ডলার সাশ্রয়ে খাদ্যশস্য আমদানি কমাচ্ছে সরকার

ডলার, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, খাদ্য অধিদপ্তর, খাদ্যশস্য,
সুবিধাভোগীদের মাঝে খোলা বাজারে চাল বিক্রি করা হচ্ছে। স্টার ফাইল ফটো

ডলার সাশ্রয় এবং বৈদেশিক মুদ্রার মজুতের ওপর চাপ কমাতে আগামী অর্থবছরে খাদ্যশস্য আমদানি কমানোর পরিকল্পনা করেছে সরকার।

খাদ্য অধিদপ্তর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ৫ লাখ টন চাল ও ৬ লাখ টন গম কিনবে। এখান থেকে নিম্নআয়ের মানুষের মাঝে ভর্তুকিতে বিক্রয়সহ বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পে বিতরণ করা হবে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাজেট নথি অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ৯ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির চেয়ে এবার চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা ৪৪ শতাংশ কম।

এই হিসাব অনুযায়ী, শস্য ক্রয়ের বরাদ্দ ২০২২-২৩ অর্থবছরের ৪ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকা থেকে কমিয়ে ২ হাজার ৫৯২ কোটি টাকায় রাখা হয়েছে। গমের ক্ষেত্রে সরকার চলতি অর্থবছরের জন্য সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ৭ লাখ টন থেকে ১৪ শতাংশ কম কেনার পরিকল্পনা করেছে।

খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, 'বৈদেশিক মুদ্রা বাঁচাতে আমরা আমদানি কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।'

তিনি বলেন, 'গত দুই মৌসুমে আমন ও বোরো রপ্তানি ভালো হয়েছে। তাই আমরা স্থানীয় বাজার থেকে বাড়তি শস্য কিনতে চাই।'

২০২৩-২৪ অর্থবছরে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১৩ শতাংশ বেশি ১৯ লাখ ৬১ হাজার মেট্রিক টন চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটের নথি অনুযায়ী, স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ১ লাখ মেট্রিক টন গমও কিনতে চায় সরকার।

সরকার স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত চাল কিনতে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৮ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। যা ২০২২-৩৩ অর্থবছরের ৭ হাজার ২০০ কোটি টাকার তুলনায় ২১ শতাংশ বেশি।

সাখাওয়াত হোসেন বলেন, 'অভ্যন্তরীণ ক্রয় বৃদ্ধিতে কৃষক আরও ভালো দাম পাবেন। একইসঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রাও সাশ্রয় হবে।'

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের ১ জুন পর্যন্ত সরকারিভাবে বিদেশ থেকে ৬ লাখ ৩৩ হাজার মেট্রিক টন চাল ও ৬ লাখ ৭৯ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানি হয়েছে।

আগামী ৩১ আগস্ট শেষ হতে যাওয়া বোরো ক্রয় মৌসুমে গমের পাশাপাশি স্থানীয় বাজার থেকে সাড়ে ১২ লাখ মেট্রিক টন চাল ও ৪ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য বা ধান কিনবে খাদ্য অধিদপ্তর।

ইতোমধ্যে স্থানীয় বাজার থেকে ৩ লাখ ৪১ হাজার মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল ও সাড়ে ৩০ হাজার মেট্রিক টনের বেশি ধান কেনা হয়েছে। যা রোববার পর্যন্ত দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ১৩ হাজার মেট্রিক টনে।

অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে ক্রয় বৃদ্ধি সত্ত্বেও সরকার ২০২৩-২৪ অর্থবছরে খাদ্যশস্যের সামগ্রিক সংগ্রহ ৫ শতাংশ কমিয়ে ৩১.৬১ লাখ টন করার পরিকল্পনা করেছে। সেই সাথে বিতরণনের পরিমান কাটছাঁট করার  পরিকল্পনা করছে।

খোলা বাজারে বিক্রি বা (ওএমএস) মতো নগদ বিক্রয় স্কিমের মাধ্যমে আগামী অর্থবছরে চাল বিতরণের পরিকল্পনা করা হয়েছে ১৪.১৯ লাখ টন। যা বিদায়ী অর্থবছরের ১৪.৮৩ লাখ টন থেকে ৪ শতাংশ কম।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য গম বিতরণের লক্ষ্যমাত্রাও কমানো হয়েছে।

কাজের বিনিময়ে খাদ্য এবং ভালনারেবল গ্রুপ ফিডিংয়ের মতো কর্মসূচির ক্ষেত্রে সরকার ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৯ লাখ ৯৮ হাজার টন চাল বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যা বিদায়ী অর্থবছরের তুলনায় ৯ শতাংশ কম।

একইভাবে, সরকার এই প্রকল্পের অধীনে গম বিতরণ কমানোর পরিকল্পনা করেছে।

বিতরণ কমানোর পরিকল্পনার কারণ জানতে চাইলে তিনি সাখাওয়াত হোসেন বলেন, 'পরিস্থিতি বিবেচনা করে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Money laundering: NBR traces Tk 40,000cr in assets abroad

The National Board of Revenue has found assets worth nearly Tk 40,000 crore in five countries which it believes were bought with money laundered from Bangladesh, said the Chief Adviser’s Office yesterday.

3h ago