সরকারের সময় কবে শেষ—বিএনপির কাছে জানতে চান ওবায়দুল কাদের

আমি আওয়ামী লীগের জেনারেল সেক্রেটারি বিএনপি মহাসচিবের কাছে জানতে চাই, সময়টা কত? কয়দিন আর সময় পাব? দিন-ক্ষণটা একটু বলুন, ১০ বছর ধরে তো শুনতে পাচ্ছি।
বক্তব্য রাখছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, 'সরকারের সময়টা কবে শেষ?'

তিনি বলেন, 'ফখরুল সাহেব, কবে সময় শেষ? বলেন না কেন! ক্ষণ-তারিখ, দিন বলেন। সময় বলেন, আমরা একটু তৈরি হই। কীভাবে ঝড় আসে, ঠাকুরগাঁও থেকে না লন্ডন থেকে আসে—কোথায় থেকে ঝড় আসবে সেটা বলে দেন, কত নম্বর বিপৎসংকেত তাও বলে দেন। সরকারকে বিদায় দেবেন সরকারের তো একটা প্রস্তুতি আছে।'

আজ শনিবার দুপুরে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগের প্রথম ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

কাদের বলেন, 'বিক্ষোভ সমাবেশ, পদযাত্রা, অবস্থান, মানববন্ধন একে একে কত কর্মসূচি দিলেন। কী হলো? সরকারের সময়টা কবে শেষ? প্রতিদিনই বলছে সরকারের সময় শেষ। আমি আওয়ামী লীগের জেনারেল সেক্রেটারি বিএনপি মহাসচিবের কাছে জানতে চাই, সময়টা কত? কয়দিন আর সময় পাব? দিন-ক্ষণটা একটু বলুন, ১০ বছর ধরে তো শুনতে পাচ্ছি।'

'এই সরকারের সময় কত এটা জানেন মহান সৃষ্টিকর্তা। সময় কত এটা জানে এ দেশের জনগণ। এই সরকারের পরিবর্তন হবে কি না সেটা নির্ধারণ করবে বাংলাদেশের জনগণ এবং আল্লাহ পাক,' বলেন তিনি।

বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, 'বিএনপি আসছে সরকার পতনের আন্দোলন নিয়ে, আমরা আছি জনগণের জানমাল রক্ষার আন্দোলন নিয়ে। জনগণের জানমাল রক্ষায় আমাদের আজ শান্তি সমাবেশ করতে হচ্ছে। আমরা সন্ত্রাস চাই না, আমরা শান্তি চাই। আমরা সাম্প্রদায়িকতা চাই না, আমরা চাই অসাম্প্রদায়িক মানবতা বোধ।'

ছোট ছোট দেশগুলো গরিব দেশের সাধারণ মানুষ কষ্ট পাচ্ছে বিশ্বে যুদ্ধের মতো সংকটের কারণে মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'করোনা সামলাতে না-সামলাতে যুদ্ধ বেধে গেল রাশিয়া-ইউক্রেনে। নিষেধাজ্ঞা-পাল্টা নিষেধাজ্ঞা, লাফিয়ে লাফিয়ে জ্বালানি-ডলারের মূল্যবৃদ্ধি। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি...আজকে বিদেশ থেকে আমাদের আনতে হয় অনেক বেশি দাম দিয়ে। সেটা (আমদানি) একটু কমাতে গেলে, বেশি কমাতে গেলে দেশের মানুষ কষ্ট পাবে।'

তিনি বলেন, 'কাজেই মানুষের কথা ভেবে যে দামে আমরা কিনি সেই দামে আমরা বিক্রি করতে পারি না। বাজাতে দিতে পারি না। গরিব মানুষ কষ্টে থাকে। আমরা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছেছি, সেই বিদ্যুৎ আজকে জ্বালানি সংকটের কারণে...গ্যাসের সংকট মাঝে মাঝে হয়। এসব কারণে আমরা মানুষের চাহিদা মেটাতে সম্পূর্ণভাবে আজকে সফল এই কথা বলার কোনো উপায় নেই।'

আজকে শেখ হাসিনার মতো নেত্রী আছেন বলে বাংলাদেশ এখনো অনেক বড় বড় দেশের চেয়েও ভালো আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'শেখ হাসিনা সৎ, আজকে বাংলাদেশের একটি দল তাকে নিয়ে প্রশ্ন করে, অপপ্রচার, মিথ্যাচার করে। একটি দল বিএনপি ও তার দোসররা অথচ সারা দুনিয়া শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে। এই সংকটে এত কষ্টের মধ্যেও সাধারণ মানুষ মনে করে শেখ হাসিনা আছে বলে বাংলাদেশ পথ হারাবে না।'

'কারণ এই বাংলাদেশের জন্য তিনি রাত জাগেন। মানুষের জন্য তিনি রাত জাগেন। ৩ ঘণ্টা, সাড়ে ৩ ঘণ্টা ঘুমান। কে আছে এই দেশে, বঙ্গবন্ধুকন্যা ছাড়া? বিদেশে যায় দেশের জন্য, পকেটের উন্নয়নের জন্য নয়। ছেলে-মেয়েরা চাকরি করে, হাওয়া ভবন করেননি শেখ হাসিনা। তার ছেলে-মেয়ে এখানে ব্যবসা করে না,' মন্তব্য করেন তিনি।

সংকট থেকে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'নালিশ করার জন্য শেখ হাসিনা বিদেশে যাননি। গেছেন বাজেট সহায়তার জন্য। বিশ্বব্যাংক দাওয়ার করে নিয়ে ঋণ দিয়েছে। জাপান দাওয়াত করে নিয়ে গেছে, আমরা দায়ে পড়ে যাইনি। আমাদের নেত্রী দরবার করার জন্য কোথাও যাননি। তিনি গেছেন দেশের স্বার্থে, ঋণ এনেছেন দেশের জন্য।'

Comments