধান্য দেন অ্যান্টিকের চুড়িকেও। আর নানা রকম টপসের সঙ্গে তরুণীরা বেছে নেন কাঠ, বাঁশ, বেত ও নানা রকম বিডসের গয়না।

দোয়েল চত্বর, টিএসসির মোড়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি ভবনের পাশে,  চারুকলার সামনে রয়েছে কাঠ, মাটির গয়না আর কাঁচের চুড়ির সম্ভার। এ ছাড়াও বিভিন্ন বুটিক হাউজ ও অনলাইনেও ব্যতিক্রমধর্মী ডিজাইনের গয়না পাওয়া যাবে।

তবে সবমিলিয়ে উৎসবের এই দিনে আপনার পছন্দটাই মুখ্য। অন্যদের থেকে একটু আলাদা হয়ে, স্বাচ্ছন্দ্যের সাজে উপভোগ করুন বছরের প্রথম এই দিনটি। বৈশাখের আগমন বাংলা নতুন বছরের সঙ্গে সবার জন্য নিয়ে আসুক মঙ্গলবার্তা ও সমৃদ্ধি।

Comments

The Daily Star  | English

A transitional budget for troubled times

Govt signals people-centric priorities but faces tough trade-offs

3h ago