শঙ্কা উড়িয়ে জিতে শীর্ষস্থান মজবুত করল সিটি

ছবি: এএফপি

প্রথমার্ধের দুই লক্ষ্যভেদে অনায়াস জয়ের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছিল ম্যানচেস্টার সিটি। কিন্তু ইল্কাই গুন্দোয়ান হ্যাটট্রিকের সুযোগ হাতছাড়া করার পরপরই গোল হজম করে বসল তারা। তাতে উত্তেজনা ছড়ালেও আর কোনো বিপদ ঘটতে দিল না দলটি। লিডস ইউনাইটেডকে হারিয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষস্থান মজবুত করল পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা।

শনিবার রাতে ঘরের মাঠ ইতিহাদ স্টেডিয়ামে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে ২-১ গোলে জিতেছে সিটিজেনরা। স্বাগতিকদের পক্ষে জোড়া গোল করেন অধিনায়ক ও জার্মান মিডফিল্ডার গুন্দোয়ান। দ্বিতীয়ার্ধের শেষদিকে তিনি পেনাল্টি মিস করার পর লিডসের হয়ে জাল খুঁজে নেন রদ্রিগো।

এই জয় শিরোপা ধরে রাখার অভিযানে থাকা সিটির জন্য দারুণ একটি ফল। প্রিমিয়ার লিগের মাত্র চার ম্যাচ বাকি থাকতে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আর্সেনালের চেয়ে তারা এগিয়ে আছে ৪ পয়েন্ট। ৩৪ ম্যাচে তাদের অর্জন ৮২ পয়েন্ট। সমান ম্যাচে দুইয়ে থাকা গানারদের পয়েন্ট ৭৮।

৮১ শতাংশ সময়ে বল পায়ে রাখা ম্যান সিটি গোলমুখে শট নেয় ১৮টি। এর মধ্যে লক্ষ্যে ছিল ছয়টি। এসব পরিসংখ্যানে ফুটে ওঠে ম্যাচে কতটা দাপট ছিল তাদের। অন্যদিকে, সফরকারীদের নেওয়া মাত্র চারটি শটের দুটি ছিল লক্ষ্যে। তারপরও শেষদিকে ব্যবধান কমিয়ে তারা লড়াইয়ে বেশ রোমাঞ্চ তৈরি করে।

শুরু থেকেই লিডসের রক্ষণে ভয় ধরানো স্বাগতিকরা ১৯তম মিনিটে পায় লিড। আলজেরিয়ান উইঙ্গার রিয়াদ মাহরেজের স্কয়ার পাসে ডান দিকের পোস্ট দিয়ে জাল কাঁপান গুন্দোয়ান। নিখুঁত ছিল তার ডান পায়ের শটটি। নড়ারও সুযোগ পাননি প্রতিপক্ষের গোলরক্ষক জোয়েল রোবলেস। আট মিনিট পর ফের মাহরেজ ও গুন্দোয়ানের রসায়নে ব্যবধান দ্বিগুণ করে সিটি। এবার ডি-বক্সের প্রান্তে গুন্দোয়ানকে খুঁজে নেন মাহরেজ। তিনি প্রথম ছোঁয়ায় বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বাম দিকের পোস্ট ঘেঁষে গোল করেন।

বিরতির আগে দারুণ কিছু সুযোগ আসে গার্দিওলার দলের। সেগুলো কাজে লাগাতে পারলে প্রথমার্ধেই চার-পাঁচ গোলের ব্যবধানে এগিয়ে যেতে পারত তারা। ১৬তম মিনিটে হুলিয়ান আলভারেজ ফাঁকায় থেকেও বল ক্রসবারের অনেক উপর দিয়ে উড়িয়ে মারেন। ২২তম মিনিটে মাহরেজের হাফ ভলি জালের উপরের অংশে পড়ে। দুই মিনিট পর কেভিন ডি ব্রুইনের পাসে আর্লিং হালান্ডের শট সামান্যের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৩২তম মিনিটে আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার আলভারেজের শট রুখে তাকে হতাশ করেন রোবলেস।

লিডসও সম্ভাবনা জাগিয়েছিল। ২৯তম মিনিটে ম্যাচে নিজেদের প্রথম কর্নার পায় তারা। ওয়েস্টন ম্যাককিনির জোরালো হেড মাটিতে পড়ে জালের দিকেই যাচ্ছিল। দারুণ তৎপরতায় সেটা রুখে দেন সিটির ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক এদারসন।

দ্বিতীয়ার্ধেও একই ধাঁচ বজায় রাখা স্বাগতিকরা ৫৩তম মিনিটে গোল পেতে পারত। আলভারেজের ক্রসে নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার হালান্ডের হেড লুফে নেন গোলরক্ষক। নয় মিনিট পর ভীষণ আক্ষেপে পুড়তে হয় তাকে। গত ম্যাচে প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসের এক মৌসুমে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড গড়া হালান্ডের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ায় ক্রসবার। ৭২তম মিনিটে মাহরেজের নিচু ফ্রি-কিক গোললাইন থেকে ফেরান রোবলেস।

৮৩তম মিনিটে ফিল ফোডেন ডি-বক্সে ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টি পায় সিটি। তবে হালান্ড নয়, স্পট-কিক নিতে এগিয়ে যান হ্যাটট্রিকের সুবাস পাওয়া গুন্দোয়ান। তার শটে রোবলেস পরাস্ত হলেও বল পোস্টে লেগে ফিরে আসে। ৮৫তম মিনিটে গোল খেয়ে বসে আসরের শিরোপাধারীরা। মানুয়েল আকাঞ্জি বল বিপদমুক্ত করতে ব্যর্থ হলে ডি-বক্সের প্রান্তে তা পেয়ে যান রদ্রিগো। তিনি এদারসনকে ফাঁকি দিয়ে নিশানা ভেদ করেন।

বাকিটা সময়ে নিজেদের রক্ষণভাগ ভালোভাবেই সামাল দেয় ম্যান সিটি। ব্যবধান আর বাড়াতে না পারলেও এক গোলের লিড ধরে রাখে তারা। আর শেষ বাঁশি বাজলে নিশ্চিত হয় তাদের পূর্ণ পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়া।

Comments