কুমিরের মুখ থেকে যেভাবে বাঁচলেন

কেনেডি নদীতে একটি অতিকায় কুমীরের দেহের অভ্যন্তরে ৬৫ বছর বয়সী জেলে কেভিন দারমোদির মরদেহের অংশবিশেষ খুঁজে পাওয়া যায়। ছবি: এএফপি
কেনেডি নদীতে একটি অতিকায় কুমীরের দেহের অভ্যন্তরে ৬৫ বছর বয়সী জেলে কেভিন দারমোদির মরদেহের অংশবিশেষ খুঁজে পাওয়া যায়। ছবি: এএফপি

অস্ট্রেলিয়ার এক নাগরিককে নোনাপানির কুমির আক্রমণ করা সত্ত্বেও তিনি প্রাণ নিয়ে বেঁচে ফিরেছেন। অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড অঙ্গরাজ্যে এক অবকাশকেন্দ্রের পাশে সাগরে ডুব দেওয়ার সময় তিনি কুমিরের মুখে পড়েন।

আজ মঙ্গলবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে ৫১ বছর বয়সী মার্কাস ম্যাকগোয়ানের অভিজ্ঞতা তুলে ধরা হয়েছে।

ম্যাকগোয়ান জানান, তিনি কেপ ইয়র্কের কাছাকাছি হ্যাগারস্টোন দ্বীপ থেকে প্রায় ২৮ কিলোমিটার দূরে অন্যদের সঙ্গে পানিতে নামেন। সেসময় তিনি টের পান, কোনো একটি প্রাণী পেছন থেকে তার মাথায় কামড় বসিয়েছে।

'আমি ভেবেছিলাম এটি হাঙ্গর। কিন্তু যখন উপরে তাকালাম, বুঝতে পারলাম এটি কুমির। আমি কোনো মতে হাত দিয়ে তার চোয়াল ২টি ফাঁক করে আমার মাথা বের করে আনতে সক্ষম হই,' যোগ করেন মার্কাস।

ধারণা করা হচ্ছে, কুমিরটির বয়স বেশি ছিল না। বাধা পেয়ে কুমিরটি আবারো এগিয়ে আসে। তখন তিনি কুমিরটিকে সরিয়ে দিতে সক্ষম হন। সে সময় কুমিরটি তার হাতে কামড় দেয়।

ম্যাকগোয়ানকে উদ্ধার করে উড়োজাহাজে এনে পার্শ্ববর্তী হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এরপর পরবর্তী চিকিৎসা জন্য তাকে কেয়ার্নসে পাঠানো হয়।

কুইন্সল্যান্ডের পরিবেশ বিভাগ জানিয়েছে, তারা বিষয়টি তদন্ত করবে, তবে 'খোলা সাগরে সুনির্দিষ্ট করে কোনো একটি কুমিরকে চিহ্নিত করা খুবই ঝামেলাপূর্ণ। কারণ, এসব প্রাণী পানিতে দৈনিক প্রায় ১০ বা এরচেয়েও বেশি কিলোমিটার ভ্রমণ করে থাকে।'

অস্ট্রেলিয়ার উত্তরাঞ্চলে কুমিরের অবাধ বিচরণ থাকলেও মানুষের ওপর হামলা চালানোর ঘটনা খুবই বিরল। তবে গত কয়েক মাসে একাধিক হামলার কথা শোনা গেছে।

১৯৭৪ সালে কুমির শিকার নিষিদ্ধের পর সেসময়ের ৫ হাজার থেকে বেড়ে আজ এই অঙ্গরাজ্যে কুমিরের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার। ছবি: এএফপি
১৯৭৪ সালে কুমির শিকার নিষিদ্ধের পর সেসময়ের ৫ হাজার থেকে বেড়ে আজ এই অঙ্গরাজ্যে কুমিরের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার। ছবি: এএফপি

গত ফেব্রুয়ারিতে একটি সাড়ে ১৩ ফুট লম্বা কুমির এক ব্যক্তির ওপর হামলা চালায় এবং তার পোষা কুকুরকে খেয়ে ফেলে। ঘটনাটি ঘটেছিল কেয়ার্নসের উত্তরে এক প্রত্যন্ত অঞ্চলে। বনরক্ষী বা রেঞ্জাররা গুলি করে সেই কুমিরটিকে হত্যা করেন।

এ মাসের শুরুতে নিকটবর্তী কেনেডি নদীতে আরেকটি অতিকায় কুমিরের দেহের ভেতরে ৬৫ বছর বয়সী জেলে কেভিন দারমোদির মরদেহের অংশবিশেষ খুঁজে পাওয়া যায়।

এটা ছিল ১৯৮৫ সালের পর কুইন্সল্যান্ডে ১৩তম কুমির হামলার ঘটনা। এতে অন্তত ১ জন মারা গেছেন।

কুইন্সল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের নীতিমালা অনুযায়ী, 'সমস্যা সৃষ্টিকারী কুমিরগুলোকে' জননিরাপত্তার ওপর হুমকি আসতে পারে এরকম জায়গা থেকে সরিয়ে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। নিরুপায় পরিস্থিতিতে তাদেরকে ব্যথাহীন মৃত্যুও দেওয়া হয়।

১৯৭৪ সালে কুমির শিকার নিষিদ্ধের পর সেসময়ের ৫ হাজার থেকে বেড়ে আজ এই অঙ্গরাজ্যে কুমিরের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার।

 

Comments

The Daily Star  | English
cyber security act

A law that gagged

Some made a differing comment, some drew a political cartoon and some made a joke online – and they all ended up in jail, in some cases for months. This is how the Digital Security Act (DSA) and later the Cyber Security Act (CSA) were used to gag freedom of expression and freedom of the press.

5h ago