চিকিৎসায় খালেদা জিয়া মোটামুটি রেসপন্স করছেন: এ জেড এম জাহিদ

২৯ এপ্রিল বিকেল ৫টার দিকে হাসপাতালে পৌঁছান খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের কেবিনে চিকিৎসকদের 'নিবিড় পর্যবেক্ষণে' খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলছে বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন। তিনি বলেছেন, 'চিকিৎসায় খালেদা জিয়া মোটামুটি রেসপন্স করছেন।'

আজ রোববার বিএনপি চেয়ারপারসনের স্বাস্থ্যের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে গণমাধ্যমকে এ কথা জানান তিনি।

অধ্যাপক জাহিদ হোসেন বলেন, 'ম্যাডাম কেবিনে চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধায়নে নিবিড় পর্যবেক্ষণে আছেন। গতকালকের চেয়ে আজকে ওনার অবস্থা একই মতো আছে। বাট যে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে তাতে ওনার কিছুটা উন্নতি হচ্ছে।'

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে তার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুসারে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এখন এই হাসপাতালের বিশেষ চিকিৎসক অধ্যাপক সাহাবুদ্দিন তালুকদারের তত্ত্বাবধায়নে তিনি চিকিৎসাধীন আছেন। অধ্যাপক সাহাবুদ্দিনের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে গঠিত একটি মেডিকেল বোর্ড আগে থেকেই তার এই চিকিৎসা কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত আছেন। গতকাল ভর্তি হওয়ার পর মেডিকেল বোর্ডের একটি বৈঠক হয়েছে বলেও জানান অধ্যাপক জাহিদ।

তিনি বলেন, 'গতকাল ভর্তি হওয়ার পর ম্যাডামের বেশি কিছু পরীক্ষা মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শক্রমে করা হয়েছে। ওইসব পরীক্ষার রিপোর্ট আসা শুরু করেছে। মেডিকেল বোর্ড আজ (রোববার) সন্ধ্যায় কোনো একটা সময়ে বসবে এবং রিপোর্টগুলো পর্যালোচনা করে ওনার পরবর্তী পর্যায়ে যে চিকিৎসা দেওয়া প্রয়োজন তা করবেন।'

এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক বলেন, 'ওনার কিছু অসুস্থতা ছিলো…যার জন্যে নিয়মিত চেকআপের পাশাপাশি কিছু উপসর্গ দেখা দিয়েছিল, যার জন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সে অনুযায়ী তাকে এখানে নিয়মিত চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সেই চিকিৎসাতে উনি মোটামুটি রেসপন্স করছেন।'

খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে কয়দিন রাখা হতে পারে জানতে চাইলে অধ্যাপক জাহিদ বলেন, 'এটা মেডিকেল বোর্ডের ডিসিশনের ওপর নির্ভর করবে, ওনার শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করবে। কাজেই এই মুহুর্তে কিছু বলা যাচ্ছে না।

৭৭ বছর বয়সী বিএনপি চেয়ারপারসন দীর্ঘদিন ধরে আর্থাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি ও লিভারসহ নানা রোগে ভুগছেন। অসুস্থতার মধ্যে গুলশানের 'ফিরোজা'য় চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষনে তার চিকিৎসা চলছিল।

বর্তমানে খালেদা জিয়ার শারীরিক সমস্যাগুলো সম্পর্কে জানতে চাইলে অধ্যাপক জাহিদ হোসেন বলেন, 'রোগীর অসুস্থতা সম্পর্কে মিডিয়াতে বলা ঠিক না। খালি এইটুকু জানানো যেতে পারে যে, ওনার কিছু শারীরিক অসুস্থতা, উনার হার্টের জটিলতা, উনার লিভারের জটিলতা, উনার কিডনির জটিলতা– এগুলো ছিলো, আছে…আপনার জানেন। সেগুলোর কোনো কোনোটা একটু বৃদ্ধি পেয়েছিল। সেজন্য ওনার চেকআপ ও চিকিৎসার জন্য ওনাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'উনি কেবিনেই আছেন। কিন্তু কেবিনে ওনার জন্য স্পেশালিস্ট এমআইএসটি নার্স-ডাক্তার সাহেবরা… দে আর টেকিং কেয়ার অফ। কেবিনে মানে এমনি শুয়ে থাকার তা না। সি ইজ আন্ডার স্ট্রিক সুপারভেশন।'

জাহিদ হোসেন জানান, অধ্যাপক সাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে মেডিকেল বোর্ডের অন্য বিশেষজ্ঞ চিকিতসকরা হচ্ছেন- অধ্যাপক এ ফএম সিদ্দিকী, অধ্যাপক নুর উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক শামসুল আরেফিন, অধ্যাপক এ কিউ এম মহসিন, অধ্যাপক শেখ ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক জিয়াউল হক এবং অধ্যাপক সাদেকুল ইসলাম।

এছাড়া লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানসহ অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বিএনপি চেয়ারপারসনের মেডিকেল বোর্ডে আছেন বলে জানান তিনি।

এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়াকে সার্বক্ষনিক দেখাশুনা করছেন প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি।

এর আগে সর্বশেষ গত ২৭ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন এভারকেয়ার হাসপাতালে যান।

Comments

The Daily Star  | English
cyber security act

A law that gagged

Some made a differing comment, some drew a political cartoon and some made a joke online – and they all ended up in jail, in some cases for months. This is how the Digital Security Act (DSA) and later the Cyber Security Act (CSA) were used to gag freedom of expression and freedom of the press.

7h ago