বাবার সাক্ষ্য গ্রহণের ভেতর দিয়ে মিতু হত্যা মামলার বিচার শুরু

মাহমুদা খানম মিতু। ফাইল ছবি

মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দিতে এসে তার বাবা সাবেক পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেছেন, 'বাবুল আক্তারের সঙ্গে এক মহিলার বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্কের কথা জানতে পেরেই আমার নিষ্পাপ মেয়েকে নিজ সোর্স দিয়ে খুন করিয়েছে সে।'

আজ রোববার তৃতীয় অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ জসীম উদ্দিনের আদালতে প্রথম সাক্ষী হিসেবে মোশাররফ হোসেনের জবানবন্দি রেকর্ড করার ভেতর দিয়ে আলোচিত এই মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার কার্যক্রম শুরু হলো।

সাক্ষ্য দিতে গিয়ে মোশাররফ বলেন, 'আমি তার (বাবুল আক্তার) বিচার চাই।'

আদালতে সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী গোলাম মওলা মুরাদ এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আবদুর রশিদ।

মামলার জবানবন্দি রেকর্ড করার আগে বাবুলের আইনজীবীরা আদালতকে জানান, তারা মামলার চার্জ গঠনের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন করেছেন। তাই এই মুহূর্তে সাক্ষ্য গ্রহণের সুযোগ নেই।

এতে আপত্তি জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা। এ বিষয়ে ৪৫ মিনিট শুনানির পর মিতুর বাবার জবানবন্দি রেকর্ড করার নির্দেশ দেন আদালত। এরপর ৩ ঘণ্টা আদালতে সাক্ষ্য দেন তিনি।

মোশাররফ হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'খুনের আগে বাবুলের কাজগুলো সম্পর্কে আমি আদালতকে বিস্তারিত জানিয়েছি। পরকীয়া করার পর সে আমার মেয়ের সঙ্গে কেমন আচরণ করেছিল, কীভাবে তার নির্যাতনের শিকার হয়েছে আমার মেয়ে, তা বলেছি আদালতে। বাবুলের অবৈধ সম্পর্কের কথা জানতে পেরে সে মিতুকে হত্যা করে।'

এর আগে গত ১৩ মার্চ মিতু হত্যা মামলায় বাবুলসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এর অন্য আসামিরা হলেন- কামরুল ইসলাম মুসা, এহতেশামুল হক ভোলা ওরফে হানিফুল হক, মোতালেব মিয়া ওয়াসিম, মোঃ আনোয়ার হোসেন, মোঃ খায়রুল ইসলাম কালু ও মোঃ শাহজাহান মিয়া। এদের মধ্যে ভোলা এখন জামিনে এবং মুসা হত্যাকাণ্ডের পর থেকে পলাতক আছেন।

২০১৬ সালের ৫ জুন ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে চট্টগ্রাম নগরের জিইসি এলাকায় বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানমকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়। পরদিন বাবুল  বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

তদন্ত শেষে পিবিআই ২০২১ সালের ১২ মে এ মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। ওই দিনই বাবুলের শ্বশুর পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় বাবুলসহ ৮ জনকে আসামি করা হয়। এ মামলায় গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর বাবুল আক্তারসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পিবিআই।

পিবিআই কর্মকর্তারা জানান, বাবুল কক্সবাজারে অতিরিক্ত এসপি হিসেবে থাকাকালে এক নারীর সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন এবং সেই সম্পর্কের জের ধরে তিনি ভাড়াটে খুনি দিয়ে মিতুকে খুন করান।

Comments

The Daily Star  | English

Why landscape-based knowledge is critical for Bangladesh

How will we build the country without landscaping knowledge?

14h ago