এভারেস্টে ভিড়, রেকর্ড সংখ্যক মৃত্যু

বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট। ফাইল ছবি: রয়টার্স
বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট। ফাইল ছবি: রয়টার্স

সদ্য শেষ হওয়া পর্বতারোহণ মৌসুমে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্ট অভিযানে ১২ অভিযাত্রী মারা গেছেন, যা সাম্প্রতিক ইতিহাসে সর্বোচ্চ। আরও ৫ পর্বতারোহী এখনো নিখোঁজ আছেন।

আজ শুক্রবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সর্বশেষ ২০১৯ সালে ১১ জন এভারেস্টে ওঠার চেষ্টায় মারা গিয়েছিলেন।

এ বছর নিহতের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় আবারও এভারেস্ট অভিযানে বিপদের বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হয়েছে।

সংবাদ প্রতিবেদনে জানা যায়, এ বছর ৩ গাইড বা শেরপা বরফচাপায় মারা গেছেন। বাকিরা অসুস্থ হয়ে মারা যান।

এত পর্বতারোহীর মৃত্যুর কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা এভারেস্টে মাত্রাতিরিক্ত ভিড়ের কথা বলছেন।

এ বছর রেকর্ড সংখ্যক মানুষকে পর্বতারোহণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও, পর্বতের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়েও বিশ্লেষকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

নেপাল থেকেই বেশিরভাগ পর্বতারোহী এভারেস্টে ওঠার চেষ্টা করেন। নেপালের স্থানীয়রা নজিরবিহীনভাবে ৯০০ জনকে অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

মার্কিন প্রতিষ্ঠান ম্যাডিসন মাউনটেইনিয়ারিং কোম্পানির কর্মকর্তা গ্যারেট ম্যাডিসন বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, 'এত মানুষ সেখানে গেলে পর্বতারোহণের পথে জটের সৃষ্টি হয়।'

অনভিজ্ঞ ও অপ্রস্তুত পর্বতারোহীদের কারণে পর্বতের গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলোয় ভিড় জমছে।

মার্কিন পর্বতাভিযান প্রতিষ্ঠান আলপেনগ্লো এক্সপিডিশনের প্রধান অ্যাড্রিয়ান বলিংগার দাবি করেন, কিছু প্রতিষ্ঠান এভারেস্টের বিপদসংকুল জায়গাগুলোয় বিচরণের অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও অভিযানের আয়োজন করছে।

নেপাল সরকারের আয়ের একটি বড় উৎস এভারেস্ট অভিযান। পশ্চিমের পর্বতারোহীরা সমালোচনা করে বলেন যে, কোনো ব্যক্তির কাছে ১১ হাজার ডলার থাকলেই তাকে এভারেস্টে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে—আর তেমন কোনো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে না। তবে নেপাল সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

শেরপাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, অনুমতিপত্র ছাড়াও প্রতি পর্বতারোহী তার খাবার, গাইড, গ্যাস, অন্যান্য অনুমতি ও স্থানীয় ভ্রমণের পেছনে গড়ে প্রায় ২৭ হাজার ডলারের মতো খরচ করেন।

নেপালের পর্যটন বিভাগের পরিচালক যুবরাজ খাটিওয়ারা এসব সমালোচনাকে পাত্তা দিতে নারাজ। তিনি গত মাসে জানান, এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে প্রথমবারের মতো একদল সরকারি কর্মকর্তা ও ডাক্তার নিযুক্ত করা হবে, যারা পর্বতারোহণ মৌসুমে সামগ্রিক পরিস্থিতির ওপর নজর রাখবেন।

'আমরা তাদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত এবং বাড়তি ভিড়ের মোকাবিলার জন্য ভালোভাবেই প্রস্তুত আছি। যতক্ষণ আবহাওয়া ভালো আছে এবং সুষ্ঠুভাবে ও নিরাপদে অভিযান পরিচালনা সম্ভব, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা পর্বতারোহীদের অনুমতি দিয়ে যেতে আগ্রহী,' যোগ করেন তিনি।

প্রতিবেদন অনুসারে, সাম্প্রতিক সময়ে পর্বতারোহীরা অন্যান্য সমস্যাতেও পড়ছেন। যেমন, অপেক্ষাকৃত উষ্ণ আবহাওয়া। এর ফলে বরফ গলে পর্বতে হ্রদ তৈরি হচ্ছে। বিজ্ঞানীরা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তিব্বতের মালভূমিতে গত ৪০ বছরে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বেড়েছে।

এতে আরও বলা হয়, গলে যাওয়া বরফের কারণে বেস ক্যাম্পের পরিস্থিতি 'অস্থিতিশীল' হয়ে পড়তে পারে। ভরা মৌসুমে বেস ক্যাম্পে ১ হাজার পর্বতারোহী ও সেবাকর্মী অবস্থান করতে পারেন।

Comments

The Daily Star  | English

Stay alert against conspiracies: Fakhrul

BNP Secretary General Mirza Fakhrul Islam Alamgir today urged all to stay alert, warning that conspiracies are underway to once again plunge Bangladesh into new dangers

48m ago