বিশ্বের দামি ৫ মসলা

জাফরান, ভ্যানিলা, এলাচ, গোলমরিচ, দারুচিনি,
প্রতীকী ছবি, সংগৃহীত

কথায় বলে ঘ্রাণেই অর্ধভোজন। আর খাবারে লোভনীয় ঘ্রাণ আনতে কিংবা সুস্বাদু করতে মসলার বিকল্প নেই। সেই আদিকাল থেকে খাবারে নানান মসলার ব্যবহার হয়ে আসছে। মসলা নিয়ে বিভিন্ন গবেষণা হয়েছে, এখনো হচ্ছে। মসলার গুণেই কিন্তু রাঁধুনির রসুইঘর গন্ধে মৌ মৌ করে। আজ জেনে নিন বিশ্বের ৫টি দামি মসলার তথ্য।

জাফরান

এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান মসলা হলো জাফরান। জাফরান ক্রোকাস উদ্ভিদ থেকে জাফরান মসলা সংগ্রহ করা হয়। এই উদ্ভিদটি বর্তমানে দক্ষিণ ফ্রান্স, ইরান, স্পেন, ইতালি, মরক্কো ও গ্রিসে চাষ করা হয়। তবে, এটি মূলত এশিয়া ও ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের উদ্ভিদ। মসলা হিসেবে জাফরান অত্যন্ত ব্যয়বহুল হওয়ার কারণ এর উৎপাদন প্রক্রিয়া। জাফরান গাছে বছরে একবার ফুল ফোটে, তাও মাত্র দুই সপ্তাহের জন্য। ফুল ফোটার পর সকালে খুব সাবধানে কাটতে হয়, না হলে এর গন্ধ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এক কিলোগ্রাম জাফরানের জন্য কমপক্ষে দেড় লাখ ফুল বা প্রায় ১ হাজার বর্গ মিটার একর জমির প্রয়োজন হয়। সেগুলো সংগ্রহ করতে প্রায় ৬০০ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। মসলা হিসেবে ব্যবহারের পাশাপাশি এটি খাবারে রঙ আনার জন্যও ব্যবহৃত হয়।

ভ্যানিলা

জাফরানের পর সবচেয়ে দামি মসলা হলো ভ্যানিলা। এর দামেরও মূল কারণ উৎপাদন প্রক্রিয়া। ভ্যানিলা গাছের পড থেকে মূলত মসলা হয়ে থাকে। এগুলো ৩০ সেমি পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। পডগুলো পাকার আগে কাটা হয়। তারপর একটি বায়ুরোধী পাত্রে চার সপ্তাহের জন্য সংরক্ষণ করা হয়। এভাবে মসলা প্রস্তুত করা খুবই সময়সাপেক্ষ এবং শ্রমসাধ্য। ভ্যানিলা মেক্সিকোর স্থানীয়, কিন্তু বর্তমানে ভারত মহাসাগরের দ্বীপগুলোতে ও মাদাগাস্কারে আবাদ করা হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী ভ্যানিলার শতাধিক প্রজাতির মধ্যে মাত্র ১৫টি মিষ্টি স্বাদের জন্য ব্যবহৃত হয়।

এলাচ

জাফরান ও ভ্যানিলার তুলনায় এলাচ সস্তা। কিন্তু, অন্যান্য মসলার চেয়ে এলাচের দাম বেশি। এলাচ একটি উদ্ভিদ, যা আদা পরিবারের সঙ্গে সম্পর্কিত। এলাচে ঝাঁঝালো স্বাদযুক্ত চমৎকার গন্ধ আছে। এলাচ প্রধানত ভারত ও মাদাগাস্কারে চাষ হয়। এলাচ দুই প্রকার- কালো ও সবুজ। কালো এলাচ মূলত খাবার সুস্বাদু করতে ব্যবহৃত হয়। অন্যদিকে সবুজ এলাচ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মিষ্টিতে ব্যবহার করা হয়।

গোলমরিচ

ঐতিহাসিকভাবে সবচেয়ে দামি মশলার তালিকার শীর্ষে আছে গোলমরিচ। এই মসলাটি আজ বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত মশলা। কয়েক শতাব্দী ধরে এটি সবচেয়ে ব্যয়বহুল মসলা ছিল। একসময় এটি এতো মূল্যবান ছিল যে, এ নিয়ে সশস্ত্র সংঘর্ষও হয়েছিল। ইউরোপের অনেক অভিযাত্রী ও নাবিক সমুদ্রপথে ভারতে প্রবেশের পথ খুঁজে বের করতে যাত্রা করেছিলেন, যেন সস্তা উপায়ে গোলমরিচ নিয়ে যাওয়া যায়। গোলমরিচ ভারতের স্থানীয় মসলা। কিন্তু, এখন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশ ও ব্রাজিলে চাষ করা হয়।

দারুচিনি

দারুচিনি মসলা দারুচিনি গাছের শুকনো বাকল দিয়ে তৈরি। এটি বিশ্বের প্রাচীনতম মসলাগুলোর একটি। এটি মূলত মিষ্টি স্বাদের জন্য ব্যবহৃত হয়। দারুচিনি উদ্ভিদটি শ্রীলঙ্কার স্থানীয়। যদিও এটি এখন অনেক গ্রীষ্মমন্ডলীয় দেশে চাষ করা হয়। ১৬-১৮ শতকের মধ্যে দারুচিনি খুব মূল্যবান ছিল এবং বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল মসলার একটি ছিল।

Comments

The Daily Star  | English

Admin in favour of BNP in many areas, polls not possible in this situation: Nahid

For a level playing field, a neutral administration, bureaucracy, and police must be ensured

1h ago