রেস্টুরেন্টের মেনুতে গবেষণাগারে উৎপাদিত মুরগির মাংস

প্রায় দেড় সপ্তাহ আগে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি অধিদপ্তর (ইউএসডিএ) আপসাইড ফুডস ও গুড মিট নামে ২ প্রতিষ্ঠানকে গবেষণাগার মুরগির মাংস উৎপাদন ও বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে।
গবেষণাগারে উৎপাদিত মুরগির মাংসের ডিশ। ছবি: আপসাইড ফুডস এর ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত
গবেষণাগারে উৎপাদিত মুরগির মাংসের ডিশ। ছবি: আপসাইড ফুডস এর ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের সানফ্রানসিসকোর বার ক্রেন নামের রেস্টুরেন্টর মেনুতে পাওয়া যাবে গবেষণাগারে উৎপাদিত মুরগির মাংস।

গতকাল শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন এ তথ্য জানায়।

প্রায় দেড় সপ্তাহ আগে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি অধিদপ্তর (ইউএসডিএ) আপসাইড ফুডস ও গুড মিট নামে ২ প্রতিষ্ঠানকে গবেষণাগার মুরগির মাংস উৎপাদন ও বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে।

প্রাণিকোষ ও এমাইনো এসিডের মতো পুষ্টিকর উপকরণ ব্যবহার করে বড় আকারের বায়োরিঅ্যাক্টরে এটি প্রস্তুত করা হয়। এ ধরনের উৎপাদনকেন্দ্রগুলো দেখতে অনেকটাই মদ চোলাই করার কারখানার মতো।

গতকাল শনিবার 'কালটিভেটেড' চিকেন টেম্পুরা ছিল বার ক্রেনের মেনুতে। সঙ্গে পোড়ানো মরিচের সস 'আইওলি' পরিবেশন করা হয়। ডিশ সাজাতে ব্যবহার হয় সবুজ সবজি ও খাওয়ার উপযোগী ফুল।

২০১৮ সালে এই রেস্টুরেন্টর মেনু থেকে সব ধরনের মাংসের খাবার সরিয়ে নেওয়া হয়। কারণ হিসেবে শেফ ডমিনিক ক্রেন জানান, বাণিজ্যিক পশু খামার প্রাণীজগৎ ও পৃথিবীর ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

তবে কাল্টিভেটেড চিকেন বা গবেষণাগারে প্রস্তুত মুরগির মাংসের খাবার পরিবেশন করতে তাদের কোনো আপত্তি নেই।

গবেষণাগারে উৎপাদিত মুরগির মাংসের ডিশ। ছবি: আপসাইড ফুডস এর ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত
গবেষণাগারে উৎপাদিত মুরগির মাংসের ডিশ। ছবি: আপসাইড ফুডস এর ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত

তবে চাইলেই আপনি রেস্টুরেন্টয় ঢুকে এই খাবার অর্ডার করতে পারছেন না। অন্তত, এ মুহূর্তে নয়।

আপসাইড ফুডস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। এ প্রতিযোগিতার বিজেতারাই শুধু বার ক্রেনে চলতি সপ্তাহান্তে এই ডিশটি উপভোগ করতে পারবেন। তারা সবাই এই চিকেনের জন্য ১ ডলারের প্রতীকী মূল্য পরিশোধ করবেন। বিজেতারা একইসঙ্গে আপসাইড ফুডস এর প্রকৌশল, উৎপাদন ও উদ্ভাবনকেন্দ্র পরিদর্শন করতে পারবেন।

আপসাইড ফুডস জানিয়েছে, এ বছরের শেষের দিকে প্রতি মাসে এই পণ্যের ব্যবহারে নৈশভোজের আয়োজন করা হবে। এতে অংশ নিতে হলে বার ক্রেনের ওয়েবসাইটে আগে থেকে নিবন্ধন করতে হবে।

অপর অনুমোদন পাওয়া প্রতিষ্ঠান গুড মিটও চায়না চিলচানো নামের রেস্টুরেন্টয় এই পণ্য পরিবেশন করার পরিকল্পনা করছে। বিষয়টি নিয়ে তারা শেফ ও রেস্টুরেন্ট মালিক হোসে আন্দ্রেসের সঙ্গে কাজ করছে। ওয়াশিংটন ডিসির রেস্টুরেন্টটিতে ঠিক কবে এই খাবার পাওয়া যাবে, তা অবশ্য জানা যায়নি।

গবেষণাগারে উৎপাদিত মুরগির মাংসের ডিশ। ছবি: আপসাইড ফুডস এর ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত
গবেষণাগারে উৎপাদিত মুরগির মাংসের ডিশ। ছবি: আপসাইড ফুডস এর ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি অধিদপ্তর (ইউএসডিএ) এবং খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের (ইউএস এফডিএ) কাছ থেকে বেশ কয়েক দফা অনুমোদন পাওয়ার পর বার ক্রেনের মেনুতে এই খাবার যুক্ত হল।

প্রাণী কোষ থেকে কৃত্রিমভাবে উৎপাদিত মাংসের বেশ কিছু ভালো দিক রয়েছে।

প্রাণিদের কোনো ধরনের শারীরিক কষ্ট না দিয়েই এর উৎপাদন সম্ভব। যার ফলে, যারা প্রাণীদের বিরুদ্ধে নিষ্ঠুরতার কারণে বা এর প্রতি প্রতিবাদ জানাতে মাংস খান না, তারাও এটি খেতে পারবেন।

এছাড়াও, এর উৎপাদনে প্রথাগত খামার কাজের চেয়ে কম ভূমি ও পানি প্রয়োজন, যা একে পরিবেশবান্ধব বিকল্প হিসেবে উপস্থাপন করছে। 

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh foreign exchange reserves decline

No let-up in reserves slide

Bangladesh’s foreign exchange reserves have been falling since September 2021 despite a series of government initiatives to reverse the trend.

13h ago