সাগরে ৩ নম্বর সংকেত

ভারী বর্ষণ-ঝড়ো হাওয়ার পূর্বাভাস, বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে

বৃষ্টি
ছবি: প্রবীর দাশ/স্টার

সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ৩ বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় ও ৪ বিভাগের অনেক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়াবিদদের মতে, দেশের দক্ষিণাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলে বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আজ শনিবার দুপুরে অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. মনোয়ার হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, পূর্বভাস অনুযায়ী খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়া বয়ে যেতে পালে। সেই সঙ্গে হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি হতে পারে।

এ ছাড়া দেশের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী (২৩-৪৩ মিলিমিটার) থেকে ভারী (৪৪-৮৮ মিলিমিটার) বর্ষণ হতে পারে, বলেন তিনি।

তিনি আরও জানান, উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালার সৃষ্টি হচ্ছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও এর পাশে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

যে কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

সেই সঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

খণ্ডকালীন পূর্বাভাস বলছে, যশোর, কুষ্টিয়া, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের ওপর দিয়ে দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

আজ সন্ধ্যা ৬টার পর্যন্ত এসব এলাকার নদী বন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

এদিন সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় টাঙ্গাইলে সর্বোচ্চ ১৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ওয়েস্ট বেঙ্গলে একটি সার্কুলারেশন দেখা যাচ্ছে, আগামী দুএক দিনের মধ্যে এটি প্রমিনেন্ট হতে পারে। এছাড়া মৌসুমি বায়ুও সক্রিয় রয়েছে।'

'এই সময় মেঘ সাগর থেকে ভূমির দিকে, অর্থাৎ দক্ষিণ থেকে উত্তরে ভেসে আসে, বাতাসে আদ্রতাও বেশি থাকে। বাতাসের গতি, চাপ ও আদ্রতার ওপর নির্ভর করে বৃষ্টিপাতের তারতম্য। হিসাব মতে, দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বেশি বৃষ্টিপাত হওয়ার কথা কিন্তু গত ২৪ ঘণ্টা টাঙ্গাইলে সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে। টাঙ্গাইলের পাশের জেলাগুলোতে তেমন বৃষ্টি হয়নি, ঢাকাতেও না। যমুনা নদীর পাশে হওয়ায় সেখানে হয়তো আদ্রতা বেশি ছিল, যে কারণে বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বর্ষণ হতে পারে,' বলেন তিনি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের কর্তব্যরত কর্মকর্তা ও সহকারী প্রকৌশলী পার্থ প্রতীম বড়ুয়া ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, উত্তরাঞ্চলের ৪ জেলায় নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এসব এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

বন্যা
ছবি: এস দিলিপ রায়/স্টার

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, আজ শনিবার সকাল ৯টায় ডালিয়া স্টেশনে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১২ সেন্টিটিমার, পাটেশ্বরীতে দুধকুমার ৪১ সেন্টিটিমার, কুড়িগ্রামে ধরলা ২১ ও কলমাকান্দায় সোমেশ্বরীর পানির সমতল বিপৎসীমার ৮ সেন্টিটিমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

গত ২৪ ঘণ্টায় তিস্তার পানি ২০ সেন্টিমিটার, দুধকুমারের ৯ সেন্টিমিটার ও সোমেশ্বরীর পানি ৪ সেন্টিমিটার কমেছে। কেবল ধরলার পানি ২১ সেন্টিমিটার বেড়েছে।

দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সব প্রধান নদ-নদীর পানির সমতল হ্রাস পাচ্ছে এবং উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবণতাও কমে এসেছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা, ধরলা নদী ও দুধকুমার নদের পানি কমতে পারে। স্থিতিশীল থাকতে পারে ব্রহ্মপুত্র।

ফলে আগামী ২৪ ঘণ্টায় নীলফামারী, লালমনিরহাটের নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। কুড়িগ্রামের বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

তবে যমুনা নদীর পানির সমতল বেড়ে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ফুলছড়ি ও বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে বিপৎসীমার কাছাকাছি চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। গঙ্গা-পদ্মার পানি বৃদ্ধি আগামী ৪৮ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে।

Comments

The Daily Star  | English

A transitional budget for troubled times

Govt signals people-centric priorities but faces tough trade-offs

3h ago