লাইভ ভিডিও দেখার সেরা ৫ প্ল্যাটফর্ম

লাইভ ভিডিও দেখার সেরা ৫ প্ল্যাটফর্ম
ছবি: সংগৃহীত

নতুন কনটেন্টের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে এবং তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়ছে লাইভ স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের সংখ্যা। বিনোদন জগতে লাইভ স্ট্রিমিং প্লাটফর্মের চাহিদা অনেকদিন ধরেই বেশ তুঙ্গে। কিন্তু ইন্টারনেটে এত এত প্ল্যাটফর্মের মধ্যে কোনগুলোতে সময় দিলে সবচেয়ে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে, তা নিয়ে দ্বিধা থেকে যায়। 

ইউজার বেস, ভিডিও স্ট্রিমিংয়ের মান, প্ল্যাটফর্মটির দর্শকের সঙ্গে লাইভ চ্যাট, পোল বা প্রশ্নোত্তর অংশের মতো মিথস্ক্রিয়ামূলক সংযোগ, বহুমাত্রিক বা নির্দিষ্ট ধারার সিনেমা-সিরিজের যথেষ্ট মজুদ ইত্যাদি বিভিন্ন মাপকাঠির মাধ্যমেই একটি লাইভ স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের অবস্থান নির্দিষ্ট করা যায়। 

তাই এ বিষয়ক সব ধরনের দ্বিধা থেকে বাঁচতে এবং পছন্দের কনটেন্ট উপভোগ করতে এই কয়টি লাইভ স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা যায়–

ভিমিও

ভিমিও এমন একটি ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম, যাতে লাইভ-স্ট্রিমিং ও কাস্টমাইজেশনের মতো ফিচার রয়েছে। এটি সম্পূর্ণ বিজ্ঞাপনের ঝক্কি-ঝামেলাবিহীন একটি জায়গা এবং বিভিন্ন ব্যবসা ও কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের সাবস্ক্রিপশন দেবার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করে। ১৭৫ মিলিয়ন ব্যবহারকারী এবং ১.৪ মিলিয়ন সাবস্ক্রাইবার রয়েছে ভিমিওর। 

সাবস্ক্রাইবারদের বাড়তি সুবিধা হচ্ছে, তারা এই প্ল্যাটফর্মে চাইলে ভিডিও আপলোড, হোস্ট, শেয়ার ইত্যাদি করতে পারেন। ছিমছাম, শৈল্পিক চেহারার ভিমিও ডকুমেন্টারি বা তথ্যচিত্রের জন্যই বেশি জনপ্রিয় হলেও এতে মোটামুটি পর্যায়ের ফিচার ফিল্মেরও একটা মজুদ রয়েছে। 

ইউটিউব

আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী আর সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা লাইভ স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম বোধহয় ইউটিউব। যেকোনো গান, ভিডিও, সিনেমা ইত্যাদি সবার আগে যে জায়গায় খুঁজি, তা হচ্ছে ইউটিউব। এই প্ল্যাটফর্মের শীর্ষ ৪টি কনটেন্ট ক্যাটাগরির মধ্যে আছে– কমেডি, গান, বিনোদন বা পপ সংস্কৃতি এবং 'হাও টু' ভিডিও। 

ইউটিউব দর্শকদের কাছে জনপ্রিয়তার দৌড়ে এগুলোই সবচেয়ে এগিয়ে আছে। প্রতি মাসে ২ বিলিয়ন দর্শক ইউটিউব ব্যবহার করে থাকেন। বয়স, জাতি নির্বিশেষে বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকে ইউটিউবের পর্দায় নিজের চাহিদামতো কনটেন্ট খুঁজে নেন তারা। লাইভ স্ট্রিমিংয়ের ক্ষেত্রে ইউটিউব একটি বিশেষ জায়গা তৈরি করতে পেরেছে। এরই অংশ হিসেবে সাপ্তাহিক লাইভ স্ট্রিম প্রচারকারী কনটেন্ট ক্রিয়েটর বা লাইভ স্ট্রিমারদের জন্য ইউটিউব থেকে ৪০ শতাংশ বেশি সাবস্ক্রাইবারের সুযোগ করে দিয়েছে। অ্যানালিটিক্স, মানিটাইজেশন, লাইভ চ্যাট এবং আরও অনেক সুবিধাসহ লাইভ স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ইউটিউব অত্যন্ত মানানসই একটি পছন্দ হতে পারে। 

টুইচ

বিভিন্ন ভাষা, রীতিনীতি এবং ঐতিহ্যকে সঙ্গে নিয়ে থাকা টুইচকে একটি সাংস্কৃতিক প্ল্যাটফর্ম বললেও ভুল হবে না। অ্যামাজন পরিচালিত এই মেগা লাইভ স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মটিতে লাখো মানুষ প্রতিদিন তাদের প্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের তৈরি ভিডিও দেখতে এখানে 'টিউন' করেন। এর শুরুটা হয়েছিল গেমারদেরকে তাদের অডিয়েন্সের সঙ্গে নিজস্ব অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়ার মাধ্যমে, কিন্তু পরবর্তীতে টুইচের যাত্রা শুধু গেমিং ভিডিওতে আটকে থাকেনি। 

ফেসবুক বা ইউটিউবের মতো এত বিস্তৃত পরিসরের না হলেও প্রতিদিন ২১৭ মিলিয়ন ব্যবহারকারী এতে সক্রিয় থাকতে পারেন। অ্যাপের মাধ্যমে টুইচ ব্যবহার করা যায়। আবার চাইলে ডেস্কটপেও টুইটারের মিডিয়া স্টুডিও প্রডিউসার ব্যবহার করার মাধ্যমে এর কনটেন্ট উপভোগ করা যায়। 

কিক

নামের মতোই কাজ এই লাইভ স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মটির। মূলত এ বাজারের মোটমাট একচেটিয়া আধিপত্য ধরে রাখা টুইচকে পাশ দিয়ে 'কিক' করতেই এসেছে কিক। টুইচের মতোই একরকম লেআউট এবং কনটেন্ট ক্যাটাগরি কিকেরও। ওদিকে দর্শকের সংখ্যাও টুইচ এগিয়ে থাকলেও অনেকেই এখন বেশ কিছু কারণে ঝুঁকছেন কিকের দিকে। প্রথম কিকের নিয়ম-নীতি অতটা আগ্রাসী নয় এবং কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য ব্যাপক স্বাধীনতা রয়েছে। তাই সেন্সরশিপের খড়গ থেকে দূরে সরিয়ে নিজের পছন্দের কনটেন্ট উপভোগের সুবিধা পাওয়া যায় কিকে। শুধু কনটেন্ট নয়, উপার্জনের দিকেও কনটেন্ট নির্মাতার জন্য বেশি সুবিধা দিচ্ছে কিক। টুইচে যেখানে বিজ্ঞাপ থেকে মোট অর্জিত অর্থের ৫০ শতাংশ পায় নির্মাতা, সেখানে কিক প্রদত্ত আর্থিক পরিমাণ হচ্ছে ৯৫ শতাংশ। অন্তত শুধু এই কারণে হলেও নির্মাতারা এখন এই প্ল্যাটফর্ম বেছে নিচ্ছেন। 

ফেসবুক গেমিং লাইভ

না, ফেসবুক নয়– কথা হচ্ছে 'ফেসবুক গেমিং' নিয়ে, যার শুরুটা আমাদের নিত্যদিনের পরিচিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক থেকে হলেও পরবর্তীতে এটি নিজেই নিজের একটি বিশেষ স্থান তৈরি করে নিয়েছে। একে ঘিরে গড়ে উঠেছে একটি আলাদা অনলাইন সম্প্রদায়। দর্শকের দৃষ্টিকোণ থেকে ফেসবুক গেমিং অত্যন্ত উপভোগ্য একটি স্থান। পছন্দের কনটেন্ট নির্মাতাদের সঙ্গে চাইলে খুব সহজেই যোগাযোগ করা যায়। তাদেরকে কনটেন্ট নির্মাণ যাত্রায় সহায়তা করতে 'স্টার' পাঠিয়ে আর্থিকভাবে সমর্থন যোগানোর পদ্ধতিও আছে, যা কিনা দর্শক ও নির্মাতাকে অন্য এক মাত্রায় জুড়ে দেয়। বিশেষত গেমার জেনারেশনের লোকজন এর সাথে বেশি সংযুক্ত অনুভব করতে পারবেন। 

তথ্যসূত্র: মেকইউজ অব, বিজনেস ইনসাইডার, রিস্ট্রিম

 

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago