সরকার রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে ফেলেছে: ফখরুল

আওয়ামী লীগ একটা প্রোপাগান্ডা দল
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: স্টার

এই সরকার দীর্ঘদিন অবৈধভাবে ক্ষমতায় থেকে রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে ফেলেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ মঙ্গলবার নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, 'আমরা সব সময় বলে এসেছি, এই সরকার দীর্ঘদিন অবৈধভাবে ক্ষমতায় থেকে রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে ফেলেছে। রাষ্ট্রের অন্যতম স্তম্ভ বিচার বিভাগ তার মধ্যে অন্যতম। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) শুধুমাত্র সরকারের আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠানই নয়, বিরোধী দল দমন কমিশনে পরিণত হয়েছে। আমরা সর্বক্ষেত্রে বিচারের নামে প্রহসন প্রত্যক্ষ করছি।'

'ইতোপূর্বে আমাদের দলীয় প্রধান, দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে, তাকে দীর্ঘ বছর ধরে কারান্তরীণ করে রাখা হয়েছে। নিম্ন আদালতের সাজা উচ্চ আদালত কর্তৃক নজিরবিহীনভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে। একজন বয়স্ক ও নারী হিসেবে আইনগতভাবে তার জামিনপ্রাপ্তির অধিকার থাকলেও সেই অধিকার থেকে তাকে বঞ্চিত করা হয়েছে। বিগত ১৪ বছরে সারাদেশে মিথ্যা ও গায়েবি মামলায় প্রায় ৪০ লাখ মানুষকে আসামি করা হয়েছে। শত শত নেতাকর্মীদের সাজা দেওয়া হয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনের দিক-নির্দেশনা দানকারী তরুণ প্রজন্মের তরুণ নেতা বাংলাদেশের মানুষের আশা-ভরসার স্থল, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে নির্বাসিত করা হয়েছে। আবার নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। মূল লক্ষ্য হচ্ছে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দেশনায়ক তারেক রহমানসহ সব দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক নেতাদের রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়া। বাংলাদেশকে পুনরায় একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশালে ফিরিয়ে নেওয়া।'

'গত কয়েক দিনের ঘটনা প্রবাহে আমরা আশঙ্কা করছি যে, আমাদের প্রিয় নেতা, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানকে সরকারি নীল নকশায় মিথ্যা মামলায় হয়তো বা সাজার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অথচ এই মামলা চলার মতো কোনো আইনগত উপাদান নেই। কেননা তারেক রহমানের প্রদেয় সম্পদ বিবরণী, যা ২০০৭ সালে জমা দেওয়া হয়েছিল, তার পুরোপুরিভাবে আয়কর জমা দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ হচ্ছে ৩৫ লাখ টাকা এফডিআর, ওই এফডিআর মামলা দায়েরের আগেই (২০০৫-২০০৬ সাল) অর্থবছরের ট্যাক্স রিটার্ন দেওয়া হয়েছিল।'

বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে ঢাকার বিশেষ আদালতে চলমান এই মামলায় অবিশ্বাস্য দ্রুততায় সাক্ষী নিয়ে আগামীকাল রায় প্রচারের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে। দেশে লাখো মামলার জট থাকলেও তাদের এই মামলায় ১৬ দিনে ৪২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। রাত ৮টা-৯টা পর্যন্ত একতরফাভাবে সাক্ষী নেওয়া হয়েছে। আমাদের আইনজীবীরা এ ধরনের বিচার কাজের বৈধতা বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করতে গেলে তাদের ওপর পুলিশ ও সরকার দলীয় আইনজীবীরা একাধিকবার হামলা চালিয়েছে। তাদেরকে আদালত কক্ষ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে বিচারের নামে ক্যামেরা ট্রায়াল চালানো হয়েছে।'

'আমরা আশঙ্কা করছি, সরকারি নীল নকশায় পরিচালিত এই তথাকথিত বিচার প্রক্রিয়ায় তারেক রহমান ও ডা. জোবাইদা রহমানকে ফরমায়েশি রায়ের মাধ্যমে সাজা প্রদান করা হতে পারে। অতীতে বেগম খালেদা জিয়াসহ আমাদের অনেক নেতাকে ফরমায়েশি রায়ের মাধ্যমে সাজা প্রদান করা হয়েছে। তারেক রহমান ও জোবাইদা রহমানকে একই প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে ফরমায়েশি রায়ের মাধ্যমে সাজা দেওয়ার চক্রান্ত করা হচ্ছে। এত কিছুর পরও দেশের মানুষ ন্যায়বিচার আশা করে। যদি অন্যায়ভাবে কোনো কিছু করা হয়, তাহলে বিচার বিভাগের ওপর মানুষের সর্বশেষ আশাটুকু শেষ হয়ে যাবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Abdul Hamid returns home after treatment in Thailand

Two police officials were withdrawn and two others suspended for negligence in duty regarding the former president's departure from the country

6h ago