এক খালের ওপর ২ সেতু, কাজে আসছে না একটিও

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার বৈরাতি খালের ওপর নির্মিত সেতুর দুই পাশে সংযোগ সড়ক না থাকায় চলাচলের জন্য স্থানীয়রা বাঁশের সাঁকো জুড়ে দিচ্ছেন। ছবি: এস দিলীপ রায়/ স্টার

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলায় গ্রামবাসীর জন্য একটি খালের ওপর দুটি সেতু নির্মাণ করা হলেও একটিও ব্যবহার করতে পারছেন না তারা। সেতু নির্মাণের পরও গ্রামবাসীকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে আগের মতোই। অপরিকল্পিতভাবে সেতু দুটি নির্মাণ করায় এমনটি হয়েছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।

স্থানীয়রা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, বৈরাতি খাল পাড়ি দিয়ে বৈরাতি, চিলাখাল, চিকারবাজার ও মাতাবপুর গ্রামের সহস্রাধিক মানুষকে তুষভান্ডার ইউনিয়ন পরিষদ, কালীগঞ্জ উপজেলা সদরসহ সব স্থানে যাতায়াত করতে হয়। শুষ্ক মৌসুমে খালটি শুকিয়ে যায় কিন্তু বর্ষাকালে খালের ওপর বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে তাদের চলাচল করতে হতো।

তারা বলেন, খালের ওপর বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) ও ত্রাণ অধিদপ্তর আলাদা দুটি সেতু নির্মাণ করে। সেতু দুটিতে কোনোরকমে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়েছিল যার ফলে বন্যার পানিতে তা ধসে গেছে। সংযোগ সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় এখনো সেতু দুটি ব্যবহার করা যাচ্ছে না।

স্থানীয় কৃষক আবু বক্কর দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, দীর্ঘদিন দাবি জানানোর পর সেতু পেলেও ব্যবহার করতে না পারায় চরম হতাশ তারা। নিজেরা চাঁদা তুলে বাঁশ কিনে আবারো সেতুর সাথে বাঁশের সাঁকোর সংযোগ দিচ্ছেন চলাচলের জন্য। সরকার টাকা বরাদ্দ দিয়েছে কিন্তু তা খরচ করা হয়েছে অপরিকল্পিতভাবে।

অপর কৃষক আব্বাস আলী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, সেতু পেয়েও আগের দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন তারা। এক খালের ওপর দুটি সেতুর একটিও কোনো কাজে আসছে না।

বিএডিসি ও ত্রাণ অধিদপ্তর সুত্র জানায়, ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে বিএডিসির অধীন ৯৮-ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৫-ফুট প্রশস্ত সেতুটি নির্মাণ করতে ব্যয় হয় ৭৯ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। সেতুটি নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে আর শেষ হয় ২০২২ সালের জুন মাসে। ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে ত্রাণ অধিদপ্তরের অধীন ৫০-ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৪-ফুট প্রস্থ সেতুটি নির্মাণ করতে ব্যয় হয়েছে ৭০ লাখ টাকা। সেতুটি নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে আর কাজ শেষ হয় মে মাসে।

কুষভান্ডার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর ইসলাম আহমেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, প্রকৌশলীরা ভালো বলতে পারবেন সেতু দুটি অপরিকল্পিত কিনা। তবে আপাত দৃষ্টিতে সেতু দুটি নির্মাণে পরিকল্পনার ঘাটতি ছিল। সেতু দুটি নির্মাণের দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। সংযোগ সড়ক ও প্রোটেকশন ওয়াল নির্মাণ ছাড়া সেতু দুটি রক্ষা করা সম্ভব হবে না।

কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিইও) ফেরদৌস আহমেদের দাবি, পরকিল্পনা অনুযায়ী সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। সেতু নির্মাণে কোনো অনিয়ম হয়নি। বন্যায় সংযোগ সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। দ্রুত সংযোগ সড়কটি মেরামত করা হবে।

লালমনিরহাট বিএডিসির নির্বাহী প্রকৌশলী আলতাফ হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, খালের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী সেতুটি ছোট। বরাদ্দ কম থাকায় কম দৈর্ঘ্যের সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ সংযোগ সড়ক মেরামত করা হবে।

Comments

The Daily Star  | English

CSA getting scrapped

The interim government yesterday decided in principle to repeal the Cyber Security Act which has been used to curb press freedom and suppress political dissent.

4h ago